চিন্তা ভাবনা

অনলাইনে প্রকাশিত চিন্তা-ভাবনা সমগ্র

জিওপলিটিক্যাল বিষয়গুলো বাদ দিলেও আমাদের আরো অনেক দিক থেকে গুরুত্ব আছে। যেমন ধরেন প্রাকৃতিক সম্পদ। এই দিক থেকে বাংলাদেশের গুরুত্বের জায়গাটা বাংলাদেশীরা নিজেরাও জানে না। বাংলাদেশীরা জানে না, পৃথিবীর সবচাইতে বাসযোগ্য ভূমিতে তারা বাস করে। বিংশ শতাব্দীতে গুরুত্বপূর্ন প্রাকৃতিক সম্পদ ছিলো তেল। এই শতাব্দির গুরুত্বপূর্ন সম্পদ হচ্ছে পানি ও কৃষিজমি। আমরা এই দিক থেকে কতটা সমৃদ্ধ, এটা অনেকেই জানে না। আমেরিকানরা কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ন। কিন্তু, ওদের জমি আমাদের মত উর্বর না। যেকোন সময় ওরা কৃষিতে ধরা খেয়ে যেতে পারে। ইউরোপেরও একই অবস্থা। রাশিয়া এবং ভারতেরও। আরবদের তো কৃষি জমিই নাই। কৃত্তিমভাবে বানানোর চেষ্টা করছে। চায়নাও গোবি মরুভূমিরে সবুজ করার প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে গত ২০/২৫ বছর ধরে।

একটা গবেষণামূলক ভিডিওতে দেখেছিলাম, পৃথিবীতে যদি একটাই শহর থাকতো, সেই শহরটা হতো ঢাকা, বাংলাদেশ। এই দিক থেকেও আমাদের অবস্থান এক নাম্বারে। (ভিডিওটা Inspire to Learn গ্রুপে শেয়ার করেছিলাম কয়েক বছর আগে। খুঁজে পেলে কমেন্টে দেব।)

সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে (বিশেষ করে ফেসবুক) ট্রেডিশনাল মিডিয়াগুলোর ব্যবসা কমে গেছে। একটা পেপার বা টিভি চ্যানেলে দশ লাখ খরচ করে যেটুকু আউটপুট পাওয়া যায় সোশ্যাল মিডিয়াতে এক লাখ করলে তারচাইতে অনেক বেশী পাওয়া যায়। ফলে, প্রাচীন এই মিডিয়াগুলো এমনিতেই বন্ধের পথে। যেটুকু টিকে থাকার সম্ভবনা তাদের ছিলো সেটাও তারা হারিয়ে ফেলছে পাবলিকের আস্থা নষ্ট করে।

আমার খারাপ লাগছে হাজার হাজার মিডিয়া কর্মীদের জন্য। তাদের কী হবে?

বাগান তত্ত্ব - ৭

একটা আমগাছরে তাল গাছ কইতেছে— তোমার তো ফলনের ঠিক নাই মিঞা! ডালপালা কাইটা ফেলো, সোজা হও! আমার মত তাল দিতে পারবা।

পরিচিত বেশ কিছু ফ্যামিলি স্থায়ীভাবে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করেছে। একজনের সাথে কথা হলো একটু আগে, তার পরিচিত ফ্যামিলিরাও দেশ ছাড়ার প্রসেসিং-এ আছে। এরা সব পয়সাওয়ালা ফ্যামিলি যাদের পক্ষে ইউরোপ/আমেরিকায় ৫/৬ কোটি ইনভেস্ট করে ওখানে ফুল ফ্যামিলি থাকার ব্যবস্থা করার ক্ষমতা আছে। কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো পয়সাওয়ালা ও ইনভেস্টরদের নানা ধরনের প্যাকেজ দিচ্ছে তাদের দেশে মাইগ্রেট করার জন্য। এসবের সুবিধা নিচ্ছে অনেকে। আগামী কয়েক বছর এসব সুবিধা নেয়া লোকের সংখ্যা জ্যামেতিক হারে বাড়তে পারে।

ঐদিকে মেধাবীদের দেশ ছাড়ার হার আগের থেকে বাড়ছে। উদ্যোক্তারাও এদেশে ভরসা পাচ্ছে না। এপেক্সের মালিক দেখলাম কয়েকদিন আগে বলছেন ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার কথা। অব্যবস্থাপনা কমানো না গেলে এবং সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি না হলে নতুন বিনিয়োগও কমে আসবে।

তো কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক বিপর্যও ও এইসবের ইমপ্যাক্ট নিয়া ভাবতেছিলাম। পরিস্থিতি সবদিক থেকেই জটিলতর হচ্ছে।

অসমাপ্ত ভাবনা - ১

হিউমেন সাইকোলজি এমনিতেই আমার প্রিয় সাবজেক্ট। প্যারেন্টিং নিয়ে স্টাডি করতে গিয়ে এই বিষয়ে সিরিয়াসলি পড়া শুরু করেছিলাম। মূলত তাতিনের জন্য। ৬/৭ বছর ধরে এসব নিয়ে স্টাডি করে কিছুটা হলেও আমাদের মূল সমস্যাগুলো বুঝতে পেরেছি। বুঝতে পেরেছি কেন বাংলাদেশের মানুশের ব্রেইন এত ভালো হওয়ার পরেও আমরা ভালো করতে পারছি না। এর সমাধানগুলো নিয়েও ভেবেছি অনেক। এখন পর্যন্ত আলাদা একটা সমাজ গঠনের চাইতে বেটার সমাধান পাইনি।

আলাদা সমাজ মানে আপনি এমন কিছু মানুশজনদের নিয়ে একটা কমিউনিটি গড়ে তুলবেন যারা এই সমস্যাগুলোর বিষয়ে সচেতন। যারা প্যারেন্টিং জানে। যারা তাদের বাচ্চাদের সঠিকভাবে বেড়ে উঠার প্রয়োজনীয় পরিবেশ দিতে প্রস্তুত। কিন্তু, এধরনের পাবলিকদের আপনি খুঁজে পেলেও তারা সকলে তো আপনার প্রতিবেশী না। দেয়াল ঘেরা একটা ছোট শহর বা জনপদ তো আর তৈরি করতে পারবেন না একসাথে থাকার জন্য। যে স্কুলে আপনার বাচ্চা যাবে সেখানে তো অসচেতন ফ্যামিলিগুলোর সন্তানেরাও আসবে। আপনার বাচ্চাকে প্রটেক্ট করতে পারবেন না ওখানে।

তাহলে?

এটলিস্ট এটা বুঝা যাচ্ছে যে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের সরাসরি রাজ্য হওয়ার পরেও যতটুকু স্বাধীন আমরা ততটুকু নই। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন রিগ করতে পারে না দিল্লী, আমাদেরটা পারে।

সহজ জীবন - ১৬

ভালো চিন্তক হওয়ার জন্য টেনশনমুক্ত জীবন লাগে। সেটা আপনি তিন ভাবে পেতে পারেন—

১) উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদের মালিক হয়ে
২) ভালো ক্যারিয়ার তৈরি করে
৩) বস্তুজগতের প্রতি নিরাসক্ত হয়ে

খেয়াল করে দেখেন, জগতের অধিকাংশ মনীষী হয় উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদশালী ছিলো অথবা বস্তুজগতের প্রতি নিরাসক্ততা অর্জন করেছিলো। কিন্তু, উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদের মালিক হওয়াটা তো চ্যুজ করা যায় না। তাই এটা বাদ দিয়ে বাকী দু'টোর ভেতরে দ্বিতীয়টা মনে হয় সহজ। জীবনের প্রথম দিকের কয়েকটা বছর ঠিকমত কাজে লাগাতে পারলে এটা অত কঠিন না।

Even in the worse situation, flowers didn’t stop blooming.



ইউনেস্কোর এই ম্যাপটা দেখলে বুঝতে পারবেন। চায়না, রাশিয়া, জাপান, ইন্ডিয়া, ইভেন ইতালিতে স্কুল-কলেজ সব খোলা, কিছু জায়গায় পার্শিয়ালি খোলা। কিন্তু খুব কম দেশই আছে যেইখানে পুরাপুরি বন্ধ।

এক বছরের বেশী সময় ধরে বাংলাদেশের স্কুল-কলেজ সব বন্ধ। এতে কী হচ্ছে? এতে দু'টো শিক্ষাবর্ষে পড়ালেখা হয়নি। শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় গ্যাপ পড়ে গিয়েছে। এরকম গ্যাপ পড়লে আবার পড়ালেখায় ব্যাক করা কতটা কষ্টকর সেটা অনেকেই জানেন আশা করি। এই শিক্ষার্থীদের আর পড়ালেখা হবে?

এর সাথে যোগ হয়েছে অটো-পাশ। যারা বর্তমান ক্লাশের পড়া না পড়েই নতুন ক্লাশে উঠে গেল, তারা আর বুঝতে পারবে না কিছু। ফলে, তাদের বাকী শিক্ষা জীবন হুমকির মুখে পড়ে গেল।

১২-টা ব্যাচের অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের জীবন ধ্বংস হওয়ার পথে আছে। এর কুফল আপনি টের পাবেন ১৫-২০ বছর পরে। এমনি এদেশে যোগ্য লোকের খুব অভাব। এই ঘটনার পর আর লোক পাওয়াই যাবে না। ২০ বছর পর দেখবেন দেশের অধিকাংশ জব করতেছে ভারতীয়রা। আর বাংলাদেশীরা সব তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী, পিওন হয়ে বসে আছে। যে অল্প কিছু মানুশ পারিবারিক সচেতনতার কারণে পড়ালেখা করেছে, এরা সব দেশ ছাড়বে তখন। পরিস্থিতিটা কেমন হবে, কল্পনা করে দেখেন।

এই মূহুর্তে এটা দেশের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন আলোচনার বিষয় হওয়া উচিত, কিন্তু কোথাও কোন আলাপ নাই।

সহজ জীবন - ১৫

একজন মানুশ আরেকজন মানুশের নামে খারাপ কিছু বলে মূলত আনন্দ পাওয়ার জন্য। অসুস্থ বিনোদন। তারপর সে এটা ভুলে যায়। কিন্তু যার নামে বলে, সে ভুলে না। এভাবে তার এনিমি বাড়তে থাকে। তারপর একদিন যখন সে এর ফল পায় তখন সে বুঝতে পারে না কেন তার সাথে এরকম হচ্ছে। সে বলে— "আমি তো জীবনে কারো ক্ষতি করলাম না, আমার সাথে এরকম হচ্ছে কেন?"

আরেকজন মানুশের নামে খারাপ কিছু বলাও যে তার ক্ষতি করা, এটা অধিকাংশ মানুশই জানে না সম্ভবত! আপনি যদি একটা সহজ জীবন চান, তাহলে এধরনের ক্ষতি যত কম করবেন তত ভালো।

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি