তথ্য-প্রযুক্তিরে পেশা হিসেবে নেয়ার পেছনে আমার ভেতরে দু'টো ব্যপার কাজ করেছে। এক- এখানে দূর্নীতি করা লাগবে না এবং দুই- কম্পিউটার জিনিষটা আমার সেই স্কুল লাইফ থেকেই ভালো লাগে। কিন্তু তথ্য-প্রযুক্তির খুব খারাপ একটা দিকও আছে। একসময় এই তথ্য প্রযুক্তির কারণে কোটি কোটি মানুষ বেকার হয়ে যাবে। এই ব্যপারটা বোঝার পর থেকে একটা খারাপ লাগা কাজ করতে শুরু করে নিজের ভেতরে। এই খারাপ লাগা থেকে ২০১২ সালে একটা RnD স্টার্টাপ শুরু করি। উদ্দেশ্য ছিলো এমন একটা প্লাটফর্ম বানানো যেটা কোটি কোটি মানুষের জীবিকার ব্যবস্থা করবে। অন্তত কেউ যাতে না খেয়ে না মারা যায়, এটা নিশ্চিত করা। এটা মূলত একটা ইন্ট্রিগ্রেশন প্লাটফর্ম। একদম স্কুলের একজন স্টুডেন্ট থেকে যেকোন বয়সের যেকোন ব্যক্তি যাতে এর সুফল ভোগ করতে পারে, সেটা মাথায় রেখে পুরো গবেষণা ও ডেভেলপমেন্টটা চলেছে। এমনকি, প্রচলিত কোন কোম্পানী বা প্রোডাক্ট যাতে মার না খেয়ে যায়, কারো বাজার যাতে নষ্ট না হয়, সেটাও এখানে যতদূর সম্ভব দেখা হয়েছে। কারো রুজি নষ্ট করা নয় বরং সকলের জন্য বাজার তৈরি করা ও মাস পিপলকে যুক্ত করা হচ্ছে এর মূল উদ্দেশ্য। ২০১২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত পাঁচ বছরে এই RnD একটা ম্যাচিউর স্টেজে পৌঁছেছে। ২০১৭ থেকে এর বাস্তবায়ন ও মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। পুরো ব্যপারটার ৮০ ভাগও যদি সফলভাবে ইমপ্লিমেন্ট করে যেতে পারি তাহলে কয়েক বিলিয়ন মানুষের রুটি রুজির ব্যবস্থা করে যেতে পারবো আশা করি।
এই প্রকল্পের একটা অংশ হচ্ছে টিকে থাকার জন্য মানুষকে যোগ্য করে তোলার একটা একাডেমিক প্লাটফর্ম। টিউটোরিয়াল বা কোচিং সেন্টার টাইপ কিছু না। গাইডলাইন ও ইস্পায়ার করা টাইপ ব্যপার নিয়ে কাজ হবে ওখানে। এক্ষেত্রে নিজের অভিজ্ঞতা ও রিয়েলাইজেশন আমাকে ব্যপকভাবে অনুপ্রানিত করেছে। আমি ক্যারিয়ার শুরু করেছি একদম কলেজ লাইফ থেকে। কিন্তু এত আগে থেকে ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতন থাকার পরেও এমন অনেক ভুল করেছি যেগুলো না করলে অনেক ভালো হতো। আসলে গাইডলাইনে অভাব ছিলো। মেন্টর ছিলো না। তরুনদের ঠিকভাবে গাইড করা গেলে সোনা ফলানো সম্ভব। বিশেষ করে আমাদের দেশের তরুনদের ব্যাপারে আমার আস্থা আছে। তারা মেধাবী, সুযোগ আর গাইডলাইনের অভাবে সময় নষ্ট করছে। গাইডলাইনের অভাবে অনেক তরুনই ভার্সিটির শেষ বর্ষে যাওয়ার আগে ক্যারিয়ার নিয়ে ওভাবে সচেতন হয় না, কাজ শুরু করে না। অথচ ক্যারিয়ার নিয়ে স্কুল থেকে ভাবা উচিত, কাজ শুরু করা উচিত কলেজ জীবন থেকে। ১৮ বছর হওয়ার পর প্রতিটা মানুষেরই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা জরুরী। এই প্লাটফর্মের একাডেমিক দিকটা সেই ব্যপারগুলো নিয়ে কাজ করবে।
আল্লাহ যদি আর দশ বছরও আমাকে বাঁচিয়ে রাখে, তাহলে এই জিনিষ আমি শতভাগ ইমপ্লিমেন্ট করে যাবো ইনশা'আল্লাহ।
আমি যদি কোনদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হই, তাহলে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার মত করে দু'টো জিনিষ ইমপ্লিমেন্ট করবো। অনেক টাকা থাকলেও সম্ভব হতো।
১) প্যারেন্টিং কোর্স
২) ফুডস এন্ড নিউট্রেশন কোর্স
প্যারেন্টিং নিয়া কিছু লেখালেখি করবো ভাবছি। আমাদের দেশের মানুষ প্যারেন্টিং জানে না।
#প্যারেন্টিং
Sarahah-তে একজন আমার ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। ক্যারিয়ার নিয়া আমি অত ভাবি না। আমি ভাবি আমার গোলগুলো নিয়ে। অনেক বড় বড় জায়গা থেকে বের হয়ে এসেছি শুধুমাত্র নিজের গোল/লক্ষ্য ধরে কাজ করার জন্য। অনেক জায়গায় অনেক ভালো ভালো অফার গ্রহণ না করে নিজের করে নিজের প্রতিষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছি, গোলগুলো বাস্তবায়নের জন্য। আমার জীবনে এধরনের বড় গোল তিনটা।
১) মানুষকে অনুপ্রানিত করার জন্য একটা প্রজেক্ট। এটা একই সাথে ব্যক্তিগত জীবন ব্যবস্থাপনা সিস্টেম ও বিজনেস প্লাটফর্ম। গত পাঁচ বছরে এটার RnD শেষ করেছি। এখন বাস্তবায়ন (implementation) ফেজে আছে।
২) এডুকেশন নিয়ে কাজ করা। এটা নিয়েও গত পাঁচ বছর রিসার্চ করেছি। এখন বাস্তবায়ন (implementation) ফেজে আছে।
৩) একটা চমৎকার সোসাইটি তৈরি করে যাওয়া। এটা নিয়ে বলতে গেলে সারাজীবন ধরে গবেষণা করছি। ৪০ এর পর কাজ থেকে অবসরে যাওয়ার পর এটা বাস্তবায়ন শুরু করবো (যদি বেঁচে থাকি)। এই প্রজেক্টটার নাম Green Blood. বছর তিনেক আগে এটার জন্য একটা ফেসবুক গ্রুপও তৈরি করেছিলাম, কিন্তু যেহেতু এখন সময় দিতে পারবো না তাই ঘোষণা দেইনি। (কমেন্টে গ্রুপের লিংকটা দেয়া হলো)
এই তিনটা প্রজেক্ট শেষ করে যেতে পারলে নিজেকে সফল ভাববো। ক্যারিয়ার বলতে আপনারা যা বোঝেন সেভাবে দেখতে চাইলে আমাকে একজন গবেষক ভাবতে পারেন।
আমার বাচ্চাকে কৃষি কাজ শেখাবো। শুধু শেখাবোই না, সরাসরি কৃষির সাথে পরিচয় করাতে ফসলের মৌসুমে গ্রামের দিকে নিয়ে যাবো। সম্ভব হলে দুই/এক মাস থেকেও আসবো। ভবিষ্যত পৃথিবীতে শুধু তারাই টিকে থাকবে যারা কৃষিকাজ জানে। কারণটা আগের স্ট্যাটাসে বলেছি।