অনলাইনে প্রকাশিত চিন্তা-ভাবনা সমগ্র
সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত রাস্তায় কোন প্রাইভেট কার থাকতে পারবে না, শুধুমাত্র পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চলবে। পার্সোনাল গাড়ি নিয়ে অফিসে যাওয়া কিংবা বাচ্চাদের স্কুলে ড্রপ ভোর ৬টা থেকে ৮টার ভেতরে করতে হবে। এর জন্য বাচ্চাদের সকল স্কুলের টাইম এডজাস্ট করা লাগলে সেটা করতে হবে। ট্রাফিক জ্যামের একটা সাময়িক সমাধান হতে পারে এটা।
ছয় বছর আগে অফিসটাইম সংক্রান্ত একটা আইডিয়া শেয়ার করেছিলাম। ওটা করা গেলেও অনেক কর্মঘন্টা বাঁচবে (লিংক দিলাম কমেন্টে)।
ইফতার করা নিয়ে ত্রিভুজ যা বললেন (চিত্রসহ)
ইফতারে চিড়া দই খাবেন। লাল চিড়ার সাথে টক দই হলে ভালো (Curd আর Yoghurt এর ভেতর পার্থক্য আছে কিন্তু)। আমি আজকে মিস্টি দই খাচ্ছি কারণ এটা জেনুইন বগুড়ার দই। সাথে ফল থাকতে হবে। খেঁজুর আর কলা সেই অভাব পুরণ করতেছে এখানে। সাথে পেয়ারা, তরমুজ রাখতে পারলে আরো ভালো। যদিও চিড়ায় যথেষ্ঠ কার্ব আছে তবুও স্বাদের জন্য আলুর চপ বা সিমিলার অন্যকিছু রাখতে পারেন। সাথে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে ডিম টোস্ট বা চিকেন রাখবেন। আর কার্বস দরকার নাই, তবুও এস্থেটিক্যালি প্লিজিং এর জন্য টোস্ট রাখতে পারেন। আলুর চপ আমার প্রিয় জিনিষ, তাই খাই। বেগুনী অবশ্য আমার প্রিয় না, কিন্তু না রাখলে লোকজন গরিব ভাবতে পারে ????
প্রচুর পানি খেতে হবে, তাই এক গ্লাস প্লেইন ওয়াটারের সাথে রুহ আফজার শরবত রাখবেন। রুহ আফজা খেলে তো সওয়াবও হয় :পি
সেই সাথে লেবুর শরবত রাখবেন, টোকমা বা চিয়া সিড দেয়া। আমার আজকে নাই, ভেজাতে মনে ছিলো না।
একবারে সব খেয়ে ফেলবেন না। প্রথমে মিস্টি আইটেমগুলো খেয়ে নামাজ পড়ে এসে আস্তে-ধীরে বাকীগুলো খাওয়া শুরু করবেন।
বিঃদ্রঃ এই পোস্টে হাহা দিলে আপনার রোজা হালকা হয়ে যেতে পারে। তবে ইফতারের পরে দিলে সমস্যা নাই।
অন্ন-বস্ত্রের চাহিদার পর আমাদের সবচাইতে বড় চাহিদা হচ্ছে মানসিক শান্তি। এই শান্তির অন্যতম একটা উৎস হচ্ছে আরেকজন ব্যক্তি। কিন্তু, ম্যাটেরিয়ালিস্টিক কেউ কখনো অন্যের জীবনে শান্তির উৎস হয় না। এজন্য ম্যাটেরিয়ালিস্টিক তথা বস্তুবাদীদের জন্য আমার খারাপই লাগে।
আপনারা খামোখা এদেরকে আক্রমণ করবেন না। এরা আপনার পেছনে লাগে একটু শান্তি পাওয়ার আশায়। এই শান্তিটুকু তাদেরকে পেতে দিন। পৃথিবী ও মানব সভ্যতার জন্যও এরা থ্রেট না কারণ নিজেদের আইডিওলজির কারণে এরা কখনো ঐক্যবদ্ধ হতে পারে এবং পারবেও না। এদের ভেতরে যেটুকু ঐক্য আপনি দেখতে পান, সেটাও ঘটে যখন আপনি এদেরকে ঘাঁটান।
এদেরকে নিয়ে ভাবার কিছু নেই। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখতে পাবেন এরা সবসময়ই ছিলো কিন্তু কখনোই সংখ্যাগরিষ্ট হতে পারেনি। কারণ ঐ একই, ভুল আইডিওলজি। নিজেদের ভেতরে ঐক্য তৈরি করতে হলে কিংবা টিকে থাকতে হলে তাদেরকে সেটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে, যা তারা করবে না।
দে আর প্রিজনার অব দেয়ার ঔন ডিভাইস।
আচ্ছা, করোনা ভাইরাসের খবর কী? অরা কি সব রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মারা গেছে?
আলাপটা হওয়া উচিত কোনটা খারাপ আর কোনটা ভালো তা আমরা কিভাবে ডিফাইন করবো, সেটা নিয়া। এক্ষেত্রে কখনো ধর্ম আর কখনো বিজ্ঞান দরকার হতে পারে। চুরি করা যে খারাপ, এটা আপনি কোন বিজ্ঞান দিয়া রায় দিবেন? নাই ত! কবিতার কী বিজ্ঞান হে? ফলে, সব জায়গায় বিজ্ঞান ফলাইতে হয় না। তাহলে শিল্প-সাহিত্যও আপনারে বাতিল করতে হবে। এগুলাও তো অবৈজ্ঞানিক (আপনাদের যুক্তি দিয়া দেখতে গেলে)। বিজ্ঞান বনাম ধর্ম, এই তর্কে যায় আধাশিক্ষিতরা, যারা না জানে বিজ্ঞান না জানে ধর্ম।
আর বিজ্ঞানের সাথে মুসলিমদের কনফ্লিক্ট ছিলো না আগে। খ্রিস্টানদের ছিলো। মধ্যযুগ পর্যন্ত মুসলিমরাই জ্ঞান বিজ্ঞানরে এগিয়ে নিয়ে গেছে। বিজ্ঞানের সাথে মুসলিমদের দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছিলো অটোমানদের পতনের পর থেকে শুরু। এখন এই দূরত্ব কমে আসতে শুরু করেছে আবার। এটা কেটে যাবে।
প্রযুক্তি বিষয়ে (বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তি) বাংলা বই না পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম প্রায় ২০ বছর আগে। তাও কেনা বন্ধ করিনি। তখন ইন্টারনেট এত এভেইলেবল ছিলো না। ইংরেজী বইগুলোও ওভাবে পাওয়া যেত না। বাধ্য হয়েই প্রোগ্রামিং এর উপরে বাংলা বই কিনতাম। একবার ৭০০/৮০০ পৃষ্ঠার একটা বই কিনে দেখি পুরো বইটাই সোর্সকোড প্রিন্ট করে দেয়া। সম্ভবত কোন ওপেনসোর্স সফটওয়্যারের কোড কপি-পেস্ট করে বই বানিয়ে ফেলেছিলো। বইটার লেখক ছিলেন সেসময়ের একজন নামকরা প্রযুক্তি লেখক। প্রকাশ করেছিলো ঐসময়ের এক পাবলিকেশন যারা প্রযুক্তি বিষয়ক বই প্রকাশের জন্য বিখ্যাত ছিলো। সেই নামকরা লেখকের আজ কোন অস্তিত্ব নেই, প্রকাশনীটাও হারিয়ে গিয়েছে। এধরনের দুইনাম্বারী করে কেউ কখনো টিকে থাকতে পারে না।
এদেশে ননফিকশন লিখে কেউ কোটিপতি হয়নি। সেই দিন এখনো আসেনি। তাহলে খামোখা কেন পাবলিক এসব করতে যায়? আগের পোস্টে ব্লকচেইন বিষয়ক যে বইটার কথা বলেছি, এটা করে লেখকের কী লাভ হয়েছে? বইটার লাখ লাখ কপি বিক্রি হয়েছে নাকি উনাকে কেউ ব্লকচেইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে চিনেছে? ১৫/২০ বছর আগের তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক বই লিখতে গিয়ে যারা এধরনের অসততার আশ্রয় নিয়েছিলো, তাদের কেউ এখন চিনে?
যে বিষয়ে আপনার জ্ঞান কম সেই বিষয়ে বই লেখা, বিশেষ করে বিদেশী কোন বইরে অনুবাদ করে নিজের নামে ছেড়ে দেয়া একধরনের ক্রাইম। এই ক্রাইম এখন অনেকেই করতে শুরু করেছে। দুঃখজনক!
এবার বইমেলা থেকে মোট ১৮টা বই কিনেছি। এর ভেতরে সাতটা কবিতার বই বাদে বাকীগুলো নন-ফিকশন। দুঃখজনক বিষয় হলো, এই সাতটা কবিতার বই ছাড়া বাকী আর একটা বইও পড়ার মত না। এগুলোর অবস্থা এতই খারাপ যে ১১টা বই শেষ করতে আমার মাসখানেকের মত লাগলো। এর ভেতরে একটা বই ছিলো ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ে। যিনি এই বই লিখেছেন, ব্লকচেইন সম্পর্কে উনার ধারণা যে অস্পষ্ট সেটা বইয়ের ভূমিকা দেখেই কিছুটা আন্দাজ করতে পারছিলাম। পরে দেখি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ইতিহাস নিয়েও উনার অনেক ভুল ধারণা আছে। আর লেখার টোন অনেকটা "ভাইরে ভাই, কী এক প্রযুক্তি... হ্যান ত্যান" টাইপ। বিটকয়েন আর ব্লকচেইনের এরকম "ভাইরে ভাই" টাইপ গুনগান গেয়ে উনি ২৬ পৃষ্ঠা ভরিয়েছেন।
তাও মানা যেত যদি আসলেই উনার ব্লকচেইন সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার থাকতো। ব্লক চেইন নিয়ে উনার ধারণা হচ্ছে- বিটকয়েন আবিষ্কার করতে গিয়ে ব্লকচেইন আবিষ্কার হয়েছে। এটাকে শুধুমাত্র একটা তথ্যগত ভুল হিসেবে ইগনোর করা যেত, কিন্তু উনার বিনোদন আর্টিকেল লেখার টোনে লেখা বইয়ে বারবার শুধু এটাই বলে গেছেন যে— যেহেতু বিটকয়েন আবিষ্কার হওয়াতে ব্লকচেইনের উদ্ভব, সেহেতু ব্লকচেইন বুঝতে হলে বিটকয়েন অবশ্যই বুঝতে হবে। উনার ভাষায়- "ব্লকচেইন মূলত কী এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তির আরো গভীরে যাবার আগে আমাদের বিটকয়েন, অর্থ ও মুদ্রার ইতিহাস সম্পর্কে জানা অত্যাবশ্যক। কারণ বিটকয়েন ও ব্লকচেইন একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটিকে ছেড়ে আরেকটি বর্ণনা দেয়া আসলেই অসম্ভব। কারণ, বিটকয়েনের উৎপত্তি না হলে ব্লকেইনের উৎপত্তি হতো না। তাই বিটকয়েন এবং এর ইতিহাস না জেনে ব্লকচেইনের গল্প শুরু করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।"
বাস্তবতা হচ্ছে, ব্লকচেইন বুঝার জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সী বুঝা জরুরী না। এবং বিটকয়েনের এক যুগের বেশী সময় আগে ব্লকচেইন আবিষ্কার হয়। একটু নেট ঘাঁটলেই লেখক এই তথ্যটুকু জানতে পারতেন-
"Blockchain technology was first outlined in 1991 by Stuart Haber and W. Scott Stornetta, two mathematicians who wanted to implement a system where document timestamps could not be tampered with. In the late 1990s, cypherpunk Nick Szabo proposed using a blockchain to secure a digital payments system, known as bit gold (which was never implemented)."
ননফিকশন লেখার আগে সামান্যতম পড়াশুনাও যদি লোকজন করতে না চায়, তাহলে কিভাবে হবে?
বইটা পড়ে পরিষ্কার বুঝা যায় যে, লেখক 'ক্রিপ্টোকারেন্সি' বিষয়ক কোন বইয়ের অনুবাদ করে সেখানে নিজের কিছু কথাবার্তা যোগ করে 'ব্লকচেইন' এর বই হিসেবে ছেড়ে দিয়েছেন। ব্লকচেইন সম্পর্কে লেখকের তেমন কোন ধারণা যে নেই, সেটা বইটা পড়লেই বুঝা যায়। ক্রিপ্টোকারেন্সি বুঝার জন্য যেসব জটিল জটিল টার্মোনোলজি বুঝতে হয়, সেগুলোর অনুবাদ দেখে আপনার মনে হবে এবিষয়ে লেখকের জ্ঞানের গভীরতা কত! কিন্তু যখনই তিনি নিজের থেকে কিছু লিখতে গিয়েছেন, সেখানে নানা ধরনের ভুল তথ্য ও অসঙ্গতি তৈরি হয়েছে। বইটাতে অনুবাদকৃত অংশ আর নিজে থেকে লেখা গাল-গল্পগুলোর কোয়ালিটির পার্থক্য খুব বেশী চোখে পড়ে। এই বই পড়ে পাবলিক বিভ্রান্ত হবে। এভাবে বিভ্রান্তি তৈরি করা উচিত না।
বাংলা ভাষায় প্রকাশিত নন-ফিকশন বই এমনি কিনতে ইচ্ছা করে না। বারবার ধরা খেয়েও কিনি, অনেক আশা নিয়ে। এভাবে আর কতদিন হতাশ হতে হবে কে জানে!
আপডেটঃ ১১টা বইয়ের সবগুলোই যে খারাপ ছিলো, এটা ঠিক না। একটা বই বেশ ভালো ছিলো। 'বাঙালি মুসলমান প্রশ্ন'। এই বইটা নিয়া পরে কখনো রিভিউ দেয়ার ইচ্ছে রইলো।
ঢাকার বাইরের ইন্টেলেকচ্যুয়ালরা ঢাকার ইন্টেলেকচ্যুয়ালদের থেকে বেশী পড়াশুনা করে। অর্গানিক চিন্তার দিক থেকেও তারা এগিয়ে।
পৃথিবী যে আপনাকে কতকিছু দিয়েছে, তার বিনিময়ে কিছু করার চিন্তা কেন আসে না আপনার মাথায়? এক অক্সিজেনের ঋণ শোধ করার কথা ভেবে দেখেন, অক্সিজেনের বাজার-মূল্যে।
সহজ জীবন - ২০
সফলতা আসলে কী? বিভিন্ন দিক থেকে দেখলে আপনি এর বিভিন্নরকম উত্তর দেখতে পাবেন। সমাজের একজন হিসেবে আপনার সাফল্য একরকম, ব্যক্তি হিসেবে আরেকরকম। আপনার একটা দারুণ ক্যারিয়ার আছে কিংবা লাভজনক ব্যবসা আছে, এগুলো সামাজিক সাফল্য। ব্যক্তিগত জীবনে আপনার নিজের কাছে নিজের সফলতা কোথায়?
আমার যেটা মনে হয়, একজন ব্যক্তির নিজের কাছে নিজের সফলতা হচ্ছে দায়মুক্ত থাকা। দায়মুক্ত বলতে যেমন জাগতিক সম্পদের হিসাবে পাওনাদার না থাকা, তেমনি অন্য আরো অনেক দিক থেকেও লেনা-দেনা না থাকা। আপনি যদি কখনো কাউকে ঠকিয়ে থাকেন, আপনি আর দায়মুক্ত রইলেন না। আপনি যদি কারো সাথে অন্যায় করে থাকেন, তার কাছ থেকে ক্ষমা না পাওয়া পর্যন্ত দায়মুক্ত নন। আবার, পৃথিবীর জন্য কিছু করার ক্ষমতা ছিলো কিন্তু নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত রইলেন, তাহলে এই পৃথিবীর কাছ থেকে দায়মুক্তি ঘটলো না আপনার।
দায় কাঁধে নিয়ে কেউ নিজের কাছে নিজেকে সফল দাবী করতে পারে না।