পরিকল্পনা

৬৪ জেলায় ক্যাম্পেইনে বের হলে একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলবো শুধুমাত্র বাংলাদেশের ৬৪ জেলার উপরে ভিডিও আপলোডের জন্য।

সবাই অনেক লম্বা ঈদের ছুটি পাচ্ছে দেখে নিজেকেও ছুটি দিয়ে দিছি কালকে। সমস্যাটা শুরু হয়েছে তারপর থেকে। রাত ২টার দিকে ঘুম ভাঙার পর থেকে মাথার ভেতরে আইডিয়া কিলবিলি কিলবিল করতেছে। এত বেশী আইডিয়া ফোকাস নষ্ট করে আসলে। কিন্তু, একটা আইডিয়া আমার মূল ফোকাসের সাথে রিলেটেড হওয়াতে ওটা নিয়ে বেশী ভাবতেছি। আইডিয়াটার প্রেক্ষাপট ও কিছুটা সামারি দেই।

ভার্সিটিয়ান-থিংকার নেটওয়ার্ক মূলত শিক্ষিতদের নিয়ে কাজ করবে। কিন্তু, দেশে শিক্ষিতদের বাইরেও তো বিশাল একটা জনগোষ্ঠী আছে। তাদের জন্য কী করা যায় এটা নিয়ে অনেকদিন ধরেই ভাবতেছিলাম। এই ভাবনার ধারাবাহিকতাতেই মনে হলো, ভার্সিটিয়ান-থিংকার নেটওয়ার্কের ব্যবহারকারীদের ক্রয় ক্ষমতা তো ভালো। ফলে, এখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীরে তো সহজেই যোগ করা যায়। কিভাবে যোগ করা যায়, এটা নিয়েই ভাবতেছি কাল রাত থেকে। অনেক অনেক আইডিয়া মাথায় আসতেছে। মনে হচ্ছে ৯ দিনের লম্বা ছুটি শেষ হওয়ার আগেই দারুণ কিছু দাঁড়িয়ে যাবে।

থিংকারের বুক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমটা দাঁড় করানো ও থিংকার কিডস/স্কুল নেটওয়ার্কের মার্কেটিং এর জন্য ৬৪ জেলায় ট্যুর ও ওয়ার্কশপ করার প্ল্যান আছে। তখন সাথে প্রান্তিক জনগনের জন্যও কোন ইভেন্ট তো চাইলেই রাখা যায়। এই যেমন কৃষকদের নিয়ে, ছোট ব্যবসায়ীদের নিয়ে, খেটে খাওয়া লোকদের নিয়ে বসা সম্ভব এই ট্যুরগুলোতেই।

ভাবতেছি!



আমি যা নিয়ে কাজ করছি, তার সামারি আছে এই ছবিতে। দশ বছর ধরে এই পুরো ব্যাপারটা নিয়ে গবেষণা ও ডেভেলেপমেন্ট চালিয়ে যাচ্ছি যা এখন ইমপ্লিমেন্টেশন ফেজে আছে। এটা শুধুমাত্র বাংলাদেশ ভিত্তিক উদ্যোগ না, পুরো পৃথিবীজুড়ে চলবে এর কার্যক্রম। এই প্লাটফর্ম থেকে একদিন বিলিয়ন বিলিয়ন লোকের উপকার হবে। লোকজন তাদের ব্যক্তিগত জীবন, একাডেমিক জীবন, ক্যারিয়ার এবং জীবিকা অর্জনে সাহায্য পাবে এই প্লাটফর্ম থেকে।

সেই বিলিয়নের হিসাব বাদ দিয়ে যদি শুধুমাত্র বাংলাদেশের কথাই বিবেচনা করি এবং কমপক্ষে এক কোটি লোক যদি এর থেকে সরাসরি উপকার পায়, তাহলেও আমার জীবন স্বার্থক। আর এই এক কোটি লোকের উপকারে আসতে যদি আরো বিশ বছরও লেগে যায়, তাহলে আজকে থেকেই প্রতিদিন গড়ে ১৩৬৮ জনের বেশী লোকের উপকার হচ্ছে।

মানে, আমি যদি আর বিশ বছর বেঁচে থাকি এবং আমার কাজ থেকে কমপক্ষে এক কোটি লোকেরও উপকার হয় তাহলে এখন থেকে আমার প্রতিদিনের বেঁচে থাকার অর্থ হচ্ছে ১৩৬৮ জন লোকের উপকার হওয়া। নিজের জীবনকে এবং নিজেকে আমি এভাবেই মূল্যায়ণ করি।

এই মানুশগুলোর জন্য কিছু করতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমার সেই ক্ষমতা নেই। যদি আকিজ গ্রুপের মত কোন গ্রুপের মালিক হতাম বা নীতি নির্ধারনী পর্যায়েও থাকতাম তাহলে এদের জন্য ৩০-৫০ টাকার ভেতরে এনার্জি বার/ব্যালেন্স বার টাইপ কোন প্রোডাক্ট বের করতাম। উন্নত বিশ্বে এধরনের প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। এতে একজন মানুশের জন্য প্রয়োজনীয় সকল খাদ্য উপাদান থাকে।

তবে আমার একটা ক্ষমতা আছে। চিন্তা করার ক্ষমতা। বেশ কয়েক বছর ধরেই একটা আইডিয়া নিয়ে ভাবতেছি। এরকম একটা শপ যদি করা যায় যেখান থেকে মিনিমাম কস্টে ব্যালেন্স ডায়েট নিশ্চিত করা যায়। অনেক ঘাঁটাঘাটি করে ও চিন্তা করে এরকম একটা আইডিয়া দাঁড় করিয়ে রেখেছি। আপাতত আইডিয়াটা আমার আইডিয়া বুকে ঘুমাচ্ছে। সময় থাকলে বাস্তবায়ন শুরু করতে পারতাম। সময় নাই। কিংবা যথেষ্ঠ পরিমান টাকা থাকলেও টিম তৈরি করে শুরু করে দেয়া যেত। একদিন সময় কিংবা টাকা হলে অবশ্যই এই প্রজেক্ট শুরু করবো।

পৃথিবীতে সবচাইতে কঠিন কাজ হচ্ছে নন-ফিকশন বই লেখা। একটা ভালো বই লেখার জন্য যে কী পরিমান পড়তে হয় আর চিন্তা করতে হয়, যারা কখনো লেখেন নাই তারা কল্পনাও করতে পারবেন না। একজন ফুলটাইম অন্য প্রফেশনের লোকের পক্ষে হুট করে একটা নন-ফিকশন লেখা প্রায় অসম্ভব (সেটা তার প্রফেশন রিলেটেড না হলে)। যারা লিখছেন, তারা আসলে তাদের সারা জীবনের পড়ালেখা ও চিন্তার উপর ভিত্তি করে লিখেন। ফলে, ভালো বই কিংবা ভালো চিন্তা পেতে হলে একটা সমাজে কিছু এরকম কিছু ডেডিকেটেড মানুশ লাগে। এবং এদের স্বাধীনতা থাকতে হয়।
বাংলাদেশ বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে এত পিছিয়ে আছে কারণ এখানে এধরনের লোকজন নাই তেমন। যে অল্প কয়েকজন আছে, তারা আবার স্বাধীন না। আমার একটা অন্যতম স্বপ্ন হচ্ছে— আমি এরকম কিছু স্বাধীন ইন্টেলেকচ্যুয়াল তৈরিতে অবদান রেখে যাবো।

পুনশ্চঃ ফিকশন লেখকদের কথা বলিনি কারণ, ফিকশন চেষ্টা করলেও লেখা যায় না। এটা গড গিফটেড ট্যালেন্ট।

নতুন যা শিখতে শুরু করি সেটারই প্রেমে পড়ে যাই। মনে হয় সব বাদ দিয়ে এটা নিয়েই থাকি। কী এক মুসিবত! কয়েক হাজার বছর বাঁচলে সম্ভবত পৃথিবীর সবকিছু শিখে ফেলতাম।

অফিসের ইন্টেরিয়র করাবো। তো, ইন্টেরিয়র ডিজাইন নিয়ে একটু ঘাঁটতে গিয়ে মজা পেয়ে গিয়েছি। আলটিমেটলি একজন ডিজাইনারকে দিয়েই করাবো। কিন্তু ব্রান্ডিং এর জন্য পারফেক্ট কালার ঠিক করতে হবে। সাদা-কালো-অরেঞ্জ, এই তিনটা কালারের কম্বিনেশন নিয়ে ভাবতেছি। সাদা-কালো কম্বিনেশনে ফার্নিচার খুব চমৎকার লাগে, কিন্তু কার্পেট/ম্যাট আর পর্দা নীল ভালো লাগে। ওয়েবসাইট, প্রিন্টিং ম্যাটেরিয়ালে কালোর সাথে নীল ভালো যায় না, কমলা ভালো লাগে। সাদা-কালো-কমলারে যদি ব্রান্ডিং এ ব্যবহার করি, তার সাথে অফিস রুমে নীল কার্পেট আর পর্দা যাবে কিনা বুঝতেছি না। কিন্তু এই সেটিংসটা খুব ভালো লাগতেছে। কী করা যায়... কী করা যায়!

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা ও কনটেন্ট নিয়ে কাজ করছি প্রায় এক যুগ হয়ে যাচ্ছে। এতদিন অনেক ধরনের বাঁধা ছিলো, বিশেষ করে টেকনোলজিক্যাল। জাকারবার্গের মেটাভার্স এক্ষেত্রে পৃথিবীকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেল (কমেন্টে একটা ভিডিও দিয়েছি, দেখতে পারেন)।

চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য VR (Virtual Reality) একটা গুরুত্বপূর্ন উপাদান। শিক্ষাক্ষেত্রে VR এর ব্যবহার বৈপ্লবিক একটা ব্যাপার হবে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ঢুকে যখন আপনি একাডেমিক কনটেন্টগুলো ভিজ্যুয়ালাইজ করবেন, সেটার ব্যান্ডউইথ অনেক উচ্চ, যা দ্রুত শেখার ব্যাপারে হেল্প করবে। এই ব্যান্ডউইথ বলতে তথ্য গ্রহণ করার গতি বুঝিয়েছি (ইলনমাস্কও এই টার্মটা ব্যবহার করে দেখবেন)। আমরা যখন পড়ি তখন বই/লেখা থেকে খুবই ধীরগতিতে তথ্য নিতে পারি। ভিজ্যুয়ালাইজেশন এই গতি বাড়িয়ে দেয়। এজন্য যাদের কল্পনা শক্তি যত ভালো সে তত দ্রুত শিখতে পারে। VR এই জায়গাটাতে সবাইকে সাহায্য করবে। সকলেই খুব দ্রুত তথ্য গ্রহণ করতে পারবে, সহজে বুঝতে পারবে।

এডুকেশনাল VR কনটেন্টের একটা বিশাল মার্কেট আছে। একাডেমিক কনটেন্টের পরিমান এত বেশী যে, কয়েক মিলিয়ন 3D কনটেন্ট ডেভেলপার মিলে কাজ করলেও শত বছরে শেষ হবে না। তাছাড়া, নতুন নতুন কনটেন্টের চাহিদা তো আসবেই। তাই, যত বেশী ডেভেলপার হবে তত ভালো। আমাদের এখন মিলিয়ন মিলিয়ন কনটেন্ট ডেভেলপার লাগবে, কোটি কোটি কনটেন্ট রিসার্চার ও শিক্ষক লাগবে।

আমাদের একাডেমিক প্রজেক্ট ভার্সিটিয়ানের জন্য এধরনের প্রচুর কনটেন্ট বানাতে হবে। গবেষণা ও আইডিয়া নিয়ে বসে আছি, 3D কনটেন্ট ডেভেলপার দরকার এখন।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী একটা এডুকেশন সিস্টেম তৈরি ও দাঁড় করানো হচ্ছে আমার জীবনের লক্ষ্য। লেভেল বেসড এডুকেশন সিস্টেম এর একটা ধাপ (বিস্তারিত লিংক কমেন্টে)। এর সাথে স্কিল ডেভেলপমেন্ট এর একটা পদ্ধতি যোগ করার উপায় নিয়ে কাজ করছি। সেই সাথে ইফেক্টিভ এডুকেশন কনটেন্ট নিয়েও কিছু কাজ এগিয়েছে। ফিউচার জব মার্কেট কেমন হবে, সেখানে কী কী স্কিল দরকার হবে, এসবও আমাদের গবেষণার বিষয়।

বর্তমান একাডেমিক সিস্টেমে শিক্ষার্থীদের অনেক সময় নষ্ট হয়। সময়রে যতটা সম্ভব ইফেক্টিভলি ব্যবহার করতে না পারলে আপনি টিকতে পারবেন না সামনে। অটোমেশন যত বাড়বে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের ব্যবহার যত বাড়বে আপনার জন্য তত কঠিন হয়ে যাবে সবকিছু। ২০৩০ সাল রে একটা ডেডলাইন হিসেবে দেখতেছে সব বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু, কোভিড-১৯ এসে এই ডেডলাইন আরো এগিয়ে নিয়ে আসছে। রিমোট জব নিয়ে এত হৈচৈ অন্তত ২০২১ এ হওয়ার কথা ছিলো না। খারাপ দিন খুব দ্রুত এগিয়ে আসতেছে রে ভাই। তাই, আপনারা এখনি সচেতন হওয়া শুরু করেন। আপনার বাচ্চারে, ভাই-বোনরে সতর্ক করেন। তারা যেন এই সার্টিফিকেট ভিত্তিক শিক্ষ-ব্যবস্থার উপরে পুরোপুরি নির্ভর না করে।

এসব নিয়া তো প্রায় এক যুগ ধরেই বলতেছি। সাম্প্রতিক সময়ে জব-মার্কেটের অবস্থা, দ্রব্য-মূল্য ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি নিয়ে লোকজনের হতাশা দেখে মনে হলো আবারো রিমাইন্ড করি।

ফেসবুকে একটা ভাইরাল পোস্ট কিছুদিন পর পরই চোখে পড়ে। পোস্টটা এরকম-

Before you get married...
Discuss bills, parenting styles, credit, debt, religion, how to deal with family, what beliefs will be instilled in your children, childhood traumas, sexual expectations, partner expectations, financial expectations, family health history, mental health history, bucket list, dream home, careers and education, political views and whatever else comes to mind.

“Love is not enough.”

এটা খুবই সত্য কথা। এর সাথে আরো কিছু বিষয় আছে।

কিভাবে বুঝবেন পার্টনারশীপ পারফেক্ট হতে পারে এই টাইপ গাইডলাইন দেয়া কঠিন ব্যাপার। একটা সহজ উপায় হচ্ছে অন্যজনের ইন্টারেস্ট ও ট্রেইটের সাথে নিজের ট্রেইটগুলোর মিল বের করা। ম্যাচমেকিং সাইটগুলো এধরনের এলগরিদম ব্যবহার করে। কিন্তু, এটাই যথেষ্ঠ না। যাকে বিয়ে করছেন তার ফ্যামিলিও গুরুত্বপূর্ন। মানে, ম্যাচিং শুধুমাত্র দুইজনের সাথে করলে হয় না, দু'টো ফ্যামিলিও ম্যাচ করতে হয়।

প্যারেন্টিং নিয়ে যে বইটা লিখছি, ওটার প্রথম অধ্যায় হচ্ছে- 'ভালো প্যারেন্টস নিশ্চিত তখনি হবে যখন ম্যারেজটা ভালো হবে।' সেখানে এই বিষয়গুলো কাভার করতে গিয়ে প্রথম অধ্যায়ের সাইজ এত বড় হয়ে যাচ্ছে যে মনে হচ্ছে ম্যারেজ নিয়ে একটা আলাদা বই লেখা দরকার। তো ভাবছি, এটা নিয়ে আলাদা বই লিখবো কিনা।

কুপার্ট সার্ভিসটা ভালো। আমার ৪০০ টাকার মত বাঁচিয়ে দিলো আজকে। লেখালেখির জন্য ফেসবুক ভালো জায়গা না। ব্যক্তিগত সাইট চালু করতেছি আবার, ত্রিভুজ ডট নেট। কামিং সুন...

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি