সায়েন্স-টেক

আপনি যদি আমার কাছে ক্যারিয়ার গাইডলাইন চান, আমি প্রথমেই বলবো অনেক দাম দিয়ে স্মার্টফোন না কিনে কম্পিউটার কিনুন। ফোন কখনোই একটা প্রোডাক্টিভ ডিভাইস না। প্যারন্টিং সিরিজেও এটা বলেছিলাম যে, বাচ্চাদের স্মার্টফোন না কিনে দিয়ে কম্পিউটার/ল্যাপটপ কিনে দিন। প্যান্ডেমিকের সময় আমার কাছে যতজন অনলাইনে ক্লাশের জন্য ডিভাইস সাজেশন চেয়েছে, তাদের সকলকেই কম্পিউটার কিনতে বলেছিলাম। স্যাডলি মাত্র একজন কথা শুনেছে আর বাকীরা এখন এসে বলে ভুল করেছে কথা না শুনে।

তবে এরকম হলে খুব ভালো হতো যদি একটা ডিভাইসই ফোন ও কম্পিউটার হিসেবে কাজ করতো। নয় বছর আগে Ubuntu Edge এরকম একটা ডিভাইসের প্রোটোটাইপ প্রচুর হাইপ তৈরি করেছিলো। ইন্ডিগোগোতে ক্রাউড ফান্ডিং তোলার জন্য তারা একটা ক্যাম্পেইন করেছিলো, সেখানে ২৭৬৩৩ জন প্রায় ১৩ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিলো (আমিসহ)। ওদের টার্গেট ছিলো ৩২ মিলিয়ন ডলার ফান্ড রেইজ করা, সেটা না হওয়াতে কিংবা অন্য কোন কারণে শেষ পর্যন্ত এই ফোন আর বাজারে আসে নাই।

নয় বছর আগে স্মার্টফোনগুলো এতটা পাওয়ারফুল ছিলো না যা একটা কম্পিউটার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এখন কিন্তু আর সেই সমস্যা নেই।

এখনকার ফ্ল্যাগশিপ ফোনগুলো লো-এন্ড ল্যাপটপ থেকে বেশি পাওয়ারফুল। অ্যাপলের ফোনগুলো এভারেজ কম্পিউটারগুলো থেকে বেশী পাওয়ারফুল। ওরা একই ধরনের চিপ ফোন এবং ল্যাপটপে ব্যবহারের ফলে চাইলেই ফোনরে কম্পিউটার হিসেবে ব্যবহারের ইন্টারফেস দিতে পারে। তবে দিবে না সম্ভবত। আফটার অল তাতে অ্যাপলের ম্যাকবুক সিরিজের ব্যবসা কমে যাবে।

প্রচলিত কোম্পানীগুলো তাদের ব্যবসা কমে যাওয়ার ভয় থেকে এধরনের ডিভাইস বাজারে না আনাই স্বাভাবিক। কিন্তু, অন্যরা তো আনতে পারে। সারাদিন বাইরে ব্যবহার করা ফোনটা বাসায় এসে মনিটরে কানেক্ট করতেই কম্পিউটার হয়ে গেল, এরচাইতে ভালো ব্যাপার আর কী হতে পারে?

মাইক্রোসফট আজকে Bing-এ ChatGPT-র বেটার ভার্সন যুক্ত করে রিলিজ দিয়েছে। হুররররে!

অ্যাপ টেস্টিং এর জন্য একটা Android 12/13 সাপোর্টেড ফোন খুঁজতে গিয়ে Ulefone এর খোঁজ পেলাম। ওদের একেকটা ফোন— ভাইরে ভাই! প্রায় দশ হাজার mAh ব্যাটারী, রিভার্স ওয়্যারলেস চার্জিং, FLIR এর থার্মাল ক্যামেরা থেকে শুরু করে তাবৎ সব প্রিমিয়াম টেক দিয়ে এরা ৭০০ ডলারের নিচে কিভাবে ফোন বেচে কে জানে! এই হিসাবে তো আর কোন ফোনের প্রাইস ৩০০ ডলারের উপরে হওয়ার কথা না। এর মানে হচ্ছে অন্য স্মার্টফোন কোম্পানীগুলো দুই থেকে চারগুন প্রফিট করে।

Ulefone এর প্রতিটা মডেলই ভালো লাগছে। ইউনিক ও কাজের। বিশেষ করে ট্রাভেলে মিলিটারি গ্রেড বিল্ড, লং ব্যাটারি লাইফ (৩ দিন থেকে ২১ দিন), রিভার্স চার্জিং, থার্মাল ক্যামেরা আর 2TB স্টোরেজ আমার অনেক কাজে আসবে। কিনবো ভাবছি।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের পক্ষে কোনদিনই রাজনীতি বুঝা সম্ভব হবে না। রাজনীতি বুঝতে হলে মানুশ বুঝা জরুরী। আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স কখনোই মানুশ বুঝতে পারবে না।

হিউম্যান ব্রেইনরে একসময় নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে কানেক্টেড করে কম্পিউটারের অংশ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। মানে আপনার ব্রেইনের প্রসেসিং পাওয়ারটা ব্যবহার করা হবে কম্পিউটিং এর জন্য। সেক্ষেত্রে ব্রেইন ভাড়া দিতে পারবে লোকজন।



আগামী কয়েক বছরের ভেতরে যদি এই টেকনোলজি এভেইলেবল হয়, ঠিক কত পার্সেন্ট লোক নিজের ব্রেইন ভাড়া দিতে রাজী হবে? খুব বেশী না আমার ধারণা। কিন্তু, পৃথিবীরে খুব খারাপ একটা সময়ের ভেতর দিয়ে নিতে পারলে (যখন কোটি কোটি লোক কয়েক বছর জবলেস হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করবে) প্রচুর লোক ব্রেইন ভাড়া দিতে রাজী হবে। পাঁচটা মৌলিক চাহিদার মিনিমাম সংকুলানের বিনিময়েই রাজী হবে।

কিন্তু, মানুশের তো চাহিদা কখনো কনস্ট্যান্ট না। ফলে, এদের জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে স্বর্গ তৈরি করা হবে। তারা সেখানে যা চাইবে সব পাবে।

~ ভি.আর এরা - সিটি অব লাইট

টেক প্রেডিকশন



আগামী বিশ্বকাপ ফুটবল VR (Virtual Reality) দিয়ে দেখা যাবে। তখন আপনার মনে হবে স্টেডিয়ামে বসেই খেলা দেখতেছেন। এখন এই প্রযুক্তি কি অ্যাপন আনবে না মেটা, সেটাই দেখার বিষয়।

প্যারেন্টিং, পার্টনারশীপ ও জীবনের জন্য প্রযুক্তি। এই তিনটা বই আগামী বছর পাবলিশের জন্য মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। বিশেষ করে ৬৪ জেলা ট্রাভেলের সময়টায় এই বই তিনটার পেছনে প্রচুর সময় দেয়ার ইচ্ছা আছে। কিন্তু এক প্রকাশকের ফেসবুক পোস্ট থেকে জানতে পারলাম কিছুদিন আগে যে বই পাবলিশ করতে ৪০ হাজার টাকা খরচ হতো সেটা এখন লাখ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে।

আমার এই তিনটা বইয়ের কোনটাই ৫০০ পৃষ্ঠার নিচে না। এর ভেতরে প্যারেন্টিং বইটার হাজার পৃষ্ঠা ছাড়াতে পারে বলে মনে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তো মনে হয় না ১৫০০ টাকার নিচে মূল্য নির্ধারণ করা যাবে। ১৫০০ টাকা দিয়ে কতজন এই বই কিনতে পারবে?

বইটার কনটেন্ট থিংকার ক্লাউডে থাকবে, কিন্তু কাগজের বই পাবলিশের পর সেটা অনলাইনে এভেইলেবল করবো। যারা হার্ড কপি কিনবে, তারা অনলাইন কপি ফ্রি পাবে। প্রকাশকদের দিকটা মাথায় রেখেই এটা করতে হচ্ছে। এখন এই মূল্যস্ফিতিতে কী করা যায়!

লস ঠেকাতে ফেসবুক ১১ হাজার লোক ছাঁটাই করেছে। তাও যদি শেষ রক্ষা না হয় আর ফেসবুক বন্ধ হয়ে যায়, কী করবে পাবলিক?

যাহোক, ফেসবুকে যারা লেখালেখি করেন তারা নিজেদের পোস্টগুলোর একটা ব্যাকাপ নিয়ে রাখেন। পোস্ট ব্যাকাপ নেয়ার জন্য Setting > Privacy > Your FaceBook Information > Download profile information -এ গেলে ব্যাকাপ করার অপশন পাবেন (স্ক্রিনশট দ্রষ্টব্য)।

সবকিছু একসাথে ব্যাকাপ না নিয়ে প্রথমে শুধু পোস্ট ব্যাকাপ করতে পারেন। কারণ, সাইজ খুব বড় হয়ে যায়। আর যারা অনেক বছর ধরে ফেসবুক ব্যবহার করছেন, তাদের ব্যাকাপ জেনারেট হতে প্রচুর সময় লাগতে পারে। ব্যাকাপ রিকোয়েস্ট দিয়ে অপেক্ষায় থাকেন, নোটিফিকেশন দিয়ে জানাবে কখন ডাউনলোড করতে পারবেন।

ইলন মাস্ক এখন পৃথিবীর সবচাইতে পাওয়ারফুল পলিটিক্যাল টুলের মালিক।

টুইটার!

আজ হতে ২২ বছর আগে যখন আমি কলেজে পড়ি তখন ভারতীয় একটা আইটি ট্রেইনিং ইনস্টিটিউটে সি++, জাভা ও ডাটাবেস ডিজাইন (MS SQL SERVER) শিখে একটা হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বানিয়েছিলাম। ডিস্ট্রিবিউটেড এপ্লিকেশন। সেই এপ্লিকেশন আমি অনেকগুলো হসপিটালের কাছে বিক্রি করেছিলাম।

ঐ ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পদ্ধতি খুবই চমৎকার ও ইফেক্টিভ ছিলো। নো ওয়ান্ডার, ভারতীয়রা আইটিতে আজ এত এগিয়ে! বাংলাদেশে এখনো ঐ মানের সিলেবাস ও শিক্ষা পদ্ধতির কোন ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট দেখি নাই। হয়তো আছে, আমার চোখে পড়ে নাই। বাংলাদেশী যে কয়টা প্রতিষ্ঠান আমার চোখে পড়েছে তাদের কোনটারেই সেই ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটির কাছাকাছিও যেতে দেখি নাই।

সেই ভারতীয় ট্রেইনিং ইনস্টিটিউটগুলো বাংলাদেশ থেকে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আমরা বাংলাদেশীরা কেন ঐ মানের প্রশিক্ষন কেন্দ্র তৈরি করতে পারলাম না? নাকি আছে ওরকম কিছু? জানতে চাই।

জানতে চাই একারণে যে— থিংকার টাউন সেন্টারগুলোতে যারা সদস্য হবে, তাদেরকে ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যেন আমরা ভালো ও কার্যকরী প্রশিক্ষন কেন্দ্রের খোঁজ দিতে পারি।

ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে এধরনের প্রতিষ্ঠান যদি না থাকে, আমরা সাহায্য করবো তৈরি করতে। প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ও কনটেন্ট তৈরির দিক নির্দেশনা দেয়া হবে আমাদের তরফ থেকে।

আমরা চাই এধরনের অনেক প্রতিষ্ঠান তৈরি হোক এদেশে। আগ্রহীরা ইনবক্স কিংবা ইমেইলে (trivuz@জিমেইল) যোগাযোগ করতে পারেন।

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি