কনসিডার করা, ওভারলুক করা, ক্ষমা করা ও কম্প্রোমাইজ করার ক্ষমতা যেমন ভালো লিডার হওয়ার জন্য লাগে তেমনি ভালো ফ্যামিলি গাই হওয়ার জন্যও লাগে।
চালাকি করার চেষ্টা করে মূলত বোকা মানুশেরা। তারা ভাবে চালাকি করে তারা খুব জিতসে। আসলে ঠকে। কোন কোন দিক থেকে ঠকে সেটা বুঝার মত বুদ্ধি তাদের নেই। তাদের সবচাইতে বড় নির্বুদ্ধিতা হচ্ছে- তারা ভাবে অন্যরা তাদের চালাকি ধরতে পারে নাই।
সহজ জীবন - ১৯
ভালো থাকা সহজ। ভালো থাকার জন্য আপনার লাগবে-
১) ফ্যামিলির সদস্যদের সাথে ভালো সম্পর্ক।
২) ভালো কিছু বন্ধু-বান্ধব।
৩) পুষ্টিকর খাবার।
৪) সুস্থ্য বিনোদন।
৫) জীবিকার জন্য কিছু স্কিল/দক্ষতা।
৬) মানুশের জন্য কিছু করার মানসিকতা।
আর এসব বিষয় নিশ্চিত করার জন্য আপনার লাগবে জ্ঞান। ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ বুঝার ক্ষমতা তৈরি হওয়ার জন্য জ্ঞান লাগে। জ্ঞান ছাড়া বোধ-বুদ্ধির উন্নয়ন ঘটে না। ফ্যামিলি ও আপনার পরিবেশ থেকে যদি এগুলো অর্জন করতে পারেন তাহলে সবচাইতে ভালো। অথবা বাইরে থেকেও নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে এর সন্ধানে থাকতে হবে। জানার আগ্রহ থাকতে হবে। জ্ঞানী কারো শিষ্য হওয়া সবচাইতে সহজ উপায়। তবে, অন্ধভাবে অনুকরণ করবেন না। চিন্তা করা শিখতে হবে। চিন্তা না করলে জ্ঞান অর্জন সম্ভব না।
আপনি যত বেশী জ্ঞানী হবেন, অন্যের সাথে মিলেমিশে থাকার ক্ষমতা ততই বৃদ্ধি পাবে। কিভাবে ভালো বন্ধু বানানো যায়, কিভাবে মানুশের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হয়, এসব জানা থাকা লাগে। হিউম্যান ট্রেইটগুলো নিয়ে স্টাডি করতে পারেন নিজের ভেতরে থাকা খারাপ ট্রেইটগুলো সনাক্ত করে দূর করার জন্য। সম্পর্ক ও বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে সমাজে প্রচলিত ধ্যান-ধারণাগুলোর উপরে খুব বেশী বিশ্বাস রাখবেন না। এই যেমন, আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে যে- 'ভালো মানুশেরা একটু রাগী হয়ে থাকে'। এইসব ফালতু ধারণা থেকে নিজেকে বের করে আনতে হবে। আপনার চারপাশের ৯৯% মানুশও যদি ভুল জিনিষে বিশ্বাস করে আপনি সেটা না করে যেটা সঠিক মনে হচ্ছে সেই ১% এ থাকুন। তবে, রিজিড হবেন না। আপনার ঐ ১% ভুলও হতে পারে। মূল বিষয় হচ্ছে ভুলের থিওরীতে আটকে না থাকা। তাহলে আপনার কমিউনিকেশন স্কিল বাড়বে, বন্ধু বাড়বে।
পুষ্টিকর খাবার খুব গুরুত্বপূর্ন। আর সেটাও তখনি নিশ্চিত হবে যখন আপনি ব্যালেন্স ডায়েট সম্পর্কে জানতে পারবেন। কখন কী খেতে হবে, কিভাবে খেতে হবে, কখন না খেয়ে থাকতে হবে, এসব জ্ঞান অর্জন করা খুব কঠিন কিছু না। চাইলেই জেনে নিতে পারেন। জানার কোন বিকল্প নাই।
সুস্থ্য বিনোদন অনেক গুরুত্বপূর্ন। কারণ, আপনি যদি মানুশের দুঃখ দেখে আনন্দ পান তাহলে বন্ধুহীন হয়ে যাবেন। কুৎসা রটিয়ে, সমালোচনা করে, অন্যের ক্ষতি করে যদি আপনাকে বিনোদন নিতে হয় তাহলে আপনি একসময় একা হয়ে যাবেন। অন্যকে খোঁচা দিতে, 'উচিৎ কথা' নামক অসুস্থ চর্চা করতে যদি আপনার খুব ভালো লাগে, তাহলে নিশ্চিত থাকেন আপনাকে কেউ পছন্দ করবে না। অন্যের ভালো দেখে যদি আপনার ভেতরে হিংসা হয়, তাহলে আপনি বন্ধুহীন হয়ে যাবেন। মানুশ কিন্তু এই হিংসাটা টের পায়। যার ভালো কিছু শুনে আপনি একবার হিংসা অনুভব করেছেন, সে আপনাকে আর কখনোই বিশ্বাস করবে না।
অসুস্থ বিনোদন আপনাকে সাময়িক আনন্দ দিলেও এরকম সকল অসুস্থ বিনোদন আপনাকে ধীরে ধীরে অসুখী মানুশে পরিনত করবে। তাই, কোনটা সুস্থ্য বিনোদন আর কোনটা অসুস্থ বিনোদন, এই জ্ঞান ও বোধ আপনার থাকা লাগবে।
আপনি যদি নিজের জীবিকা নিজে উপার্জন করতে না পারেন, তাহলে পরনির্ভরশীল হয়ে যাবেন। পরনির্ভরশীল মানুশ কখনোই ভালো থাকতে পারে না। আর জীবিকার জন্য আপনার লাগবে স্কিল/দক্ষতা। এসব দক্ষতা অর্জনের জন্য জ্ঞান। শুধু পরিশ্রম দিয়ে এসব হয় না। খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন, স্বল্প আয়ের লোকজন কত পরিশ্রম করে। তাদের সমস্যা একটাই, জ্ঞানের অভাব। জ্ঞানের কোন বিকল্প নেই এখানে।
মানুশের জন্য কিছু করার যে ভালো, এটা বুঝার একমাত্র উপায় হচ্ছে জ্ঞানী হওয়া। এটা কিভাবে ভালো তা ভাষায় প্রকাশ করে বুঝানো সম্ভব না। আপনি যত জ্ঞানী হতে থাকবেন ততই বিষয়টা পরিষ্কার হতে থাকবে।
সুতরাং দেখতেই পাচ্ছেন, ভালো থাকার জন্য আসলে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন হচ্ছে জ্ঞান। জ্ঞান অর্জন করুন, ভালো থাকুন।
ফেসবুকে একটা ভাইরাল পোস্ট কিছুদিন পর পরই চোখে পড়ে। পোস্টটা এরকম-
Before you get married...
Discuss bills, parenting styles, credit, debt, religion, how to deal with family, what beliefs will be instilled in your children, childhood traumas, sexual expectations, partner expectations, financial expectations, family health history, mental health history, bucket list, dream home, careers and education, political views and whatever else comes to mind.
“Love is not enough.”
এটা খুবই সত্য কথা। এর সাথে আরো কিছু বিষয় আছে।
কিভাবে বুঝবেন পার্টনারশীপ পারফেক্ট হতে পারে এই টাইপ গাইডলাইন দেয়া কঠিন ব্যাপার। একটা সহজ উপায় হচ্ছে অন্যজনের ইন্টারেস্ট ও ট্রেইটের সাথে নিজের ট্রেইটগুলোর মিল বের করা। ম্যাচমেকিং সাইটগুলো এধরনের এলগরিদম ব্যবহার করে। কিন্তু, এটাই যথেষ্ঠ না। যাকে বিয়ে করছেন তার ফ্যামিলিও গুরুত্বপূর্ন। মানে, ম্যাচিং শুধুমাত্র দুইজনের সাথে করলে হয় না, দু'টো ফ্যামিলিও ম্যাচ করতে হয়।
প্যারেন্টিং নিয়ে যে বইটা লিখছি, ওটার প্রথম অধ্যায় হচ্ছে- 'ভালো প্যারেন্টস নিশ্চিত তখনি হবে যখন ম্যারেজটা ভালো হবে।' সেখানে এই বিষয়গুলো কাভার করতে গিয়ে প্রথম অধ্যায়ের সাইজ এত বড় হয়ে যাচ্ছে যে মনে হচ্ছে ম্যারেজ নিয়ে একটা আলাদা বই লেখা দরকার। তো ভাবছি, এটা নিয়ে আলাদা বই লিখবো কিনা।
একজন মানুশের সাথে আপনার সম্পর্ক গড়ে উঠে হয়তো তার বিষয়ে আপনার ধারণার উপর ভিত্তি করে। কিন্তু টিকে থাকে আপনার প্রতি তার ধারণার উপরে।
আপনি যারে ট্রাস্ট করেন না, তার সাথে যেমন আপনার রিলেশনশীপ সম্ভব না, তেমনি যে আপনারে ট্রাস্ট করে না; তার সাথেও সম্ভব না।
প্যারেন্টিং - ৩০
'বাচ্চারা তাদের বাবাকে ঘৃণা করছে', এটা আমাদের দেশে প্রচুর দেখা যাচ্ছে এখন। এর পেছনে মূলত থাকে মায়েদের ক্রমাগত অভিযোগ এবং ক্ষেত্র বিশেষে পলিটিক্স। যেসব বাবাদের তাদের বাচ্চারা ঘৃণা করে, সেসব বাবাদেরও যে কোন দোষ নেই এরকম না। কিন্তু, ঘৃণা সেটার সমাধান না। কারণ, কোনকিছুই একতরফা ঘটে না। ঘটনার পেছনেও ঘটনা থাকে। ক্ষমা একটা গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার যেটা অনেক সমস্যা সমাধান করতে পারে।
দিন শেষে একজন মানুশের কাছে সবচাইতে আপন হচ্ছে তার বাবা-মা। এই পৃথিবীতে মাত্র দুইজন মানুশই সত্যিকার অর্থে নিঃস্বার্থভাবে আপনার জন্য কিছু করবে। আপনার বাবা-মা হচ্ছে সেই দুইজন। তাই, বাচ্চাদের কাছ থেকে এই বাবা-মা-কে কেড়ে নিবেন না। কোনভাবেই না।
সহজ জীবন - ১৩
জগতের বেশীরভাগ মানুষই মনে করে — যখন আমার অনেক টাকা হবে, অনেক ক্ষমতা হবে, অনেক লোক আমার চারপাশে ঘুরঘুর করবে তখন আমি অনেক সুখী হবো। মানসিক শান্তির ব্যপারটা আসলে এরকম না। যখন আপনি বুঝতে পারবেন ঐ লোকগুলো শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থের জন্য আপনার চারপাশি ঘুরছে, তখন সেটা আপনাকে শান্তি দিবে না। আপনার আসলে দরকার নিখাঁদ ভালোবাসা। এরা আপনাকে ভালোবাসে না। এরা আপনার টাকা ও ক্ষমতাকে ভালোবাসে মাত্র।
আপনার যখন কিছুই ছিলো না তখন যে আপনার চারপাশে ঘুরঘুর করতো, সে-ই সত্যিকার অর্থেই আপনাকে ভালোবাসে। আর এই ভালোবাসাই আপনার দরকার।
#প্যারেন্টিং - ১
ভালো প্যারেন্টস নিশ্চিত তখনি হবে যখন ম্যারেজটা ভালো হবে। দুইজনের যেকোন একজন ভালো প্যারেন্ট হয়ে লাভ নাই।