প্যারেন্টিং

প্যারেন্টিং বিষয়ক চিন্তা-ভাবনা ও টিপস

প্যারেন্টিং - ৩৯

টেবিলের উপরে একটা প্যাকেট দেখে তাতিনকে জিজ্ঞেস করলাম, "এটা কী?"

তাতিন জবাব দিলো, "আমি কী জানি..!"

তাতিন খুবই ভদ্র ও সেনসিবল বাচ্চা। এই টোনে এভাবে ওর জবাব দেয়ার কথা না। ওকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বললাম, এভাবে প্রশ্নের জবাব দেয়াটা অভদ্রতা। ও বুঝলো এবং স্যরি বললো।

আমি জানি— যে মাইন্ডসেট থেকে লোকজন এভাবে কথা বলো, ওর মাইন্ডসেট সেরকম না। হয়তো কোথাও কাউকে বলতে দেখেছে এভাবে, ইন্টারেস্টিং লেগেছে ওর কাছে, হুবহু নকল করেছে। কিন্তু, এটা যদি কারেকশন না করে দেই, তাহলে ভাষা থেকেই এই মাইন্ডসেট ভেতরে তৈরি হয়ে যেতে পারে।

হ্যাঁ, ভাষা এতই গুরুত্বপূর্ন। আপনার বাচ্চা কিভাবে কী বলছে, কেমন ভাষা-শব্দ ও টোন ব্যবহার করছে, এসব খেয়াল রাখবেন।

প্যারেন্টিং - ৩৮
আপনার বাচ্চাদের নৈতিকভাবে উন্নত করা প্যারেন্ট হিসেবে আপনার দায়িত্ব। আপনার বাচ্চারা যদি বড় হয়ে অন্যদের ঠকায়, ঘুষখোর হয়, প্যারেন্ট হিসেবে এটা আপনার ব্যর্থতাই।

কিন্তু কিভাবে বাচ্চাদের নৈতিক দিকগুলো নিয়ে কাজ করবেন? এর নানা উপায় আছে। তবে সবচাইতে ইফেক্টিভ সম্ভবত নিজেদের ফ্যামিলির সততার ইতিহাস তুলে ধরা। আমার নিজের জীবন থেকে এর একটা উদাহরণ দেই-
আমাদের পূর্বপুরুষরা ছিলেন মূলত ডাক্তার ও শিক্ষক। কিন্তু একই সাথে তাদের অনেক কৃষি জমিও ছিলো। আমাদের এই কৃষি জমিগুলোর পাশে অন্যদের জমি ছিলো। গ্রামে দু'টো জমির মাঝখানে একটা ডিভাইডার থাকে, যেটাকে বলে 'আইল'। মাঝে মাঝে এমন হতো যে, অন্যের জমির লতা জাতীয় কোন ফসল আইল ক্রস করে আমাদের জমিতে চলে আসতো। আমার দাদারা সেই আইল ধরে হেঁটে গিয়ে অন্যের জমির লতা তুলে তাদের জমির দিকে সরিয়ে দিতেন। কারণ, এই লতা থেকে যদি কোন মরিচ কিংবা কুমড়া আমাদের জমিতে ফলে যায় এবং আমাদের জমির কর্মীরা মনের ভুলে সেই ফসল তুলে নিয়ে আসে, তাহলে অন্যের হক নষ্ট করা হলো।

এধরনের আরো অনেক গল্প আমরা ছোটবেলা শুনেছি। নিজের জীবনে এর প্রতিফলনও দেখি। গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে উঠে পুদিনা পাতা রং চা খেতে ভালো লাগে আমার। মাঝে মাঝে বাসায় পুদিনা পাতা থাকে না। আমাদের ছাদে এক প্রতিবেশীর টবে প্রচুর পুদিনা পাতা। ছাদে গিয়ে ওদের একটা পুদিনা পাতা ছিড়ে নিয়ে আসতে বাঁধে আমার। কখনো ঐ টবগুলো থৈকে একটা পুদিনা পাতাও আনি নাই, আনবোও না।

ধর্ম সবচাইতে ভালো উপায় নৈতিকতা উন্নত করার। আপনার ফ্যামিলি যদি ধর্মীয় দিক থেকে রিচ থাকে, তাহলে সেদিক থেকে তাদেরকে বুঝান অন্যদের হক মেরে খাওয়ার পরিনতি কী হতে পারে।

ইসলামের দৃষ্টিতে, আপনি যদি কারো এক টাকাও মেরে খান, সেটা হবে তার হক নষ্ট করা। অন্যের হক মেরে খেলে ঐ ব্যক্তি ক্ষমা করার পর সৃষ্টিকর্তা ক্ষমা করবে, তার আগে নয়।

নৈতিক দিক থেকে উন্নত করা মানে শুধু এটুকু নয়। গীবত, কষ্ট দেয়া, অপবাদ দেয়াসহ আরো অনেক বিষয় আছে। ওসব নিয়ে ভবিষ্যতে আলাপে হবে।

প্যারেন্টিং - ৩৭ এবং সহজ জীবন - ২১

এক পিচ্চি পপুলার হওয়ার টিপস চাওয়াতে জিজ্ঞেস করলাম—
: তোমার সেল করার মত কিছু আছে?
: নাই।
: তাহলে পপুলার হয়ে কী হবে?
আপনার যদি সেল করার মত কিছু না থাকে তাহলে পপুলারিটি আপনার জন্য লস। কারণ, পপুলারিটির কস্ট আছে। কিছু সেল করে তারচাইতে বেশী রেভিনিউ করতে না পারলে আপনি লসের উপরেই থাকবেন।
পপুলারিটির কস্ট অনেক রকম, এর একটা হচ্ছে সময়। টাকার চাইতে সময়ের ইনভেস্টমেন্ট বেশী গুরুত্বপূর্ন। যার বয়স যত কম তার সময়ের মূল্য তত বেশী কারণ একটা বয়সের পরে আমাদের গ্রোথ রেট কমতে শুরু করে।
আপনার বাচ্চা যদি ইউটিউব/টিকটক করে পপুলার হতে চায়, তাকে এটা বুঝান। সেই সাথে টাকা ও ক্যারিয়ারের পার্থক্যও বুঝান। টাকার চাইতে ক্যারিয়ার/প্রোফাইল গুরুত্বপূর্ন। ক্যারিয়ার/প্রোফাইল ভালো হলে টাকার জন্য কখনো ভাবতে হয় না, ওটা এমনি আসে।

প্যারেন্টিং - ৩৬

সবকিছুর উপরে একজন মানুশের সাথে আরকেজন মানুশের সম্পর্কই যে অনলী ম্যাটার করে, এটা কেউ ছোটবেলা বুঝতে পারলে সে কখনো স্বার্থপর ও হিংসুক হবে না। আপনার বাচ্চাকে এই রিয়েলাইজেশনটা দেয়ার চেষ্টা করবেন। এন্ড অব দ্য ডে মানুশ কতটা একা ও নিঃসঙ্গ, এটা বুঝাতে পারলে সবচাইতে ভালো।

পার্টনারশীপ - ৪

প্যারেন্টিং বইটা লিখতে গিয়ে মূলত পার্টনারশীপ নিয়ে আলাদা একটা বই লেখা দরকার মনে হলো, সেখান থেকে এই পার্টনারশীপ সিরিজের শুরু। তো, প্যারেন্টিং এর সাথে পার্টনারশীপের সম্পর্কটা কতটা গভীর তার একটা উদাহরণ দেই-
মনে করেন আপনার বাচ্চাকে শব্দ করে দরজা বন্ধ করা যে খারাপ, এটা শেখাতে চাচ্ছেন। কিন্তু, আপনার পার্টনারও এই কাজ করে। মানে, শব্দ করে দরজা বন্ধ করে। এখন আপনি যদি বাচ্চাকে শেখাতে যান, পার্টনার ভাববে ইনডাইরেক্টলি তাকে ইনসাল্ট করছেন। ফলে সম্পর্কে নেগেটিভ প্রভাব পড়বে। আবার যদি গোপনে বাচ্চাকে শেখান, সেটা অতটা কার্যকরী হবে না। কারণ, বাচ্চা দেখবে বাসায় অন্যরা শব্দ করে দরজা বন্ধ করছে।

তো, এক্ষেত্রে কী করবেন?

পুনশ্চঃ এটা একটা কালচারাল সমস্যা। পার্টনারের সাথে আলাপ করে আপনি তার এই অভ্যাস দূর করতে পারবেন না। কালচারাল/রুচিগত ও অভ্যাসগত সমস্যাগুলো আলাপ-আলোচনা করে সমাধান হয় না সাধারণত বরং পার্টনার অফেন্ডেড হয়। এই বিষয়টা নিয়ে আরেকদিন আলোচনা করবো।

প্যারেন্টিং - ৩৫

আপনার বাচ্চার পড়ালেখার বিষয়ে স্কুল-কলেজের উপরে শতভাগ নির্ভর করবেন না। বিশেষ করে বাংলাদেশের শিক্ষা-ব্যবস্থা ও স্কুল-কলেজের যে অবস্থা, তাতে কোন ভাবেই আর ভরসা করা যায় না। এর সাথে যোগ হয়েছে চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের পরিবর্তন। যে ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, তাতে বর্তমান পড়ালেখা কতটুকু কাজে লাগবে; বলা কঠিন। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নিজে পড়ানো শুরু করেন, বিভিন্ন ধরনের স্কিল ডেভেলপে সাহায্য করেন বাচ্চাদের। শুধু সার্টিফিকেট দিয়ে এখনি কিছু হয় না, ভবিষ্যতে কী হবে ভাবেন। আমরা স্কিলের যুগে প্রবেশ করছি যেখানে সার্টিফিকেটের ভূমিকা প্রবেশপত্র/টোকেনের মত হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। সার্টিফিকেটে কী লেখা আছে তার উপরে নির্ভর করে কেউ জব দিচ্ছে না। ফলে, শতভাগ ফোকাস এই দিকে নষ্ট করে ফেললে বিপদে পড়তে হবে ভবিষ্যতে।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অবশ্যই নিতে হবে, কিন্তু এটাকেই সব ভাবা যাবে না। আমি বরং বলবো প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনাটাকে অপশনাল হিসেবে নিতে। পাশাপাশি স্কিল ডেভেলপমেন্টে মূল জোর দিতে হবে। এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের যুগে কোন ধরনের স্কিল ডেভেলপ করা উচিত তা বুঝতে চোখ-কান খোলা রাখুন। বিদেশী মিডিয়া ও আপডেটেড বইপত্র পড়া শুরু করেন। আপনার নিজের ক্যারিয়ারেও এটা কাজে দিবে।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিনে সার্ভাইভ করার জন্য আপনার বাচ্চার কী শেখা উচিত, কী জানা উচিত, কোন স্কিল থাকা উচিত, এই গাইডলাইন নিজেই তৈরি করার চেষ্টা করুন।

পুনশ্চঃ আমরা চেষ্টা করছি ভার্সিটয়ান থেকে এরকম একটা গাইডলাইন দাঁড় করাতে। প্যারেন্টিং বইটা লেখা শেষ হতে হতে আশা করি গাইডলাইনটা দাঁড়িয়ে যাবে অনেকটাই। চাইলে আপনিও আমাদের হেল্প করতে পারেন। অনেক লোক মিলে এই বিষয়টা নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করলে খুব দ্রুতই ভালো কিছু দাঁড় করানো সম্ভব।

প্যারেন্টিং - ৩৪

আমি এমন অনেক বাচ্চাদের দেখেছি যাদের চোখের ভেতরে ভয়। প্যারেন্টসদের অতি শাসনে এদের ভেতরে একটা পার্মানেন্ট ভয় ঢুকে গিয়েছে। এটা যে কতটা ক্ষতিকর যদি ঐ প্যারেন্টসরা জানতো তাহলে নিজেদের বাচ্চাদের এই ভয়ের পরিবেশ থেকে বের করে আনতো।

কেন বাচ্চাদের বকাঝকা ও ভয়ের ভেতরে রাখা খারাপ? কী হয় আসলে?

করটিসল (Cortisol) নামে একটা হরমোন আছে যেটা রিলিজ হয় যখন আমরা স্ট্রেসে থাকি। এই হরমোন আমাদের মুড, মোটিভেশন ও স্ট্রেস কন্ট্রোল করে। এটা হচ্ছে আমাদের শরীরের ন্যাচারাল এলার্ট সিস্টেম। যখন আপনি বাচ্চাকে খামোখাই বকাঝকা করতে থাকেন, তাকে ভয়ে ভয়ে রাখেন তখন তার শরীরে এই হরমোনের ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে যায়। সে সবসময়ই একটা ভয়ের ভেতরে থাকে, কখন আর কী ভুল করে ফেলে, কখন আপনার বকা খায়।

তো, আপনার ভয়ে ভয়ে থাকা বাচ্চাটার শরীরে করটিসলের ব্যালেন্স নষ্ট হলে কী হয়? এটা তার শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ন ফাংশানরে শাট-ডাউন করে দেয়। দেশে জরুরী অবস্থা জারি হলে যেরকম হয় আরকি। এই শাটডাউনের তালিকায় আছে হজম প্রক্রিয়া, রিপ্রোডাক্টিভ সিস্টেম, ইমিউন সিস্টেম বা রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা, গ্রোথ প্রসেস বা তার বেড়ে ওঠা (কথ্য ভাষায় লম্বা-চওড়া হওয়া) থেকে শুরু করে যাবতীয় গুরুত্বপূর্ন সব বন্ধ থাকে বা বাঁধাগ্রস্থ হয়।

এই বাচ্চাগুলোর ইমিউন সিস্টেম খুব দুর্বল হয় ফলে একটা বয়স পরে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়। এদের ব্রেইন ঠিকমত ডেভেলপ হয় না ফলে জীবনে খুব বেশী উন্নতি করতে পারে না। এদের সাহস কমে যায়, ক্রিয়েটিভিটি ধ্বংস হয়ে যায়, ক্রিমিনাল মাইন্ডসেট গ্রো করে ক্ষেত্রবিশেষে।

ভাবেন তাহলে সেই বাচ্চাটার কথা, যে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকে। যারে আপনি বকাঝকার ও মাইরের উপরে রাখছেন। এমনকি আপনি তারে বকাঝকা না করলেও বাসায় যে ঝগড়া-ঝাটি করেন, চিৎকার চেঁচামেচি করেন, সেটাও তার ভেতরে এধরনের ভয় তৈরি করে। এসব করে আপনি নিজের বাচ্চাদের আক্ষরিক অর্থেই আপনি ধ্বংস করে দিচ্ছেন।

প্যারেন্টিং - ৩৩

ভুল প্যারেন্টিং আপনার বাচ্চার ভেতরে প্রতিশোধস্পৃহা তৈরি করে। এই প্রতিশোধস্পৃহা খুব সুদূরপ্রসারী খারাপ প্রভাব বিস্তার করে আপনার বাচ্চার জীবনে। শাসনের নামে বাড়াবাড়ি করার ফলে এটা ঘটে থাকে।

আপনি প্যারেন্টস বলেই নিজের বাচ্চার সাথে যা খুশি তাই ব্যবহার করার শক্তি হয়তো আপনার আছে, কিন্তু এটা মাথায় রাখুন সেও একজন মানুশ। আপনার বাড়াবাড়ি ও অন্যায়ের সরাসরি প্রতিবাদের শক্তি বা সাহস তার ভেতরে হয়তো নেই, কিন্তু মনে মনে সে কিন্তু প্রতিবাদ করে যাচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে একটা সময় পর অনেক বাচ্চা গোপনে প্রতিশোধ নিতে শুরু করে। যেহেতু ছোট মানুশ, জগৎ সংসার সম্পর্কে জানে না তেমন কিছু, তাই তাদের প্রতিশোধগুলো আসলে তাদের নিজেদের জন্যই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আমি অনেক মাদকাসক্তের কথা জানি যারা বাবা-মায়ের উপরে 'প্রতিশোধ' নেয়ার জন্য গোপনে মাদক নিতে শুরু করেছিলো। আমি এরকম অনেক মেয়ের কথা জানি যারা গোপনে উলটা-পালটা কাজ করেছে শুধুমাত্র বাবা-মায়ের উপরে প্রতিশোধ নিতে। একটা সময় পরে এরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারে, কিন্তু ততদিনে ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে। আর তাদের এই ক্ষতির দায় কিন্তু প্যারেন্টস হিসেবে আপনার।

এই প্রতিশোধস্পৃহা শুধু তার নিজেরই না, অন্যদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সে তার লাইফ পার্টনারের উপরে প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করে যেটা তার ব্যক্তিগত জীবনে অসুখী হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিশোধ নিতে গিয়ে সে তার বাচ্চাদের কাছে পার্টনারের নামে বানিয়ে বানিয়ে উলটা-পালটা বলে বাচ্চাদের মনোজাগতিক ক্ষতি করে (এই বিষয়ে প্যারেন্টিং - ৩০ পর্বে সংক্ষেপে কিছু আলাপ আছে, লিংক দিলাম কমেন্টে), যা বাচ্চাটার ভবিষ্যত জীবনে মারাত্বক নেগেটিভ প্রভাব ফেলে।

আপনার উপরে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে এদের সবচাইতে বড় যে ক্ষতিটা হয় সেটা হচ্ছে প্রতিশোধস্পৃহায় আসক্ত হওয়া। এটা মাদকাসক্তির চাইতেও খারাপ আসক্তি। এর থেকে সে কখনোই বের হতে পারে না। এমনকি, প্রতিশোধস্পৃহা যে খারাপ, এটা বুঝতে পারলেও এর থেকে বের হতে পারে না। ব্যাপারটা মাদকাসক্তির মত ফাংশান করে ব্রেইনে। মাদকাসক্তরা যেমন ঘুরেফিরে আবার সেই মাদকের কাছেই ফিরে যায়, এরাও এদের প্রতিশোধ নেয়ার পৈশাচিক আনন্দের কাছে ফিরে যায়। এবং এই ভাইরাস তারা অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এভাবে একটা অসুস্থ সমাজ তৈরিতে ভূমিকা রাখে।

আপনার ভুল প্যারেন্টিং শুধুমাত্র আপনার বাচ্চার জীবনই নষ্ট করছে না, একটা সমাজ ধ্বংসেরও কারণ হচ্ছে।

প্যারেন্টিং - ৩২

কিভাবে যেন স্পেস নিয়ে তাতিনের ভেতরে গভীর আগ্রহ তৈরি হয়েছে। সময় পেলেই ইউটিউব কিডসে স্পেস নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করে। তারপর আমাকে এক গাদা পশ্ন করে যেগুলোর অধিকাংশই আমার জানা নাই। ফলে, আমরা দুইজন মিলে সার্চ দেই। তেমনি এক গবেষণাময় সময়ের মাঝে তুলেছি এই ছবিটা।

তো, এই প্রশ্নগুলোর ভেতরে কিছু প্রশ্নের উত্তর ও বুঝতে পারে না। তখন ওকে বলি- এগুলো বুঝতে হলে তোমাকে আরো ম্যাথ জানতে হবে। ফিজিক্স-ক্যামেস্ট্রি জানতে হবে। তখন ওর ম্যাথ করার আগ্রহ আরো বেড়ে যায় এবং কবে ফিজিক্স ক্যামেস্ট্রি পড়াবে স্কুলে সেটা জানতে চায়। এই জানতে চাওয়াটা একদম নিজের ভেতর থেকে আসা। এগুলো সে বাহবা পাওয়ার জন্য করছে না কিংবা স্কুলে ভালো রেজাল্টের জন্যও না। এগুলো ওর ভেতর থেকে আসছে। একটা বাচ্চার ভেতরে এভাবে আগ্রহ তৈরি হওয়ার পর তাকে নিয়ে আপনার আর ভাবতে হবে না।

কিভাবে জাগাবেন এই আগ্রহ?

একটা সহজ উপায় হচ্ছে বাচ্চাদের পছন্দের বিষয়গুলোকে আরো এক্সপ্লোর করার উপায় হিসেবে কী পড়তে হবে তা দেখানো। তখন সে নিজে থেকেই শিখতে শুরু করবে। জ্ঞান পিপাসা জাগানোর এরচাইতে ভালো উপায় নেই।

প্যারেন্টিং - ৩১

যা যা রিয়েলাইজ করছি এই ছোট জীবনে এবং যা যা বলতে চাই, সেগুলো দেখি অন্যরা আগেই বলে ফেলছে। জ্যাক মা এখানে যা বলেছে, এটা নিয়া একটা বয়ান আছে আমার প্যারেন্টিং বইয়ে। ভয়ে ভয়ে ছিলাম, পাবলিক দৌড়ানি দেয় কিনা। যাক, জ্যাক মা বলে দিয়ে ভালো করছে।

I told my son:
you don't need to be in the top three in your class; being in the middle is fine, so long as your grades aren't too bad.

Only this kind of person has enough free time to learn other skills.
- Jack Ma (Founder of Alibaba Group)

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি