আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স সরকারী চাকরিগুলো সবার আগে রিপ্লেস শুরু করবে বলে মনে হচ্ছে।
এক লোক ভাবতেছে সে যদি দুইটা মুরগি কিনে আনে আর প্রতিটা মুরগীি ১০টা করে ডিম দেয় তাহলে তার ২২টা মুরগি হবে। ২২টা মুরগি থেকে ২২০টা মুরগি, ২২০টা থেকে ২২০০ মুরগি। এভাবে একদিন তার এক বিলিন মুরগি হবে এবং দশ বিলিয়ন ডিম বাজারে বিক্রি করে ব্রলোক হয়ে যাবে!
তার মাথায় এটা কখনো আসে না যে ৮ বিলিয়ন পৃথিবীতে ১০ বিলিয়ন ডিম কে খাবে?
প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের সময় মানুশ টেকনোলোজিরে ভয় পাইছিলো কিন্তু বাস্তবে বরং জব বেড়ে গেছে, পুরানা টেক্সবুকে এই ইতিহাসের এনালাইসিস পড়ে তারা ভাবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সময়েও এভাবে জব বাড়তেই থাকবে। ঐদিকে ডিমান্ড যে বাড়ে না, মার্কেট যে স্যাচুরেটেড হয়ে আছে, এসব তারা বিবেচনা করে না কিংবা জানেই না। এক বিলিয়ন মুরগি দশ বিলিয়ন ডিম দিবে, সেই হিসাব নিয়া তারা বসে আছে।
রিসেশন কেন হয়, শুধুমাত্র এই একটা প্রশ্ন নিয়ে যদি তারা ভাবতো, তাহলে নিজেদের বোকামী ধরতে পারতো।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স পলিটিক্যাল ন্যারেটিভেরও বারোটা বাজিয়ে দিবে। প্রপারলি ব্যবহার করতে পারলে শত বছর ধরে দাঁড় করানো ন্যারেটিভ এক বছরের ভেতরেই একদম জিরো করে দেয়া সম্ভব।
প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়া এত আশাবাদী হইয়েন না আপনারা। AI নিজেই এটার মার্কেট খেয়ে দিবে। AutoGPT টাইপ বহু সার্ভিস চলে আসবে।
বাংলাদেশে শুধুমাত্র লেখক হয়ে জীবন চালানো সম্ভব হয় না বা সেই পরিবেশ তৈরি হয়নি এখনো।
মুখস্ত-বিদ্যা আর সার্টিফিকেট নির্ভর জব মার্কেট এর জন্য অনেকটা দায়ী। জানা ও শেখার দরকার মনে করে না অধিকাংশ লোকে। সামনে এই অবস্থার পরিবর্তন হবে যখন সার্টিফিকেট নির্ভর জব মার্কেট কলাপস করবে এবং সেই সাথে প্রচলিত শিক্ষা-ব্যবস্থা।
এছাড়াও বইয়ের নতুন ফরম্যাট লাগবে। নন-ফিকশনের ক্ষেত্রে প্রচলিত বই সামনে অচল হয়ে যাবে।
আমি Book 4.0 নামে একটা নতুন বইয়ের ফরম্যাট দাঁড় করাচ্ছি যেখানে একটা বই লিখেই একজন লেখক/গবেষক পুরো জীবনের জীবিকা অর্জন করতে পারবে। থিংকার ক্লাউড থেকে এই সেবা শুরু হবে। এবছরের ভেতরেই ত্রিভুজ ডট নেট থেকে প্যারেন্টিং টপিকে এর একটা পাইলটিং দেখাতে পারবো আশা করতেছি।
আগামী কয়েক বছরের ভেতরে একটা নতুন ক্যারিয়ার খুব পরিচিত হয়ে উঠবে। পুরোপুরি নতুন না অবশ্য, কিন্তু খুব অল্প লোকই এর সম্পর্কে জানে এবং যে স্কেলে এটা জনপ্রিয় হবে তাতে নতুন কিছুই মনে হবে।
সমস্যা হলো এটা এমন একটা জব যা লাখ লাখ কোটি কোটি লোকের বেকার হওয়ার কারণ হবে। একারণে এটা নিয়ে কথা বলবো কিনা বুঝতে পারছি না। এদিকে আমি বা আমরা কথা না বললেও বহু লোক এই জব করবে। বিশেষ করে ইন্ডিয়ানরা এই মার্কেট খুব দ্রুতই দখল করে ফেলবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশীদের উপকারের জন্য হলেও আলোচনা করা উচিত। যদিও বহু বাংলাদেশীও জব হারাবে এই নতুন ক্যারিয়ারের কারণে।
আমি কনফিউডস!
ভেরী ব্যাড মুভ!
ইচ্ছামত জিনিষপত্রের দাম বাড়ানোর বিষয়ে প্রতিবাদ করতে না শিখলে ২০৩০ নাগাদ সবকিছুর দাম এখনকার দামের চার/পাঁচগুন হয়ে যাবে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের কারণে আমাদের প্রজন্মের ভেতরে জ্ঞানী ও মূর্খের দুরত্ব খুব দ্রুত বাড়বে, এমনটাই আমার আশঙ্কা। ChatGPT-র কথাই ধরেন। যে ঠিকঠাকমত প্রশ্ন করতে পারে তার কাছে এটা একটা ওয়ান্ডার, যারা প্রশ্ন করতে পারে না তাদের কাছে— Meh!
জ্ঞানের সাথে প্রশ্নের সম্পর্ক গভীর। প্রশ্ন করতে পারা গুরুত্বপূর্ণ। এটা এভাবেও বলা যায়— যার জ্ঞান যত গভীর সে তত গভীরে যেতে পারে প্রশ্নের ক্ষেত্রে। যারা প্রশ্ন করতে করতে যত গভীরে যেতে পারবে তারা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করে আরো দ্রুত আরো জ্ঞানী হয়ে উঠবে। যারা পারবে না, তারা আরো দ্রুত পিছিয়ে পড়বে।
আমার আরেকটা অনুমান হচ্ছে— আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের কারণে মানব-সভ্যতা জ্ঞান-বিজ্ঞানে পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে। তথ্য জানার ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের উপর নির্ভরশীল হয়ে গেলে ভবিষ্যত প্রজন্ম প্রশ্ন করা শিখবে না। কারণ, তারা সব রেডিমেড উত্তর পাবে, নিজেরা চিন্তা করা শিখবে না। ফলে, প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে গভীরে যেতে পারবে না। এভাবে ধীরে ধীরে জ্ঞানীদের সংখ্যা কমতে কমতে নাই হয়ে যাওয়া আশঙ্কা আছে।
এধরনের বিপদ থেকে বাঁচার জন্য জ্ঞানীদের সংঘ বা ক্লাব তৈরি জরুরী, যার অন্যতম উদ্দেশ্য হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের এই পরোক্ষ বিপদ থেকে কিছু লোকরে হলেও রক্ষা করা।
ChatGPT-র কারণে ট্রেডিশনাল বই জিনিষটা হারিয়ে যাবে বা যাওয়ার উপক্রম হবে। কিভাবে তা ঘটবে বলি—
প্রথমত, ChatGPT ব্যবহার করে যেকোন বিষয়ে বিশাল বই লিখে ফেলা যায় রাতারাতি। অলরেডি আমাজন এটা নিয়ে বিপদে পড়েছে। এই ফেব্রুয়ারীতে এক সপ্তাহে আমাজনে ২০০+ বই সাবমিটেড হয়েছে যা ChatGPT দিয়ে লেখা। আমেরিকার একটা ম্যাগাজিন লোকজনের কাছ থেকে লেখা নেয়া নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে একই কারণে, ChatGPT দিয়ে লেখা ৫০০+ আর্টিকেল সাবমিট হয়েছে এক সপ্তাহের ভেতরে।
দ্বিতীয়ত, শিক্ষার্থী ও পাঠকরা ChatGPT থেকে এত সহজে তথ্য পাচ্ছে এবং সামনে যখন আপডেটেড তথ্য পাওয়া শুরু করবে (যার একটা নমুনা Bing ইতিমধ্যে তাদের সার্চ ইঞ্জিনে দেখিয়েছে), তখন আপনার লেখা (মোটামুটি ব্যাকডেটেড) বইগুলো কেউ পড়বে না। আগামী বছরের ভেতরে লেখকরা টের পাবে এই বিষয়টা।
তাহলে উপায় কী?
উপায় হচ্ছে বইরে বইয়ের চাইতে বেশী কিছু করা। কয়েক বছর আগে আমি চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের উপযোগী বইয়ের একটা কনসেপ্ট দাঁড় করিয়েছি। আমার প্যারেন্টিং বিষয়ক বইটা এধরনের নতুন প্রজন্মের বইয়ের একটা উদাহরণ হতে যাচ্ছে। এবছরের ভেতরেই পাবলিশ করবো এটা, তারপর বিস্তারিত জানাবো।
তবে, যারা আমার সাথে একইসাথে এধরনের বই পাবলিশ করতে আগ্রহী, তারা একদিন চলে আসেন থিংকারের অফিসে। এবছর আমরা অনেকগুলো বই পাবলিশ করতে পারবো তাহলে।
আমার এই ফ্রেমওয়ার্ক ChatGPT-র সাথে ফাইট করে টিকে থাকার উপযোগী করে তৈরি করা। একইসাথে এটা লেখকদের জন্য একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
পুনশ্চঃ এই বই একইসাথে হার্ডকপি ও সফটকপি হতে পারে। ফলে, হার্ডকপির ক্ষেত্রে আপনার পরিচিত পাবলিশারের সাথেও কাজ করতে পারবেন। তবে, ডিজিটাল কপির কপিরাইট আপনার হাতে রাখতে হবে। যারা থিংকার থেকে ডিজিটাল কপি রিলিজে আগ্রহী, শুধুমাত্র তারা আসবেন।