চিন্তা ভাবনা

অনলাইনে প্রকাশিত চিন্তা-ভাবনা সমগ্র

একটা ব্যপার ভাবছিলাম। আমাদের দেশের অফিস-আদালতের সময়টা ১০টা-৫টা থেকে পরিবর্তন করে ভোর ৫টা-১টা করলে কেমন হয়? মানুষজন ভোর ৪টায় ঘুম থেকে উঠে হালকা কিছু খেয়ে বের হয়ে পড়লো। অফিসগুলোতে লাঞ্চ ব্রেকের মত ১০টার দিকে ব্রেকফাস্ট ব্রেক দিলো। তারপর ১টায় ছুটি। লোকজন দুপুরে বাসায় ফিরে পরিবারের সাথে লাঞ্চ করলো, আপনজনের সাথে বাকীটা দিন কাটালো। শপিং করলো, ঘুরলো। তারপর সন্ধ্যায় ডিনার করে ৮টার ভেতরে ঘুমিয়ে গেল। এর পজেটিভ সাইডগুলোর ভেতরে গুরুত্বপূর্ন কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরা যাক-

১) ভোরে ঘুম থেকে ওঠার ফলে মানুষজনের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পাবে। কাজকর্ম অনেক দ্রুত হবে।

২) পরিবারের সাথে সময় দেয়ার মত যথেষ্ঠ সময় পাওয়া যাবে।

৩) বাকী দিনটা যেহেতু ফ্রি, এসময়টা লোকজন শপিং আর ঘুরাঘুরি করতে পারলো। এতে ব্যবসাবানিজ্য বৃদ্ধি পাবে, পর্যটন/বিনোদন ব্যবসাগুলোও বৃদ্ধি পাবে।

৪) বিদ্যুৎ সমস্যা মিটবে। যেহেতু রাতের অধিকাংশ সময়টায় লাইট অফ থাকবে এবং শুধুমাত্র বেডরুমে ফ্যান/এসি চলবে। তাছাড়া সকালের ঠান্ডা পরিবেশের কারণে অফিসগুলোর বিদ্যুৎ কনজিউমও কমবে।

৫) ভোর রাতে যেহেতু বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা থাকে, অফিস যাওয়ার পথের গরমের কষ্টটা লাঘব হবে।

৬) স্কুল-কলেজগুলো ৮টার পরে শুরু হলে অফিসযাত্রীরা রাস্তায় জ্যামও কম পোহাবে। ভিআইপিরা সকাল দশটার পরে ও দুপুর ২টার পরে মুভ করে জ্যাম আরো কমাতে পারেন।

৭) স্কুল-কলেজ ও প্রফেশনাল কোর্সগুলো দুই শিফটে হতে পারে। এতে অফিস করার পাশাপাশি মানুষ ক্যারিয়ার বিল্ড করার জন্য দুপুরের পরে প্রফেশনাল কোর্স করতে পারবে।

৮) দুপুরের পরে ওভারটাইম কাজ করে লোকজন তাদের আয় বাড়াতে পারবে। সকালে অফিস করে বিকালে কোন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলো বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পার্টটাইম কাজ করলো।

৯) প্রতিদিন দুপুরের পর অবসর পাওয়ার ফলে লোকজন পড়াশোনা ও বিনোদনে যথেষ্ঠ সময় দিতে পারলো। এতে দেশের মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানসিক উন্নতি ঘটবে।

১০) অনেক ভোরে কার্যক্রম শুরু করায় বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে লেনদেন সহজ হবে। তাদের ওয়ার্কিং আওয়ারের সাথে সিন্ক করা সহজ হবে।

আরো অনেক সুবিধা আছে।

সহজ জীবন - ৪ (উচিত কথা)

আমাদের সমাজে 'উচিত কথা' নামে একটা ব্যপার রয়েছে। এই 'উচিত কথা' জিনিষটাকে আমার কাছে নেতিবাচক মনে হয়। এই শব্দটার ভেতরে একটা আত্মতৃপ্তির গন্ধ আছে। মানে, যারা 'উচিত কথা' বেশী বেশী বলে তারা এটা করে এক ধরনের আত্মতৃপ্তি পায়। যারা খুব গর্ব করে বলে থাকে যে- 'উচিত কথা' বলতে সে কখনো ছাড়ে না, তাদের মন-মানসিকতা একটু ভালো করে খেয়াল করলেই আপনি বুঝতে পারবেন ব্যাপারটা।

এই 'উচিত কথা' বলার কারণে যাদের কোন বন্ধু থাকে না তারা ভাবে অন্যরা বুঝি সত্য গ্রহন করতে পারতেছে না। বস্তুত ব্যাপারটা এরকম না। মানুষের প্রতি যদি আপনার মমতা থাকে তাহলে সহজেই ক্ষমাশীল হতে পারবেন। তখন কেউ ভুল কিছু করছে বা বলছে দেখলেও সরাসরি সেটার বিরুদ্ধে গিয়ে 'উচিত কথা' নামক তীর ছুড়ে মারবেন না। সেক্ষেত্রে প্রথমে আপনি তাদের ক্ষমা করে দিবেন, তাদের প্রতি সহানুভূতি অনুভব করবেন। তারপর ভাববেন— কি করলে বা কিভাবে বললে ওরা এর ক্ষতির দিকটা বুঝতে পারবে, এর থেকে বিরত হবে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাববেন। অনেক সময় সেই পদক্ষেপ হতো সরাসরি বিরুদ্ধে না যাওয়া বা তথাকথিত 'উচিত কথা' থেকে বিরত হওয়া। কারন, ঐ 'উচিত কথা' কতটুকু সমাধান আনবে সেটাকে আপনি বেশী গুরুত্ব দিচ্ছেন।

গতবছর আমি সোন্দরবন গেছিলাম। দেইখা আইছি, বাগ হরিনেরা অন্ধকারে কত কষ্ট কইরা জীবনাতিপাত করতেছে। বিদ্যুৎ নাই, তাই তাদের কোন স্মার্ট ফোনও নাই। কেমন আনস্মার্ট জীবনযাপন তারা করতেছে, ভাবতে পারেন? সর্কার রামপাল কইরা তাদের এই দুঃখ দূর করার চেষ্টা করতেছে, সেইটা কিছু লোকের সহ্য হয় না।

রামপাল কে হ্যাঁ বলুন।

১.
এই দেশের মানুষকে নিয়ে সবসময়ই আমি আশাবাদী। অনলাইনে বিভিন্ন সময়ে বই পড়া বিষয়ক বিভিন্ন একটিভিটিস ও দেশের জন্য কিছু করতে চাইলে লোকজনের একাত্মতা দেখে মুগ্ধতার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আশাবাদ।


২.
ছোটবেলা থেকেই পাঠ্য বইয়ের বাইরে পড়ার অভ্যাস। বিশেষ করে পত্রিকার কলাম পড়তাম স্কুল জীবন থেকেই। দেশকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছি তখনই। বাংলাদেশকে নিয়ে হয়েছি আশাবাদী। তখন থেকেই ভেবেছি, কেবল নিজের জন্য নয়, দেশের জন্যও করার আছে, অনেক কিছু।


দেশকে নিয়ে এই আশাবাদ ও ভাবনা কেন? কারণ, আমি এই এলাকার মানুষদের জানি। দেখেছি, কি পরিমান ট্যালেন্ট এই দেশের মানুষ। শুধুমাত্র একটু দিকনির্দেশনার অভাবে আমরা পিছিয়ে আছি। শুধুমাত্র আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটার কারণে আমাদের আজকের এই দুর্দশা। এটা কাটানো সম্ভব। এর জন্য কাজ করতে হবে। অনেকে কাজ করছেনও... আরো বেশী মানুষকে নামাতে হবে এই কাজে।


আজকে পৃথিবী যেভাবে স্বর্ণের খনি আর হীরার খনির জন্য ছুটছে, একসময় মানুষের খনির পেছনে ছুটবে। উন্নত দেশগুলো সব মানুষ শূন্য হয়ে পড়ছে দিনে দিনে। দক্ষ লোকের জন্য এখনি বিশ্বের অনেক দেশ তাদের ইমিগ্রেশন পলিসি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। ভবিষ্যতে এমন দিনও আসবে যখন বাংলাদেশের রাস্তার মোড়ে মোড়ে ফ্লেক্সি লোডের দোকানের চাইতে বিদেশে লোক পাঠানো এজিন্সির সংখ্যা বেশী হবে। তবে, তারা খুঁজবে দক্ষ ও যোগ্য লোক।


তাছাড়া নিজেদের দেশকে সমৃদ্ধ করার জন্যও অনেক যোগ্য লোক দরকার আমাদের। এই যোগ্যতা অর্জিত হতে পারে নিবিড় পাঠ ও অধ্যবসায়ের মধ্য দিয়ে।


ইতিহাস, সাহিত্য, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্কসহ নানামুখি অধ্যয়ন এবং সন্মিলিত মৌলিক পাঠ ও গবেষণার উদ্যোগ হিসাবে যাত্রা শুরু হলো 'পাঠশালা - Centre for Basic Studies'-এর।


আপনি যদি মনে করেন কিছু শেখাতে পারবেন চলে আসুন। কিছু শিখতে চাইলেও। এখানে আমরা শিখবো ও শেখাবো।


যে কেউ সদস্য হতে পারবেন। তবে তিনি জানতে ও জানাতে কতটা আগ্রহী তা বিবেচনায় নেওয়া হবে।


বই নিয়ে আলোচনা হবে। আলোচনা হবে শিল্প, সাহিত্য, দর্শন, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ, উন্নয়ন ভাবনাসহ নানান প্রসঙ্গ নিয়ে। চলচ্চিত্র, নাটক, চিত্রকলা, সঙ্গীত নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
খ্যাতিমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিদের জীবন ও ভাবনা নিয়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণ হতে পারে। আলোচনা হতে পারে সাম্প্রতিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ নিয়েও।


আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে আগামী দিনের বাংলাদেশের জন্য যোগ্য, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরির প্রচেষ্টা চালানো।
আশা করি এই উদ্যোগে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকবে সবার।
আমরা সবাই মিলে গড়ে তুলবো শক্তিশালী বাংলাদেশ।
সবাইকে ধন্যবাদ।

// বাংলাদেশের শিক্ষা-ব্যবস্থা

বাংলাদেশের পড়ালেখার সিস্টেমটা কিরকম জানেন? এখানে আপনাকে প্রথমে পুটিমাছ ধরতে শেখাবে। তারপর কৈ মাছ। তারপর রুই মাছ.. তারপর কাতলা মাছ। এভাবে যতপ্রকার মাছ আছে আপনি সারাবছর সেগুলো ক্যামনে ধরতে হয় শিখতে গিয়া খালি পড়বেন আর পড়বেন। সব মুখস্ত করে ফেলবেন। বাস্তব জীবনে এই বিদ্যা কোন কাজে আসে না। কারণ, ক্যারিয়ারে গিয়া আপনার এমন মাছ ধরতে হইবো যেইটা আপনার স্কুল-কলেজ শেখায় নাই।

শেখানোর কথা ছিলো 'মাছ কেমনে ধরতে হয় সেইটা'। তাহলে আপনি যেকোন মাছই ধরতে পারতেন, সারাবছর দৌড়ের উপরেও থাকতে হতো না।

রিক্রুটমেন্টের জন্য বিডিজবস থেকে ফেসবুক বেশী কাজের দেখা যাচ্ছে। রিক্রুটমেন্টের জন্য একজন মানুষের স্কিল যতটা গুরুত্বপূর্ন, তার ব্যক্তিত্ব ততটাই গুরুত্বপূর্ন। ফেসবুক প্রোফাইলের দিকে তাকালে একজন মানুষ সম্পর্কে আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন। একারণে, রিক্রুটমেন্টের জন্য ফেসবুক একটা ভালো জায়গা মনে হলো।

তবে, যারা চাকরী খুঁজছেন তাদের এই বিষয়ে কিছু কোর্স করা উচিত। মানে, কিভাবে আপনি নিজেকে তুলে ধরবেন, কিভাবে কথা বলবেন, কি বলা উচিত না কি বলা উচিত এসব জানার জন্য। ২০০২ সালে আমার জীবনে প্রথম রিক্রুটমেন্টের অভিজ্ঞতা হয়েছিলো। হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার বানিয়েছিলাম একটা... যেখানেই সেটা দিতাম সেখানেই ওটা চালানোর লোক নিয়োগ করার সময় ভাইবা বোর্ডে আমাকে থাকতে হতো এবং বেশীর ভাগ প্রশ্ন আমাকেই করতে হতো। এরকম বেশ কিছু ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকার পর রিয়েলাইজ করেছিলাম- এই দেশে চাকরীর কোন অভাব নাই, অভাব যোগ্য লোকের। সবচাইতে দুঃখের ব্যপার ছিলো এটা যে- উচ্চশিক্ষিতদের ভেতরে অযোগ্য লোক বেশী। বিশেষ করে কমিউনিকেশন স্কিল নাই বললেই চলে তাদের। এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কিছু শেখাতে পারুক আর না পারুক, মানুষের ভেতরে অযৌক্তিক ইগো আর অহংকার ঢুকিয়ে দিতে পারে যেটা বেশীর ভাগ লোককে নিয়োগ অযোগ্য করে তোলে।


আইটি ইন্ড্রাস্ট্রির অবস্থা এই ক্ষেত্রে অনেক ভালো। এখানে যোগ্য লোক আছে অনেক, কিন্তু তাদের বেশীর ভাগই জানে না কিভাবে নিজের যোগ্যতা তুলে ধরতে হয়। এই জায়গাটায় মনোযোগী হতে পারলে দেশী ও আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের ছেলে/মেয়েরা অনেক ভালো করতে পারতো। বিশেষতঃ আমাদের দেশে এভারেজে ব্রিলিয়ান্টের সংখ্যা বেশী। তাদের শুধুমাত্র একটু গাইডলাইন দরকার।

সফটওয়্যার ইন্ড্রাস্ট্রিতে যারা কাজ করতে চান (বিশেষ করে প্রোগ্রামিং লাইনে) তাদের প্রতি আপাততঃ একটা অনুরোধ- আপনারা অবশ্যই নিজে নিজে অনেক প্রজেক্ট করবেন এবং সেগুলোর কিছু কিছু অবশ্যই গিট হাবে রাখবেন। জব পাওয়ার জন্য এটা অনেক কাজে দেয়।


এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে জব পাওয়ার টিপস এবং সাজেশন নিয়ে একটা গ্রুপ করবো ভাবছিলাম... কিন্তু গ্রুপ করার পর দেখা যায় আমি ছাড়া আর কেউই টিপস বা সাজেশন দিতে আগ্রহী হয় না। একা আমার পক্ষে তো এত সময় নিয়ে এধরনের একটা গ্রুপ চালানো সম্ভব না। তবে, কেউ যদি টিপস বা সাজেশন চান, ইনবক্স করতে পারেন। হয়তো সাথে সাথে জবাব দিতে পারবো না কিন্তু দেরীতে হলেও যতটুকু সম্ভব সাহায্য করবো।


যারা ইনবক্স করেছেন ও মেইল করেছেন, তাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।

সহজ জীবন - ৩ - // সার্কেল থিওরী //

আপনি প্রথমে একটা বৃত্ত আঁকবেন। বৃত্তের কেন্দ্রে আপনি আর আপনার অনেক কাছের মানুষজন থাকবে সেই বৃত্তের ভেতরে। তারপর আপনি সেই বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দু ধরে আরো বড় একটা বৃত্ত আঁকবেন। সেখানে থাকবে আপনার আরেকটু কম কাছের লোকজন। এভাবে বৃত্ত এঁকে যাবেন, একের পর এক। তারপর, ঠিক করুন কাকে কোথায় রাখবেন। আপনার কেন্দ্র থেকে সর্বোচ্চ পরিধিরও বাইরে থাকবে আপনার অপরিচিত লোকজন। (ছবি দেয়া হলো- প্রথম মন্তব্যে)



এবার, যারা আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করবে বা যারা আপনার সম্পর্কের মূল্যায়ণ করতে পারে না তাদেরকে ধীরে ধীরে বাইরের দিকে পাঠিয়ে দিন। মানুষ সাধারণত কাছের মানুষের ব্যপারে হতাশ হয় এবং সেই হতাশা থেকে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখায়। ভুল মানুষকে কাছের মানুষ ভাবার ফলেই যত অশান্তির সৃষ্টি। সুতরাং যার অবস্থান যেখানে থাকা উচিত তাকে সেখানে পাঠিয়ে দিন, দেখবেন তাদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে বা তাদের ভুল আচরণকে সহজভাবে নিতে কষ্ট হচ্ছে না।

কেউ আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করলে আপনি কিছু হারাচ্ছেন না, সে আপনাকে হারাচ্ছে। এটাই তার জন্য যথেষ্ঠ সাজা। আপনার এতে আপসেট হওয়া বা পাল্টা খারাপ ব্যবহার করার দরকার নাই। এতে আপনি যেমন নিজের ব্যক্তিত্ব বজায় রাখতে পারলেন তেমনি যে আজকে ভুল আচরণ করছে তার ভুল বোঝারও অবকাশ দেয়া হয়।

~
ত্রিভুজ আলম
উত্তরা, ঢাকা

যদিও এই যাত্রা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে যাওয়ার সম্ভবনা নাই বললেই চলে, তবুও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কখনো না কখনো অবশ্যই লাগবে। যতদিন এই ঝুঁকির ভেতরে আমরা আছি, ততদিন দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকা ভালো। দুর্যোগ মোকাবিলার ভালো উপায় হচ্ছে সবচাইতে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকা। সুতরাং ধরে নেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লাগবে, আজ না হোক কাল। তারপর কী হবে?

পৃথিবী এখন এমন একটা জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে যে- তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হলে পৃথিবীর বর্তমান সকল টেকনোলজি হারিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা সবচাইতে বেশী। কেউ যুদ্ধ জেতার জন্য পৃথিবী ধ্বংস না করলেও হেরে যাওয়ার মূহুর্তে 'আমিও নাই তুমিও নাই কেমন মজা হবে' টাইপ আনন্দ নেয়ার জন্য এই কাজটা করবে। এটাকে বলে consolation যার ভালো কোন বাংলা প্রতিশব্দ নাই।

তো তারপর কি হবে বলেন তো? জীবিকার তাগিদে পৃথিবীর মানুষকে আবার কৃষিতে ফিরে যেতে হবে। চিকিৎসার জন্য ভেষজে (যদিও এখনি মানুষ ভেষজের পথে রওনা দিয়েছে)।

আমরা যখন স্কুলে পড়তাম তখন বাধ্যতামূলক কৃষিবিজ্ঞান ছিলো। এখন আছে কিনা জানি না, তবে থাকা জরুরী। সাথে আউট বই হিসেবে আরো কিছু কৃষি বিষয়ক বই সবার পড়া উচিত, সম্ভব হলে প্রাকটিক্যালি কিছুদিন কৃষি কাজও করা উচিত। আর প্রতিটা ফ্যামিলিতে কমপক্ষে একজনের ভেষজ নিয়ে পড়াশোনা থাকা উচিত, প্রাকটিক্যাল সহ।

এই ব্যপারটা পারিবারিক ঐতিহ্যে পরিনত করুন। আপনার না হোক, পরবর্তী প্রজন্মের অনেক কাজে আসবে।

আরেকটা ব্যপার, এরকম কোন ব্যপার ঘটে গেলে বাংলাদেশের মত পলিবিধৌত ভূমিগুলো হবে স্বর্ণের খনির মত। সুতরাং দেশ থেকে পলায়নরত বন্ধুগন, দেশে কিছু জায়গা জমি কিনে রাইখেন।

অল্প কিছুদিন আগেও আরবরা না খেয়ে মারা যেত। তখন তারা নিজেরাও জানতো না, তাদের মাটির নিচে কি লুকায়া আছে। যেমন আমরা জানি না, আমাদের জনসংখ্যা কত বড় এ্যসেট। শুধু দরকার এদেরকে একটু শেইপে আনা। উন্নত বিশ্বে যে হারে মানুষ কমতেছে তারচাইতেও ভয়াবহ হারে দক্ষ কর্মী কমতেছে। দুইদিন পর আমাদের দেশের রাস্তার মোড়ে মোড়ে তারা ইমিগ্রেশন সেন্টার খুলে লোকজনের হাত-পা ধরে নিজের দেশে নিয়ে যাবে। এখনি অবশ্য নিচ্ছে। বিভিন্ন ভার্সিটির মেধাবীদের তারা ভালোই হান্ট করতেছে। তবে যারা অদক্ষ, তাদেরকে কেউ নিবে না। দেশেও তারা কিছু করতে পারবে না।

তাই ছোট্টবন্ধুরা, তোমরা ক্যারিয়ারের প্রতি মনোযোগী হও। প্রশ্ন ফাঁস আর গণহারে পাশের আশায় পড়ালেখা বাদ না দিয়া ঠিকঠাকমত লেখাপড়া করো, দক্ষতা বাড়াও। মানুষ রপ্তানী করেই আমরা ভবিষ্যতে এই দেশরে অনেক উপরে নিয়ে যেতে পারবো।

ভালো রেজাল্ট, উচ্চতর ডিগ্রি, ভালো ক্যারিয়ার, টাকা পয়সা... এগুলো কি মানুষের মানসিকতা বদলাতে পারে যদি সে নিজে না চায় বা ফ্যামিলি তাকে সেভাবে শিক্ষা না দেয়? নাহ... অনেক তো দেখলাম!

এটা শুধু বাংলাদেশের সমস্যা না, এটা মনুষ্য জাতির সীমাবদ্ধতা।

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি