অনলাইনে প্রকাশিত চিন্তা-ভাবনা সমগ্র
জীবন যাপনের জন্য কি খুব বেশি কিছু দরকার? মাঝে মাঝে মনে হয় সব বাদ দিয়ে কৃষিজীবি হয়ে যাই। একজন মানুষ যদি আমাজনের জঙ্গলে ঘাস-পাতা খেয়ে ২৮ দিন বেঁচে থাকতে পারে তাহলে একটুকরা কৃষি জমিতে শস্য ফলিয়ে একজন মানুষ কেন বেঁচে থাকতে পারবে না? জীবনে কতকিছু করার ছিলো, ব্যস্ততা কেড়ে নিচ্ছে সব সময়... !
৭ এপ্রিল, ২০১২
ভেবেছিলাম এবার ঈদের ছুটিতে সবকিছু (মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট লাইন) বন্ধ করে পুরোপুরি ছুটি কাটাবো, কিন্তু হচ্ছে না! মোবাইল, কম্পিউটার আর ইন্টারনেট ছাড়া আমার জগৎ অচল মনে হচ্ছে.. খুব খারাপ লক্ষণ এটা! ভাবতেসি কিছুদিন গ্রামে গিয়ে থাকা যায় কিনা... কৃষি কাজ শিখবো। কৃষি হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র পেশা যেটা কোনদিন বিলুপ্ত হওয়ার কোন সম্ভবনা নাই।
আচ্ছা, ডিজিটাল এজ বিলুপ্ত হয়ে যাবে বা যেতে পারে এরকম কেন মনে হইতেসে?
২৬ অক্টোবর, ২০১২
শহরের প্রতিটা বাড়ির ছাদে হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে চাষ করতে পারেন আপনারা। এই পদ্ধতিতে চাষ করতে মাটি লাগে না। আর যারা বাড়ি বানাবেন, তারা বাড়ির নকশা করার সময় ছাদে হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে চাষ করার জন্য স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করে নিতে পারেন। ভবিষ্যতে কাজে দিবে।
আপডেটঃ
কয়েকজনের মন্তব্য থেকে জানা গেল Hydroponics থেকে Aquaponics বেটার। Aquaponics এর সাথে সবজির পাশাপাশি মাছও থাকে বলে এতে মশার বংশবৃদ্ধির সম্ভবনাও থাকে না।
একজন লোকের সাসটেইন করার জন্য পাঁচ একর জমি লাগে। বাংলাদেশে সম্ভবত আরো কম লাগে যেহেতু আমাদের জমির উর্বরতা বেশী ও আমরা ভাত খাই।
তো, এইটুক জমি আপনার যদি না থাকে, আপনার ভবিষ্যত কখনোই সিকিউর না।
আপডেটঃ এ বিষয়ক যে কয়টা স্টাডি পড়েছি, সেগুলোর কোনটাই আমাদের দেশের না, ফলে আমাদের মাটির উর্বরতা ও জলবায়ুর ক্ষেত্রে কতটুকু জমি, সেটা আমার জানা নেই। কয়েকজনের কমেন্ট পড়ে বুঝলাম অনেক কম হবে এখানে। একজন নিজে উৎপাদন করে দেখেছেন বললেন।
আরেকটা ফ্যাক্ট হচ্ছে— বাংলাদেশের অধিকাংশ জমিতে বছরে তিনবার ফসল ফলানো যায়, যেটা পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই সম্ভব হয় না। ফলে, এই ৫ একরের হিসাব আমাদের জন্য প্রযোজ্য না। আমাদের জন্য কতটুকু জমি প্রয়োজন, সেটা আমার জানা নেই। কয়েকজন দাবী করেছেন ১ বিঘা ও পাঁচ বিঘা। কিন্তু, তাদের এই হিসাবের পক্ষে কোন রিসার্চ দেখাতে পারেননি বিধায় সেটাকে আমি মূল পোস্টে তথ্য হিসেবে যোগ করলাম না। একজন নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন, কিন্তু সেটা প্রোটিন বাদে। ফলে, সেটাও যথার্থ নয়।
এক্ষেত্রে আরেকটা বিষয়ও মাথায় রাখা উচিত। শুধু ভাত-মাছই যথেষ্ঠ না। ব্যালেন্স ডায়েটের জন্য অনেক ধরনের খাবার লাগে। এগুলো সব ফলানোর জন্য যথেষ্ঠ জমি প্রয়োজন।
একজন আমারে ইনবক্সে বললো 'প্রেগনেন্ট' আর 'প্রেগনেন্সি' নাকি অশ্লীল শব্দ।
এটা শুনে কয়েক বছর আগের একটা ট্যুরের কথা মনে পড়লো। আমার হাতে এলিফ শাফাকের ফর্টি রুলস অব লাভ বইটা ছিলো। সেটা দেখে একজন বললো ঐ এলাকার লোকজন নাকি এটা খারাপ ভাবে নিবে। যে এলাকার লোকজন 'লাভ' শব্দটা নিতে পারে না সেখানকার কেউ প্রেগনেন্সি শব্দটা দেখলে হয়তো আমাকে ব্লকই দিবে।
প্যারেন্টিং - ৫৭ (প্রথম ১০০০ দিন)
একজন মানুষের জীবনের প্রথম ১০০০ দিন হচ্ছে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন। একজন ব্যাক্তি ভবিষ্যতে কতটা ক্যাপাবল হবে, কতটুকু মেধাবী হবে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কেমন হবে, জীবনে কতটুকু দূরে যাওয়ার উপযোগী হয়ে গড়ে উঠবে, সেটার অনেকটাই নির্ধারিত হয়ে যায় এসময়। এটাকে আপনি বিল্ডিং এর ফাউন্ডেশন বা পিসি বিল্ডের সাথে তুলনা করতে পারেন।
এই প্রথম হাজার দিনে একটা বাচ্চার শারীরিক (বিশেষ করে ব্রেইন) ও মানসিক গঠন তৈরি হয়। বাচ্চার ভবিষ্যত স্বাস্থ্য কেমন হবে তা নির্ধারিত হয়, ফলে এসময় সঠিক খাবার ও যত্নের গুরুত্ব অপরিসিম।

Poor nutrition in the first 1,000 days can cause irreversible damage to a child’s growing brain, affecting her ability to do well in school and earn a good living—and making it harder for a child and her family to rise out of poverty. It can also set the stage for later obesity, diabetes, and other chronic diseases, leading to a lifetime of health problems.
আর এই হাজার দিনের গননা শুরু হয় কনসিভ করার দিন থেকে বা বাচ্চা পেটে আসার পর থেকে। এসময় বাচ্চা এবং বাচ্চার মা, দুইজনের সমপরিমান যত্নের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে বাচ্চা যখন গর্ভে থাকে, তখন মায়ের পুষ্টি ও যত্ন মানে বাচ্চার পুষ্টি ও যত্ন। এসময় বাচ্চার মানসিক গঠনও শুরু হয় ফলে মায়ের সাথে করা আচরন বাচ্চার উপরে প্রভাব ফেলে।
এই বিষয়টা এত ব্যাপক যে শুধুমাত্র আমার লেখার উপরে ভরসা না করে নেট ঘাঁটুন, আরো বই পড়ুন ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। আমি চেষ্টা করবো সহজ ভাষায় ও অল্প কথায় এ বিষয়টা তুলে ধরতে এবং বিভিন্ন লেখকের বই, লিংক, ভিডিও এবং আরো রিসোর্স সংযুক্ত করতে।
প্যারেন্টিং - ৫৬
বাচ্চাদের প্যারেন্টিং এর তিনটা ধাপ আছে—
১) প্রথম হাজার দিনঃ প্রেগনেন্ট হওয়ার দিন থেকে এই ১ হাজার দিন কাউন্ট শুরু হয়
২) Toddler - হাঁটিহাটি পা পাঃ প্রথম ১ হাজার দিন পার হওয়ার পর থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত
৩) Kid বা শিশুকালঃ ৫ থেকে ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত
প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের মাঝে আরেকটা ধাপ আছে যেটাকে infant (ছানা) বলে। প্রথম ১ হাজার দিনের ভেতরে এটা কেটে যায়, তাই আলাদা করে ধরা হয়নি এখানে।
আমাদের দেশের স্কুলিং সিস্টেমে এই ধাপগুলো মানা হয় না। হলে ১৩ বছর পর্যন্ত প্রাইমারী স্কুল বা জুনিয়র স্কুল এবং ১৩ এর পর থেকে হাই স্কুল শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু দেশ না মানুক, আপনি-আমি তো মানতে পারি। বাচ্চাদের এডুকেশন থেকে শুরু করে সবকিছু এই তিনটা ধাপ মেনে করা সবচাইতে ভালো। সেভাবেই সব সাজাচ্ছি কিডস প্লাটফর্মে ও আমার প্যারেন্টিং বইয়ে।
দেশের প্রচলিত এডুকেশন সিস্টেমের সাথে এই ধাপগুলোকে কিভাবে এডজাস্ট করা যায় সেটা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে অনেক। বিশেষ করে আমাদের দেশের অভিভাবকরা যেখানে বাচ্চা সঠিক বেড়ে উঠার চাইতে স্কুলের রেজাল্টকে বেশী গুরুত্ব দেয়, সেখানে এই কাজটা বেশ কঠিনই বলা যায়।
কিন্তু, এরকম সচেতন প্যারেন্টও আছে যাদের কাছে বাচ্চার সঠিক বেড়ে উঠা বেশী গুরুত্বপূর্ন। তাদের উচিত অন্যদেরও সচেতন করা। কারণ, একা ভালো প্যারেন্ট হয়ে লাভ নেই তেমন। বাচ্চাদের উপযোগী ভালো পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য আপনাকেও ভূমিকা রাখতে হবে।
আজ হতে ২২ বছর আগে যখন আমি কলেজে পড়ি তখন ভারতীয় একটা আইটি ট্রেইনিং ইনস্টিটিউটে সি++, জাভা ও ডাটাবেস ডিজাইন (MS SQL SERVER) শিখে একটা হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বানিয়েছিলাম। ডিস্ট্রিবিউটেড এপ্লিকেশন। সেই এপ্লিকেশন আমি অনেকগুলো হসপিটালের কাছে বিক্রি করেছিলাম।
ঐ ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পদ্ধতি খুবই চমৎকার ও ইফেক্টিভ ছিলো। নো ওয়ান্ডার, ভারতীয়রা আইটিতে আজ এত এগিয়ে! বাংলাদেশে এখনো ঐ মানের সিলেবাস ও শিক্ষা পদ্ধতির কোন ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট দেখি নাই। হয়তো আছে, আমার চোখে পড়ে নাই। বাংলাদেশী যে কয়টা প্রতিষ্ঠান আমার চোখে পড়েছে তাদের কোনটারেই সেই ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটির কাছাকাছিও যেতে দেখি নাই।
সেই ভারতীয় ট্রেইনিং ইনস্টিটিউটগুলো বাংলাদেশ থেকে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আমরা বাংলাদেশীরা কেন ঐ মানের প্রশিক্ষন কেন্দ্র তৈরি করতে পারলাম না? নাকি আছে ওরকম কিছু? জানতে চাই।
জানতে চাই একারণে যে— থিংকার টাউন সেন্টারগুলোতে যারা সদস্য হবে, তাদেরকে ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যেন আমরা ভালো ও কার্যকরী প্রশিক্ষন কেন্দ্রের খোঁজ দিতে পারি।
ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে এধরনের প্রতিষ্ঠান যদি না থাকে, আমরা সাহায্য করবো তৈরি করতে। প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ও কনটেন্ট তৈরির দিক নির্দেশনা দেয়া হবে আমাদের তরফ থেকে।
আমরা চাই এধরনের অনেক প্রতিষ্ঠান তৈরি হোক এদেশে। আগ্রহীরা ইনবক্স কিংবা ইমেইলে (trivuz@জিমেইল) যোগাযোগ করতে পারেন।
জন্মদিনে যারা শুভেচ্ছা জানাইছেন এবং জানান নাই কিন্তু আমারে ভালোবাসেন, তাদের সকলরেই ধন্যবাদ দিতে চাই। কিন্তু সেটা শুধুমাত্র লিখিত বা মৌখিক ধন্যবাদ জানিয়ে না বরং কাজের মাধ্যমে। এই কাজের একটা হচ্ছে থিংকার টাউন সেন্টার। মনে আছে, কত কত আইডিয়া শেয়ার করেছি গত পাঁচ/ছয় বছর ধরে?
- গরীব লোকদের ডাটাবেস, যেখান থেকে দান করার মত কাউকে খুঁজে বের করতে পারবেন এরকম প্লাটফর্ম
- গরীব ছাত্রদের কম্পিউটার কিনতে হেল্প করা বা আপনাদের বাসা পড়ে থাকা পুরানো কম্পিউটার পার্টস ডোনেট করে সুবিধা বঞ্চিত কাউকে বিনামূল্যে একটা কম্পিউটার বিল্ড করার প্লাটফর্ম
- প্রাকৃতিক দূর্যোগে এক হয়ে কাজ করার একটা প্লাটফর্ম
- একে অপরের বিপদে এগিয়ে আসার প্লাটফর্ম
- প্রশ্নের উত্তর ও তথ্য দিয়ে সাহায্য করার প্লাটফর্ম
- লোকজনকে কিছু আয়-রোজগারের ব্যবস্থা করে দেয়ার প্লাটফর্ম
এবং এরকম আরো অনেকগুলো আইডিয়াই তো শেয়ার করেছিলাম। বিচ্ছিন্নভাবে এসব প্লাটফর্ম তৈরি করা সম্ভব হলেও সাসটেইন করা খুব কঠিন। কিন্তু যদি এরকম হয় যে, অন্য কোন সাসটেইনেবল প্লাটফর্মের ভেতরে এড-অনস হিসেবে এই সেবাগুলো থাকে, তাহলে কিন্তু সম্ভব। আর Thinkr এর এই Town Center জিনিষটা ঠিক তাই। থিংকার প্লাটফর্মের জন্য তৈরি করা বিভিন্ন মডিউল ও কমিউনিটি ফিচারের সমন্বয়ে এটা তৈরি।
৬৪ জেলা ক্যাম্পেইন যখন শুরু করবো তখন প্রতিটা জেলায় কমপক্ষে একটা করে টাউন সেন্টার সেটাপ করে আসবো। প্রতিটা টাউন সেন্টারের একজন লিডার থাকবে (মেয়রের মতন) আর কিছু কেন্দ্রীয় সদস্য। টাউন সেন্টারে ঐ এলাকার লোকজন জড়ো হবে, পাঠচক্র তৈরি করবে, সাহিত্য চর্চা করবে, একাডেমিক হেল্প পাবে, তথ্য পাবে, এবং কমিউনিটির সাহায্য নিয়ে নিজের ভালো কাজগুলোকে ছড়িয়ে দিতে পারবে। ব্যবসা বানিজ্য নিয়েও কিছু ব্যাপার আছে। পাশাপাশি কমিউনিটির সদস্যরা মিলে উপরের চ্যারিটি কার্যক্রমগুলোতেও সহায়তা করতে পারবে।
এই কেন্দ্রের নাম 'Town Center' না দিয়ে আরো ভালো কী দেয়া যায়, সেটা নিয়েও ভাবছি। এখন পর্যন্ত টাউন সেন্টারই যথার্থ মনে হচ্ছে।
Happy New Year,
Trivuz