চিন্তা ভাবনা

অনলাইনে প্রকাশিত চিন্তা-ভাবনা সমগ্র

Don't Look Up দেখলাম। নতুন প্রজন্ম ও সোশ্যাল মিডিয়া নিয়া প্যানিকড পাবলকিদের পছন্দ হওয়ার মতই মুভি। 'নতুন প্রজন্ম গোল্লায় যাচ্ছে', এটা হাজার বছরের পুরানো পপুলিস্ট ধারণা। প্রাচীন বাংলা সাহিত্যেও দেখবেন ডায়লগ আছে- 'কলিকাল, ঘোর কলিকাল!'
'সোশ্যাল মিডিয়া পাবলিকের থট নিয়ন্ত্রন করে/করতে চায়', এই ন্যারেটিভ দাঁড় করাতে মরিয়া ট্রেডিশনাল মিডিয়া। নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থে তারা এটা করতেই পারে, করবেও। কিন্তু, শিক্ষিত পাবলিক কেন এই বয়ান খাচ্ছে, সেটাই চিন্তার বিষয়। শত শত বছর ধরে ট্রেডিশনাল মিডিয়া যে সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রধানতম হাতিয়ার হয়ে আছে, সেটা তো তাদের জানার কথা।

কিছুদিন ধরে গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছিলো। এটা ঘুরিয়ে ভোর ৬টার দিকে নিয়ে আসলাম। এই সময়টা ঘুম ভাঙার জন্য বেস্ট মনে হয় আমার কাছে। যদি ৩০ বছর আগের নিজেকে ম্যাসেজ পাঠাতে পারতাম তাহলে বলতাম- খোকা, ডেইলি ৬টায় ঘুম থেকে উঠবা।

ছয়টার আগে ঘুম থেকে উঠার পর এক ঘন্টা কাটে ব্যক্তিগত কিছু কাজে। এর ভেতরে একটা হচ্ছে ব্রেকফাস্ট বানানো। ব্রেকফাস্ট বানাতে বানাতে সাধারণত ঐ দিনের টাস্কলিস্ট নিয়ে ভাবি। আজকে ভাবছিলাম একটা ড্রিম নিয়ে। আমি সাধারণত ড্রিম দেখি না খুব একটা। কিন্তু যখনই দেখি, সেটা খুব ইন্টারেস্টিং ড্রিম হয়। আজকে দেখলাম নিজের দাঁত পড়ে যেতে। এই স্বপ্নের প্রচলিত ব্যাখা দুই রকম। হয় হঠাৎ করে ধনী হয়ে যাবো অথবা কাছের কেউ মারা যাবে। হঠাৎ ধনী হওয়ার কোন সম্ভবনা নেই কিন্তু কাছের কেউ মারা যাওয়ার সম্ভবনা তো সবসময়ই থাকে। স্বপ্নের এইসব ব্যাখ্যা নিয়ে আমি কখনো ভাবি না। স্বপ্ন জিনিষটার যদি আসলেই কোন গুরুত্ব থেকে থাকে, সেটা নির্ভর করে ব্যক্তির গুরুত্বের উপরে। আমার স্বপ্নগুলো যদি এতই মিনিংফুল হতো তাহলে আমি সম্ভবত পৃথিবীর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন কেউ হতাম। কারণ, প্রায়ই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্টদের স্বপ্নে দেখি। গত সপ্তাহেও ওবামার সাথে কোথায় যেন যাচ্ছি দেখলাম। কিন্তু আমি অত গুরুত্বপূর্ন কেউ না। ফলে, দাঁত পড়ে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়েও ভাবার কিছু নেই। তাও ভাবছিলাম। এবং খেয়াল করলাম, এটা আমাকে কেমন যেন স্যাড করে দিচ্ছে। মানুশের মন আসলে খুবই অদ্ভুত!

যাহোক, প্রতিদিনের মত আজকেও এক কাপ চা নিয়ে বসলাম। টুডে ইজ নট যাস্ট এনাদার ডে, টু-ডে আই উইল ক্রিয়েট সামথিং বিউটিফুল। লেটস দ্য ডে বিগিন! হ্যাভ অ্যা গ্রেট ডে এভিওয়ান।

ইনোসেন্স আর ফুলিশনেসের ভেতরে পার্থক্য আছে। মানুশের ইনোসেন্সরে বোকামী ভাইবা হাইসেন না বরং নিজের জন্য দুঃখ পাইতে পারেন। আহারে, আমার হারিয়ে যাওয়া ইনোসেন্স!

আজকে ১১:৪৫ থেকে ১২:১০ পর্যন্ত কমপক্ষে দুই'শ ফানুশ উড়তে দেখলাম। আমাদের কাছেই এক বিল্ডিং থেকে ফানুশ উড়িয়েছে। সম্ভবত হোম মেড ছিলো, মেজারমেন্ট ভুল ছিলো। ফলে এটা আকাশের দিকে না গিয়ে রাস্তার দিকে চলে গেল। ভয়ে ভয়ে ছিলাম আগুন লেগে যায় কিনা কোথাও। এরকম তিনটা ফানুশ দেখলাম রাস্তার দিকে যেতে। এগুলো থেকে আগুন লাগাই তো স্বাভাবিক, তাই না?

যাত্রাবাড়সহ ঢাকায় ৬ জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে ফানুশ থেকে। সারা দেশে দুই'শতাধিক আগুন লাগার রিপোর্ট হয়েছে ৯৯৯ নাম্বারে। এই জিনিষ নিষিদ্ধ করা হোক।

২০২১ প্রোডাক্টিভ একটা বছর ছিলো আমার জন্য। কোভিড আক্রান্ত হয়ে দুই মাস কাজ করতে পারিনি। তারপরেও বেশীরভাগ মাইলস্টোন টাচ করতে পেরেছি। ২০২২ এর রুটিনে নতুন যোগ হচ্ছে লেখালেখি। এবছর পড়াশোনা ও লেখালেখির জন্য প্রতিদিন চার ঘন্টা করে বরাদ্দ করেছি।

২০১৯, ২০ এবং ২১, এই তিন বছর আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ন ছিলো। ভার্সিটিয়ান আর থিংকার ক্লাবের এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট হয়েছে এই তিন বছরে। ২০২২ এ একটা EduTech স্টার্টাপ শুরু করবো, ভার্সিটিয়ানের সিস্টার কনসার্ন হিসেবে সরাসরি বাংলাদেশী একাডেমিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের নিয়ে কাজ করার জন্য। একাডেমিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদেরকে ফ্রি কনসাল্টেন্সি, একাডেমিক ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার, লার্নিং ম্যানেজার ও অনলাইন এডুকেশন প্লাটফর্ম দেয়ার প্ল্যান আছে। ফলে, আগামী বছরটা আরো গুরুত্বপূর্ন আমার জন্য। গত তিন বছর ধরে যা যা ডেভেলপ করেছি এগুলো মাঠ পর্যায়ে ইমপ্লিমেন্ট শুরু হবে।

সব মিলিয়ে ২০২১ ভালো কেটেছে, ২০২২ আরো ভালো কাটবে আশা করি। বেঁচে থাকলে আগামী চার/পাঁচ বছরে ভার্সিটিয়ান, থিংকার ও এডুটেক থেকে বহু মানুশের জীবিকার ব্যবস্থা করতে পারবো ইনশা'আল্লাহ।
আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন এবং সবাই সুস্থ্য ও ভালো থাকবেন। নতুন বছরের অগ্রীম শুভেচ্ছা।

নন-ফিকশন অন্যের জন্য লেখা হয়, ফিকশন নিজের জন্য। ফিকশন লেখা খুবই ইন্টারেস্টিং ও আনন্দদায়ক ব্যাপার।

চিন্তা করতে শেখা হচ্ছে সাঁতার শেখার মতন। চিন্তা করতে না শিখলে জ্ঞান সাগরের শ্যালো অংশেই আটকে থাকা লাগে।

কনসিডার করা, ওভারলুক করা, ক্ষমা করা ও কম্প্রোমাইজ করার ক্ষমতা যেমন ভালো লিডার হওয়ার জন্য লাগে তেমনি ভালো ফ্যামিলি গাই হওয়ার জন্যও লাগে।

ম্যাথ থেকে আমি শিখেছি, সব অংক এক ইকুয়েশন দিয়ে মেলানো যায় না। যারা সবকিছুতেই ফাইন্যান্সিয়াল প্রফিট ক্যালকুলেশন করে, তারা একটা ইকুয়েশনে আটকে গেছে।

চালাকি করার চেষ্টা করে মূলত বোকা মানুশেরা। তারা ভাবে চালাকি করে তারা খুব জিতসে। আসলে ঠকে। কোন কোন দিক থেকে ঠকে সেটা বুঝার মত বুদ্ধি তাদের নেই। তাদের সবচাইতে বড় নির্বুদ্ধিতা হচ্ছে- তারা ভাবে অন্যরা তাদের চালাকি ধরতে পারে নাই।

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি