অনলাইনে প্রকাশিত চিন্তা-ভাবনা সমগ্র
জনৈক কবি বলেছেন
Are you your best friend's best friend?
বর্তমান সভ্যতায় চালাক-চতুর হওয়াটা পজেটিভ ব্যপার হিসেবে দেখা হলেও এটা আসলে নেগেটিভ ট্রেইট। দিন শেষে চালাক-চতুররা লাভবান হয় না। তাদের সবচাইতে বড় লস হচ্ছে তাদের কোন কাছের মানুষ থাকে না। সত্যিকার বন্ধু থাকে না।
চালাক আর বুদ্ধিমান হওয়ার ভেতরে পার্থক্য আছে।
Be intelligent, not clever!
দুই একটা তাঁর না ছিঁড়া থাকলে মানুষ বোরিং হয়।
বাংলাদেশের অধিকাংশ লেখক পাঠকের সাথে চালাকি করার চেষ্টা করে। তারা ইনিয়ে বিনিয়ে তাদের নিজেদের ধ্যান-ধারণা-মতবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। এই চালাকির কারণে পাঠক তাদের পছন্দ করে না। হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয়তার অন্যতম বড় কারণ ছিলো এইরকম চালাকি চেষ্টা না থাকা। চালাকি কেউই পছন্দ করে না। বিশেষ করে, পাবলিকের নিজস্ব ধ্যান-ধারণার বিরুদ্ধে হলে তো একদমই না।
ওয়েল, কচুরীপানা খাওয়া নিয়া যতই হাসাহাসি করেন না কেন, এটা যদি খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায় তাহলে বেশ ভালো একটা ব্যপার হবে। মন্ত্রীসাহেব এই বিষয়ে কী বলেছেন সেই ভিডিও দেখলাম। উনার ইনটেনশন আমার কাছে বেশ পজেটিভ লাগলো। কচুরীপানার খাদ্যমান নিয়ে কৃষি গবেষনার প্রতিষ্ঠানগুলোতে গবেষণা হওয়া উচিত।
Idiocracy নামে একটা মুভি আছে। ওখানে দেখায় ভবিষ্যতে মানুষ কতটা স্টুপিড হয়ে যেতে পারে। মুভিটা কমেডি ক্যাটাগরির। কিন্তু বাস্তবতা যদি আপনি দেখেন, তাহলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের ওরকম স্টুপিড হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা একেবারে কম না। বিশেষ করে ঢাকাবাসীদের সেই সম্ভবনা অনেক বেশী। ঢাকার বাতাস বিপদসীমার পাঁচগুন বেশী দূষিত। দেশের প্রথম সারির দু'টো ভার্সিটিই প্রচন্ড দূষিত এলাকায় অবস্থিত, যেখানকার বাতাসে হেভী মেটালের পরিমান অনেক বেশী যা তাদের ব্রেইন ড্যামেজ করে দিচ্ছে।
আমাদের লাইফ স্টাইলের কারণেও আমাদের ব্রেইন ড্যামেজ হয়ে দিনে দিনে স্টুপিড হয়ে যাচ্ছি। জীবনযাপন পদ্ধতির কারণে মানুষ যেভাবে ব্রেইন ড্যামেজ করছে তার ভেতরে অন্যতাম আটটা কারণ হচ্ছে-
১) অতিরিক্ত স্ট্রেস
২) পরিবেশ দূষণ
৩) সকালে নাস্তা না করা
৪) ঠিকমত না ঘুমানো (বিশেষ করে রাত জাগা)
৫) অতিরিক্ত খাওয়া
৬) ধূমপান / স্মোকিং
৭) পর্যাপ্ত পানি পান না করা
৮) প্রচুর চিনি ও চিনি জাতীয় খাবার খাওয়া
কয়টা কমন পড়লো আপনার সাথে? ঢাকাবাসী প্রজন্মের ভেতরে প্রথম দুইটা অলমোস্ট সবারই কমন সম্ভবত। আমাদের এক্সট্রিমলি ফালতু এডুকেশন সিস্টেম আর শব্দ ও বায়ূ দূষণের কারণে।
ফেইক আইডি থেকে কেউ আমাকে নক দিলে আমি কথা বলি। আগে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টও একসেপ্ট করতাম, এখন লিস্টে জায়গা নাই বলে করি না। কেন কথা বলি?
ওয়েল, আইডি ফেইক হলেও পেছনের মানুষটা কিন্তু রিয়েল। শুধু রিয়েলই না, সে আপনার প্রতি এতই ইন্টারেস্টেড যে ফেইক আইডি খুলেছে কথা বলার জন্য। তার ভেতরে যদি কোন ছেলে মেয়ে আইডি খুলে নক দেয়, সেটা তো আরো বেশী ইন্টারেস্টিং। মানে, এখানে ঘটনাটা তো আর স্বাভাবিক রইলো না। সাইকোলজি আমার প্রিয় সাবজেক্ট। একটা ছেলে মেয়ে আইডি খুলে নক কেন দিলো, এটা বেশী ইন্টারেস্ট জাগায়।
আগে অলমোস্ট সব ফেইক আইডির সাথেই কথা বলতাম, ইদানিং সময় কম থাকায় বেছে বেছে যাদেরকে পছন্দ হয় তাদের সাথে কথা বলি। পছন্দ হওয়ার ব্যপারটা আইকিউর সাথে রিলেটেড। আইকিউ বুঝার একটা সহজ তরিকা হইলো সেন্স অব হিউমার। এই যেমন ধরেন একটা ফেইক আইডি থেকে বললো-
ফেইক আইডিঃ Hi
ত্রিভুজঃ High
ফেইক আইডিঃ High?
ত্রিভুজঃ Higher
ফেইক আইডিঃ Higher?
ত্রিভুজঃ Highest
ফেইক আইডিঃ hehehehehhe
এরকম আরকি। তবে, এইসব মজা সবাই নিতে পারে না। যেমন, একবার জাহাঙ্গীর নগরের এক মেয়েরে প্রথমে ফেইক ভাবছিলাম, পরে দেখি ফেইক না। তার সাথে এরকম ফান করতে গিয়ে ব্লক খাইছিলাম। ফানটা অবশ্য সিরিয়াস একটা ব্যপারে করছিলাম। দুই/তিনদিন কথা বলার পরপরই সে তার জীবন কাহিনীর সংক্ষিপ্ত বয়ান দিয়া ফেলছিলো। সেই কাহিনী এরকম যে- একটা ছেলেরে সে অনেক পছন্দ করে কিন্তু ছেলেটা তারে পাত্তা দেয় না। আবার যেদিন সে ঐ ছেলেরে প্রপোজ করছিলো তারপর থেকে ঐ ছেলের রেজাল্ট ভালো হওয়া শুরু করছে। রেজাল্ট এই ভালো হওয়াটা তার অবদান বইলা দাবী করছিলো। আমি একটু ফান করছিলাম ব্যপারটা নিয়া, ইনস্ট্যান্ট ব্লক! এইরকম ব্লক খাওয়ার ভেতরেও শিক্ষনীয় অনেক ব্যপার আছে।
তো, গত এক যুগ ধরে অনেক ফেইক আইডির সাথে কথা বলে আমার অনেক ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে। অনেক কিছু অবজার্ভ করলাম। এগুলো সব নোট করা আছে। লেখালেখিতে এইসব কাজে আসবে ভবিষ্যতে। জগতের কোন কিছুই ফেলনা না। ফেইক আইডিরা সামটাইমস রিয়েল আইডি থিকাও বেশী গুরুত্বপূর্ন, লেখকদের জন্য।
দু'টো বড় বিপদ আমাদের দিকে এগিয়ে আসতেছে—
১) আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স আর টোটাল অটোমেশনের ফলে স্বস্তা গার্মেন্টস শ্রমিকদের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে। পশ্চিমারা তখন নিজেরাই গার্মেন্টস সেটাপ করে ফেলবে। চীন এর ভেতরে এই দিকে জোরেশোরে আগাচ্ছে। গার্মেন্টস আমাদের অর্থনীতির অনেক বড় জায়গাজুড়ে আছে। এই জায়গাটা হারালে আমাদের অবস্থা ভেনিজুয়েলার মত হয়ে যাবে।
২) আমাদেরকে মাঝারি উন্নত দেশ ঘোষণা দিয়ে গরীব দেশ হিসেবে যেসব বানিজ্যিক সুবিধা আমরা পেতাম, সেগুলো সব বন্ধ করে দেয়া হবে। আমরা যদি সত্যিই উন্নত হয়ে যেতাম, তাহলে সমস্যা ছিলো না। সমস্যা হলো, আমরা উন্নয়নটা হচ্ছে একটা বাবল। এটা যেকোনদিন বার্স্ট করবে। তারপর পরিস্থিতি কোথায় যাবে, কল্পনা করাও কষ্টকর!
ব্যাংকিং সেক্টর ও অন্যসব সেক্টরের আলাপ বাদই দিলাম। তো, এসব বিপদের মুখে আমাদের প্রস্তুতি কী?
ত্রিভুজ কিচেনে স্বাগতম। এখন আপনাদের দেখাবো একটি সচিত্র বেগুন ভাজির রেসিপি।
বেগুন+হলুদ+মরিচ+লবন+পেঁয়াজ+রসুন+তেল। নো ওয়াটার।
এডুকেশন সিস্টেম কেমন হওয়া উচিত? (২)
তাতিন আসছে হোম ওয়ার্কে হেল্প নিতে। ঝড় দিয়ে বাক্য বানাতে হবে।
: বাবা, ঝড় দিয়ে কী হবে?
: উমম... ঝড়ের সময়... ঝড়ের সময়...
: বৃষ্টিইইইই হয়য়য়য়য়?, তাতিন মহা উৎসাহে বলে উঠলো।
: রাইট! ঝড়ের সময় বৃষ্টি হয়। ওয়াও!
তাতিন বিজয়ের হাসি নিয়ে হোমওয়ার্কে ব্যাক করলো। আমি দেখেছি, কখনো কাউকে কোন কিছুর সমাধান সরাসরি না দিয়ে ক্লু ধরিয়ে দিয়ে একটু সময় দিলেই সে ওটা নিজেই করতে পারে। জাস্ট তার কনফিডেন্ট বাড়িয়ে দিতে হয়। তাকে বিশ্বাস করাতে হয় যে সে পারবে। মোস্ট কেস, মানুষ পারে। স্টুডেন্ট লাইফে আমি কখনো টিউশনি করি নাই। কিন্তু অনেকেরে দুই/চারদিন ফ্রি পড়িয়েছি। যার ব্যপারে তার প্যারেন্ট দাবী করতো যে, সে কিছুই পারে না, অমনোযোগী... আমার কাছে একদিন পড়লেই দেখা যেত সে সব পারতেছে। অথচ, আমি তারে তেমন কিছু শেখাই নাই.. আমি শুধু তার কনফিডেন্ট বাড়িয়ে দিয়েছি এবং তাকে সময় দিয়েছি।
অনলাইনে একসময় অনেকেরে প্রোগ্রামিং শিখিয়েছি। তাদের বেলায়ও একই ব্যপার। আমি দুই লাইন বলে তাদেরকে বাকী দশ লাইন নিজে থেকে বুঝার সময় দিয়েছি, তারা বুঝে গিয়েছে।
আমার জীবনের বেশীরভাগ জিনিষ বই পড়ে শেখা। বিশেষ করে কম্পিউটার রিলেটড সবকিছু। কিন্তু, কোনদিন কোন ভিডিও টিউটোরিয়াল থেকে আমি কিছু শিখতে পারি নাই। আমার দেখা ৯৯% ভিডিও টিউটোরিয়ালে দেখেছি, প্রচুর বক বক করে শিক্ষক। একদম অযথাই কথা বলে। এরকম কিছু থেকে শেখা বিরক্তিকর (জানি না অন্যদের লাগে কিনা, আমার কাছে বিরক্ত লাগে অনেক)। ফলে, ভিডিও টিউটোরিয়ল থেকে এই জীবনে খুব কমই শিখতে পেরেছি (খান একাডেমি আর edX বাদে)।
বাইরে থেকে তথ্য ব্রেনে ঢোকানোর চাইতে ব্রেইন নিজে চিন্তা করে যে শিক্ষা অর্জন করে, সেটা বেশী কার্যকর। এর জন্য প্রথমত লাগে কনফিডেন্ট, তারপর লাগে চিন্তা করার সময়। চিন্তা করা শেখাতে পারলে যেকোন মানুষের পক্ষেই যেকোন কিছু শেখা ও বুঝা সম্ভব বলে আমার মনে হয়। আমাদের দেশের শিক্ষাদান পদ্ধতিতে এই জিনিষটার অভাব আছে।