প্রেডিকশন

যেকোন কাজে AI যে পরিমানে সময় বাঁচিয়ে দিচ্ছে, আমার মনে হচ্ছে এটা অনেকটা ক্যালকুলেটরের মত কাজ করতেছে। ফলে আমরা যোগ-বিয়োগের পেছনে সময় নষ্ট না করে ক্যালকুলাস শেখায় মনোযোগ দিতে পারছি।

যারা AI ব্যবহার করতে পারবেন না, তারা এমনভাবে পিছিয়ে পড়বেন যে ক্যারিয়ার হুমকিতে পড়ে যাবে আপনার।

আগামী কয়েক বছরের ভেতরে পৃথিবীজুড়ে বিদ্যুৎ সংকট শুরু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইলেকট্রিক গাড়ি, AI এবং হিটিং সিস্টেম সমস্ত বিদ্যুত কনজিউম করে ফেলবে। ফলে বিশ্বজুড়ে ব্ল্যাক আউট শুরু হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিচ্ছে।

এই বিপুল পরিমান বিদ্যুতের চাহিদা যদি মেটানো না যায় তাহলে ইউরোপের অধিকাংশ অঞ্চল ও আমেরিকার একটা বড় অংশ বসবাস অনুপোযোগী হয়ে পড়বে। বিশেষ করে জীবাশ্ম জ্বালানী ফুরিয়ে যাওয়ার পর।
প্রচন্ড ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচার জন্য ফিউল হিসেবে কাঠ এখানে বিকল্প হতে পারবে না, জনসংখ্যা আধিক্যের কারণে।

কেবলমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন ও স্টোরেজে ব্রেক-থ্রু এক্ষেত্রে পৃথিবীরে রক্ষা করতে পারে। সেটা না ঘটলে দু’টো ঘটনা ঘটতে পারে।

এক. আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানাগুলো ওখান থেকে আমাদের মত ট্রপিক্যাল কান্ট্রিগুলোতে মুভ করা।

দুই. বিপুল মাইগ্রেশন যা পৃথিবীর সকল রাজনৈতিক হিসাব বদলে দিবে।

ভারতের হম্বি-তম্বি পশ্চিমারা টলারেট করে তাদের বিশাল বাজারের জন্য। আর ভারত সেটারেই উইপনাইজ করে ফেলছে। এর মূল্য শীঘ্রই তারা দিবে।



এটা পৃথিবীর প্রথম VR ইন্টারভিউ যেখানে শত মাইল দূর থেকে দুইজন মেটাভার্সে কথা বলছে। একজন আরেকজনের থ্রিডি এভাটার দেখতে পাচ্ছে যেটা কার্টুন এভাটারের মত না বরং একদম রিয়েল মানুশটাকে দেখাচ্ছে এবং তার সকল এক্সপ্রেশন রিয়েল টাইমে রেন্ডার করছে। এটা যেহেতু ভিডিও না সেহেতু এতে অনেক কম ডাটা কনজিউম হচ্ছে আবার 3D হওয়াতে মনে হবে অন্যজন আপনার পাশেই বসে আছে।

এধরনের প্রযুক্তির প্রভাব অনেক কিছুর উপরে পড়বে। অনলাইন মিটিং, ক্লাশ রুম থেকে শুরু করে অনেক কিছুতে। এমনকি গাড়ি/বিমান ও ট্রান্সপোর্ট মার্কেটেও।

এই ২০২৩ সালে তেলের গাড়ি কেনা বোকামী। এগুলোর কোন রিসেল ভ্যালু থাকবে না আর কয়েক বছরের ভেতরে। কিন্তু ইলেকট্রিক গাড়ি যে কিনবেন, তারও কোন উপায় নাই। ৮৭ হাজার ডলারের একটা ইভি দেখলাম দেড় লাখ ডলারে বিক্রি হচ্ছে ঢাকায়। ইভিতে ইমপোর্টে ট্যাক্স তুলে দেয়া উচিত। ঐদিকে তেসলা তাদের গাড়ির দাম কমাচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কেনার কোন উপায় নাই।

টাউন-সেন্টার নেটওয়ার্কের ৪৫-টা জেলার প্রায় ৬০ জনের তথ্য মতে ইন্টারনেট সবচাইতে বেশী ক্ষতির কারণ হয়েছে লোয়ার মিডল ক্লাশের জন্য। দুই/তিন বছর আগে আমার প্রাথমিক এজাম্পশানও এরকমই ছিলো। বিশেষ করে যেসব ফ্যামিলির কেউ মধ্যপ্রাচ্যে থাকে, সেসব ফ্যামিলির ছেলে/মেয়েরা বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে (আমার সাথে আলাপ হওয়া) সকলের ধারণা।

বিষয়টা যদি আসলেই এরকম হয়ে থাকে, তাহলে এটা প্রেডিক্ট করা খুব সহজ যে একটা বিশাল শ্রেণী আবার গরীব হয়ে যাবে। লোয়ার মিডল ক্লাশের জন্য ইন্টারনেট বেশী ক্ষতিকর হওয়ার পেছনে সম্ভবত প্যারেন্টদের অজ্ঞতা ও উদাসীনতা দায়ী।

৬৪ জেলায় টাউন-সেন্টার চালু হয়ে যাওয়ার পরে এই বিষয়ে আমরা একটা জরিপ চালাবো।



2050 সাল নাগাদ পৃথিবীর কোন দেশের পপুলেশন এজ গ্রুপ কেমন হবে, এখানে সেই ডাটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন দেখা যাচ্ছে। খেয়াল করেন— ইউরোপ, চায়না আর জাপানে কিভাবে বৃদ্ধের সংখ্যা বাড়ছে এবং তরুনদের সংখ্যা কমছে। এই ভূ-খন্ডগুলো আফ্রিকান আর এশিয়ানদের দখলে চলে যাবে। চীনারা যেমন হুট করে বিশাল শক্তি হয়ে উঠছে তেমনি হুট করেই হারিয়ে যাবে।

এডুকেশন সিস্টেম কেমন হওয়া উচিত - ৭

আমি যা দেখতে পাচ্ছি তা যদি আপনাদের দেখাতে পারতাম, অধিকাংশের ঘুম হারাম হয়ে যেত। ভবিষ্যতে এডুকেশন সিস্টেম কেমন হওয়া উচিত এই বিষয়ে ChatGPT-4 এর সাথে কথা বলছিলাম। আমি গত ১২ বছর ধরে গবেষণা করে যা যা আউটলাইন করেছি, GPT-4 দেখলাম একই কথা বলছে।

জব মার্কেটের যে কী রেডিক্যাল পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে, খুব কম লোকই তা কল্পনা করতে পারতেছে। জব মার্কেট চেঞ্জ মানে এডুকেশন সিস্টেম চেঞ্জ। সেই চেঞ্জ অনেক দ্রুত ও ব্যাপক হতে যাচ্ছে। এর সাথে তাল মিলিয়ে আগানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া দরকার! সময় খুব কম আমাদের হাতে।

জব মার্কেটের চাইতে পলিটিক্যাল সিস্টেমের উপরে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স এর প্রভাব নিয়া পশ্চিমারা বেশী চিন্তিত। এআই-রে তারা এখন পলিটিক্যাল কারেক্টনেস শেখানোর উপায় খুঁজতেছে। মনে হয় না তাতে কোন লাভ হবে।

কেন হবে না তার একটা কারণ বলি। জেনারেটিভ এআই ব্যবহার করে অল্প সময়ের ভেতরেই প্রথম আলো টাইপ একটা মিডিয়া গ্রুপ তৈরি করে ফেলা সম্ভব। এটা তো শুধু একটা দিক। অন্য আরো বহু দিক আছে। এই পরিবর্তন ঠেকাতে পারবে না কেউ।

--

প্রাসঙ্গিক ভাবনা:
আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স পলিটিক্যাল ন্যারেটিভেরও বারোটা বাজিয়ে দিবে। প্রপারলি ব্যবহার করতে পারলে শত বছর ধরে দাঁড় করানো ন্যারেটিভ এক বছরের ভেতরেই একদম জিরো করে দেয়া সম্ভব।
(৩০ এপ্রিল, ২০২৩)

আর্টিফিশিয়াল ইন্টলিজেন্স নিয়া এত এত আলাপ দেখে যারা ভাবতেছেন সব এত দ্রুত চেঞ্জ হচ্ছে, কী হবে? ওয়েল, মূল চেঞ্জ এখনো শুরু হয়নি। এখনো সবাই ট্রেইন করতে ব্যস্ত। ছয় মাস থেকে এক বছর পর দেখেন কী ঘটে!

পৃথিবীর সমস্ত ব্যবসা বানিজ্যে ব্যবহৃত সফটওয়্যার ও সার্ভিসগুলোর সাথে AI ইন্টিগ্রেশনের কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। দুই/চারটা সার্ভিস আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি যারা কিছু ইন্ড্রাস্ট্রিরে আপসাইড-ডাউন করে দিচ্ছে। এরকম অলমোস্ট সব সেক্টরে প্রভাব দেখতে পাবেন। এরপর যা শুরু হবে সেটাকে একটা দুষ্ট চক্র বলতে পারেন।

এই দুষ্ট চক্রটা অনেকটা এরকম-
১) AI এর কারণে জব হারাচ্ছে যার ফলে ক্রয় ক্ষমতা কমে যাচ্ছে >
২) ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়াতে পণ্যের দাম কমাতে হবে >
৩) পণ্যের দাম কমানোর জন্য আরো বেশী AI ব্যবহার করতে হবে >
৪) আরো বেশী AI ব্যবহার করাতে আরো জব হারাবে > (১ এ ফিরে যান)

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি