আপনার সন্তানের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, বুদ্ধিবৃ্ত্তিক বিষয়গুলো যাতে সঠিকভাবে গড়ে উঠে, এসব খেয়াল রেখে যথাযথ ভাবে বাচ্চা লালন-পালন করাকে প্যারেন্টিং বলে। বাচ্চা মায়ের পেটে আসার পর থেকে সাবালকত্ব অর্জন পর্যন্ত লালন-পালন, গাইডলাইন দেয়া ও একজন সঠিক মানুশ হিসেবে গড়ে ওঠার সকল বিষয় প্যারেন্টিং এর ভেতরে পড়ে।
আপনার বাচ্চার কী করা উচিত, এটা জানা ও বুঝতে পারা প্যারেন্ট হিসেবে আপনার প্রথম কাজ। দ্বিতীয় কাজ হচ্ছে এই জ্ঞানের উপরে ভিত্তি করে বাচ্চাকে গাইড করা। তৃতীয় ব্যাপার হচ্ছে, সবচাইতে ইফেক্টিভ পদ্ধতিতে গাইড করা। এখন তৃতীয় ব্যাপারটার পারফেক্ট কোন পদ্ধতি নেই। মানে, আমার বাচ্চাকে যেভাবে গাইড করলে সবচাইতে ইফেক্টিভ হবে আপনার বাচ্চার ক্ষেত্রে তা নাও হতে পারে। কারণ, এর সাথে আপনার বাচ্চার মেধা, আপনার বাসার পরিবেশ, আপনার সমাজ, দেশ, বর্তমান পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যাপার জড়িত। জেনারেশন গ্যাপ বলে একটা ব্যাপার আছে যেটা প্যারেন্টিং এর সাথে গভীর ভাবে জড়িত। সুতরাং বই আর আর্টিকেল পড়ে আপনি ভালো প্যারেন্টিং শিখে যেতে পারবেন, এরকম না। বিশেষ করে, পুরানো বই থেকে। কারণ, সময় যত যাচ্ছে পারিপাশ্বিক বিষয়গুলো ততই পরিবর্তন হচ্ছে আর ইফেক্টিভ প্যারেন্টিং এর ব্যাপার-স্যাপারগুলো বদলে যাচ্ছে। বিশেষত একবিংশ শতাব্দির এই প্রযুক্তির উৎকর্ষ ও চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের যুগে পুরানো অনেক কিছুই বদলে গিয়েছে। তবে, কিছু বেসিক থিওরী আছে আর কিছু ব্যাপার সবসময় অপরিবর্তিত থাকে। সেসব বিষয় ও নতুন এই সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে চলা এবং যুগপোযোগী প্যারেন্টিং নিয়ে আমরা এখানে আলোচনা বিস্তারিত করবো। সেই সাথে বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ও চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের বাস্তবতায় প্যারেন্টিং কেমন হওয়া উচিত, সেসব নিয়ে কথা হবে।
বইয়ের অধ্যায়ের সমস্ত টেক্সটের পাশাপাশি এখানে আরো যুক্ত হচ্ছে এ-বিষয়ক বিভিন্ন ভাবনা, বই, সিনেমা এবং অনলাইনে এভেইলেবল বিভিন্ন ধরনের রিসোর্স। এই রিসোর্সগুলো নিয়মিত আপডেট করা হবে। একইসাথে প্যারেন্টিং বিষয়ে আপনার যে-কোন জিজ্ঞাসার জন্য লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।
আপনার সন্তানের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, বুদ্ধিবৃ্ত্তিক বিষয়গুলো যাতে সঠিকভাবে গড়ে উঠে, এসব খেয়াল রেখে যথাযথ ভাবে বাচ্চা লালন-পালন করাকে প্যারেন্টিং বলে। বাচ্চার সুস্বাস্থের জন্য কোন বয়সে কী খাওয়াবেন, তার মানসিক গঠনের জন্য কী আচরণ করবেন, তার বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতির জন্য কী করতে হবে, সামাজিক ও পারিবারিক শিক্ষা, ভদ্রতা-সভ্যতা ইত্যাদি সকল বিষয় কিভাবে কী করতে হবে এসব প্যারেন্টিং এর আওতাধীন ব্যাপার। এরকম আরো কী কী বিষয় মাথায় রাখতে হয় এবং কেন সেগুলো জরুরী তা নিয়ে এই অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সদ্য জন্ম নেয়া বাচ্চাদের বিষয়ে নানা ধরনের কু-সংস্কার প্রচলিত আছে এদেশের বিভিন্ন এলাকায়। এসব কু-সংস্কারের ফলে বাচ্চার সাথে এমন সব আচরণ ও কাজ করা হয় যেগুলো বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এর বাইরেও নানা ধরনের সামাজিক প্রথার কারণে নবজাতের বিষয়ে পারিবারিক সমস্যার সৃষ্টি করে। এসকল বিষয় নিয়ে এই অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি এবং সুস্বাস্থ্যের সাথে খাদ্য ও পুষ্টির সম্পর্ক গভীর। সঠিক খাবারের অভাবে এবং খাওয়ানোর উপায় ঠিকভাবে না জানার কারণে বাচ্চাদের শাররীক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যঘাত ঘটে। এই অধ্যায়ে সুষম খাবার ও খাওয়ানোর বিভিন্ন পদ্ধতি এবং বাচ্চা না খেতে চাইলে করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
পরিবেশ দূষন আপনার বাচ্চাদের বেড়ে ওঠার পথে বড় ধরনের বাঁধার সৃষ্টি করে। শব্দ দূষণ, বায়ূ দূষণ, পানি দূষণ, আলো দূষন কিভাবে আপনার বাচ্চার শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় এবং এর থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে এই অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে।
শরীর ভালো থাকার পাশাপাশি মন ভালো থাকাও জরুরী। শরীর খারাপ হলে সেটা আমরা দেখতে পাই বলে ডাক্তারের কাছে যাই, কিন্তু মনের বিষয়ে সচেতন না থাকলে কিছুই করা হয় না। ফলে, ধীরে ধীরে ভেতর থেকে ধ্বংস হতে থাকে। বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখা ও এবিষয়ে সচেতনতা নিয়ে এই অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে।
এই বইয়ের সকল অধ্যায় এখনো সাজানো শেষ হয়নি। কিছুদিনের ভেতরে এখানে সকল অধ্যায়ের বিস্তারিত পাওয়া যাবে।