বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ
ফিজিক্সের পাশাপাশি ইকোনমিক্সেও ব্যাচেলর আছে ইলনমাস্কের। ছোটবেলা থেকেই জিনিয়াস কম্পিউটার প্রোগ্রামার। বারো বছর বয়সে ভিডিও গেমস খেলতে গিয়ে গেমস পছন্দ না হওয়াতে নিজেই নিজের গেমস বানিয়ে নিয়েছিলেন এবং সেটা ৫০০ ডলারে বিক্রিও করেছেন। আর ছোট বেলা থেকেই পড়ুয়া, এখনো পড়েন।
১৯৯৫ সালে নিজের ছোটভাই কিম্বলসহ মাত্র ২৮ হাজার ডলার ফান্ডিং নিয়ে একটা কোম্পানী তৈরি করেন এবং চার বছরের মাথায় সেই কোম্পানী ৩০৭ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে দেন।
২০০০ সালে এক্সকম নামে একটা ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস তৈরি করেন যেটা প্রথম মাসেই দুই লাখের উপরে গ্রাহক ধরতে সমর্থ হয়। পরে পেপ্যালের সাথে এই কোম্পানী মার্জ হয় এবং দুই বছর পর ১.৫ বিলিয়ন ডলারে eBay কিনে নেয়।
অটোমোবাইল ইন্ড্রাস্ট্রি ও রকেট সায়েন্সে উনার অবদান তো সবাই জানেন মনে হয়। স্পেস এক্সের চীফ ইঞ্জিনিয়ারও ইলন মাস্ক নিজে। এছাড়া আরো কয়েকটা ইন্ড্রাস্ট্রিতেও গ্রাউন্ডব্রেকিং ইনোভেশন আছে উনার (যেমন বোরিং কোম্পানী, স্যাটেলাইট বেসড ইন্টারনেট কোম্পানী স্টারলিংক)।
অর্থনৈতিক দিক থেকে যদি দেখতে চান, পৃথিবীর নাম্বার ওয়ান ধনী যার আড়াই'শ বিলিয়ন ডলারের উপরে সম্পদ।
এরকম একটা লোকরে অর্থনৈতিক পরামর্শ দেয়ার আগে মনে হয় একটু ভাবা উচিত।
ইলন মাস্ক এখন পৃথিবীর সবচাইতে পাওয়ারফুল পলিটিক্যাল টুলের মালিক।
টুইটার!
একটা 74km (45 mile) গতির ঝড়রে সুপার সাইক্লোন/সিডরের চাইতে ভয়ংকর ঝড় বলে প্যানিক সৃষ্টি করা লোকজনের হয়তো মন খারাপ হয়ে যাবে এই নিউজ দেখে।
পাবলিক প্যানিক সৃষ্টি করতে পছন্দ করে। ব্যাড নিউজ স্পেড করা অনেকের কাছেই একটা বিনোদন। খেয়াল করলে দেখবেন— কোথায় কে মারা গেল, কার সর্বনাশ হয়ে গেল, এইসব নিউজ জনে জনে বলে বেড়াতে ভালোবাসে অনেকে। বিশেষ করে কাজের বুয়াদের খুব প্রিয় টপিক এগুলো। হিউম্যান সাইকোলজি নিয়ে হালকা স্টাডি করলেই এর ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।
একাডেমিক স্টাডি বাদ দিলেও এই ব্যাপারটা নিয়া দেশী বিদেশী বহু লেখকের গল্প-উপন্যাসে আলাপ পাবেন। আমাদের হুমায়ূন আহমেদের একটা গল্পে এরকম কাহিনী ছিলো যে— একটা মেয়ে সুইসাইড এটেম্প নেয়ার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। মেয়েটা মারা যায়নি দেখে আত্মীয়-স্বজনদের মন খারাপ হয়ে গেছে… এরকম একটা বর্ণনা।
অনেক ঐতিহাসিক বিষয়েও এর বহু নজীর দেখতে পাবেন। এই যেমন বারোমুডা ট্রায়াঙ্গল। এখনো বহু লোক বিশ্বাস করে বারোমুডা ট্রায়াঙ্গল সত্যিকার জিনিষ। এটা নিয়া আমার একটা লেখা আছে, লিংক কমেন্টে।
যাহোক, এই পাবলিক সাইকোলজি সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরী। কোন বিষয় বিশ্লেষন করা, ইতিহাস স্টাডি থেকে শুরু করে ব্যাক্তিগত জীবনে স্ট্রেস কমানোতেও এই সচেতনতা কাজে লাগে।
খেয়াল করলে দেখবেন, ইদানিং অভাব-অনটন নিয়া মিম হইতেছে প্রচুর। অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কথা তো সরাসরি বলাটা অস্বস্তিকর। মিম এখানে তাদের একটা উইন্ডো।
বিজ্ঞানরে কিছু লোক ধর্মে পরিনত করতেছে এই বঙ্গে।
ভেরী স্যাড!
আজ হতে ২২ বছর আগে যখন আমি কলেজে পড়ি তখন ভারতীয় একটা আইটি ট্রেইনিং ইনস্টিটিউটে সি++, জাভা ও ডাটাবেস ডিজাইন (MS SQL SERVER) শিখে একটা হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বানিয়েছিলাম। ডিস্ট্রিবিউটেড এপ্লিকেশন। সেই এপ্লিকেশন আমি অনেকগুলো হসপিটালের কাছে বিক্রি করেছিলাম।
ঐ ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পদ্ধতি খুবই চমৎকার ও ইফেক্টিভ ছিলো। নো ওয়ান্ডার, ভারতীয়রা আইটিতে আজ এত এগিয়ে! বাংলাদেশে এখনো ঐ মানের সিলেবাস ও শিক্ষা পদ্ধতির কোন ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট দেখি নাই। হয়তো আছে, আমার চোখে পড়ে নাই। বাংলাদেশী যে কয়টা প্রতিষ্ঠান আমার চোখে পড়েছে তাদের কোনটারেই সেই ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটির কাছাকাছিও যেতে দেখি নাই।
সেই ভারতীয় ট্রেইনিং ইনস্টিটিউটগুলো বাংলাদেশ থেকে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আমরা বাংলাদেশীরা কেন ঐ মানের প্রশিক্ষন কেন্দ্র তৈরি করতে পারলাম না? নাকি আছে ওরকম কিছু? জানতে চাই।
জানতে চাই একারণে যে— থিংকার টাউন সেন্টারগুলোতে যারা সদস্য হবে, তাদেরকে ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যেন আমরা ভালো ও কার্যকরী প্রশিক্ষন কেন্দ্রের খোঁজ দিতে পারি।
ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে এধরনের প্রতিষ্ঠান যদি না থাকে, আমরা সাহায্য করবো তৈরি করতে। প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ও কনটেন্ট তৈরির দিক নির্দেশনা দেয়া হবে আমাদের তরফ থেকে।
আমরা চাই এধরনের অনেক প্রতিষ্ঠান তৈরি হোক এদেশে। আগ্রহীরা ইনবক্স কিংবা ইমেইলে (trivuz@জিমেইল) যোগাযোগ করতে পারেন।
যে তিনটা কারণে ফেসবুক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ফেসবুকের মত আরেকটা প্লাটফর্ম না হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশী—
১) ফেসবুকের মত প্লাটফর্ম সরকার ও মিডিয়াগুলোর জন্য সমস্যাজনক। ফলে, তারা সর্বশক্তি দিয়ে এধরনের আরেকটা প্লাটফর্মের উত্থান ঠেকাবে। যেভাবে পাবলিকরে প্রাইভেসী জুজু দেখিয়ে ফেসবুকের রেভিনিউর বারোটা বাজাতে সক্ষম হয়েছে, তাতে বুঝা যায় এরা ভবিষ্যতেও সফল হবে। তবে এটা সরকারগুলোর জন্যও ক্ষতির কারণ হবে। পাবলিক ডিপ ওয়েবে চলে যাবে এবং বিচ্ছিন্ন ভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকবে যা তারা একদমই নিয়ন্ত্রন করতে পারবে না।
২) বিজ্ঞাপণ বেসড রেভিনিউর উপরে ভিত্তি করে কেউ আর মিডিয়া তৈরির চেষ্টা করবে না। অন্তত, এত লার্জ স্কেলে। বিজ্ঞাপণের মার্কেট গুগল আর অ্যাপলের হাতে চলে যাবে পুরোপুরি। আবার ইলন মাস্কও এদিকে হাত দিতে পারে। সেক্ষেত্রে অন্যদের আর কোন চান্স নাই।
৩) পৃথিবী আবার সামন্তীয় যুগের দিকে রওনা দিয়েছে। ডিভাইড এন্ড রুল থিওরীর প্রবল জোয়ার আসতেছে আবার। পাবলিকের ভেতরে বিভক্তি চরমে পৌঁছাবে আগামী কয়েক দশকের ভেতরে।
পর্নোগ্রাফিক এডিকশনের প্রভাব থেকে সমাজরে রক্ষার জন্য পর্নোগ্রাফির প্রভাব নিয়ে কনটেন্ট যোগ করতেছে সুইডেনের স্কুল কারিকুলামে। এভাবে রক্ষা হবে? না মনে হয়! পশ্চিমারা বহু বছর ধরেই এগুলো নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করতেছে, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য। আমাদের বাংলাদেশে অবশ্য এগুলো খুব কুল আর স্মার্ট বিষয় হিসেবে ঢুকতেছে এখনো।
এই বিষয়ে আমার একটা পর্যবেক্ষন শেয়ার করি। ২০৭০ সাল নাগাদ পৃথিবীর অর্ধেকের বেশী লোক মুসলিম হয়ে যাওয়ার পেছনে যে কয়টা বিষয় কাজ করছে তার ভেতরে অন্যতম একটা হচ্ছে নন-মুসলিমদের পপুলেশন গ্রোথ কমে যাওয়া। আবার এই প্রোডাক্টিভিটি কমে যাওয়ার পেছনে একটা বড় ভূমিকা রেখেছে পর্নোগ্রাফি। ফলে, আলটিমেটলি পর্নোগ্রাফিতে আসক্তরা কিন্তু বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এইভাবে পৃথিবী নিজেরে রক্ষা করতেছে বলা যায়। যদিও বিষয়টা দুঃজনক! মানে, এদেরকে রক্ষা করতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু, এগুলো বলতে গেলে তারা আবার অফেন্ডেড হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশে। ব্যাপারটা একটু স্যাডই, তাই না?
ইলিয়াস হোসেনের প্রতিবেদনের কারণে কিছু নিরপরাধ লোকের জীবন বেঁচে যাবে হয়তো। কিন্তু তারচাইতেও বড় উপকার হবে যদি আম জনতা মিডিয়া ট্রায়ালে অংশ নেয়া বন্ধ করে। বহু লোকরেই দেখতেছি নিজের ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হতে। গুড সাইন!
খেয়াল করে দেখেন, স্কুল লাইফের পরে বন্ধু পাওয়া কত কঠিন! বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বার্থ চিন্তা বাড়ার ফলে এটা ঘটে। প্রফিট না দেখলে যে সমাজে বন্ধু বানায় না অধিকাংশ লোক, সেখানে আপনি একা নিঃস্বার্থ হয়েও বন্ধু পাবেন না।