বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ
এই কথাটা আমি অনেকের কাছেই শুনেছি যে, সরকারী কর্মকর্তারা ঘুষ খেতে বাধ্য হয় অনেকটা বউ ও শশুরবাড়ির লোকজনের প্ররোচনায়। রেলমন্ত্রীর বউয়ের ফোনে যে টিটিইর চাকরি গেল, এটাও এধরনেরই একটা ঘটনা।
আবার এরকম পাবলিকও আমি চিনি; যারা টুকটাক দূর্নীতিও করতে পারে না বউয়ের কারণে।
লাইফ পার্টনার বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত হচ্ছে আপনার জীবনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্তগুলোর একটা। কতকিছু যে মাথায় রাখতে হয়!
এবার রোজার মাসে আপনি কী কী শিখলেন? আমি একটা বলি-
ইফতারের আগে মনে হয়
হালুম হালুম হালুম
সবকিছু আজ খালুম!
কিন্তু দেখা যায় অল্প কিছু খেয়েই আপনার ক্ষুদা শেষ। এরপর টেবিল ভর্তি খাবার থাকে কিন্তু আপনাকে কেউ জোর করেও সেটা খাওয়াতে পারবে না। আমাদের প্রয়োজন আর মনের চাহিদার ভেতরে ব্যবধানটা বুঝতে পারি আমরা এটা থেকে।
একজন ব্যক্তির আসলে খুব বেশী কিছু দরকার নেই। ইফতারে আমাদের খাবারের আসল চাহিদাটুকু মিটে যাওয়াতেই আমরা বুঝতে পারি যে, 'নাহ, আর খেতে পারবো না, আর দরকার নেই!' যদি না মিটতো? তাহলে বাকী জীবনই আপনি 'সবকিছু আজ খালুম' মুডে থাকতেন।
অন্য সব বিষয়েও আমাদের তা-ই ঘটে। আমরা পাই না বলে 'সবকিছু আজ খালুম' ভাবতে ভাবতে আফসোস নিয়ে জীবন কাটিয়ে দেই।
লম্বা ছুটি পেয়ে শুধু ঢাকাই ফাঁকা হয়নি, ফেসবুকও অনেকটাই ফাঁকা। লোকজন পরিবারের সবার সাথে আনন্দে আছে।
'কথা বলার মানুশ থাকলে, ভালো সময় কাটানোর উপায় থাকলে কেউ ফেসবুকে সারাক্ষন পড়ে থাকে না', এটা আমার একটা ক্ষুদ্র পর্যবেক্ষণ।
যারা সফট পাওয়ারের গুরুত্ব বুঝে না, তাদের সাথে বুদ্ধিবৃত্তিক আলাপ করে লাভ নাই।
পৃথিবীর বর্তমান অর্ডার ও রাজনীতি পরিবর্তনের ক্ষমতা আছে টুইটারের। ফলে, এই বিশাল শক্তিশালী টুলের একমাত্র মালিক হওয়া মানে ইলন মাস্কের পৃথিবীর সম্রাট হয়ে ওঠা, এক প্রকার।
হঠাৎ করে বাতাসের কোয়ালিটি এতটা খারাপ কেন হচ্ছে? ঢাকা সিটির ভেতরে AQI দেখলাম ৬০০ এর উপরে, উত্তরার দিকে ৪০০ থেকে ৫০০-তে উঠানামা করছে। AQI ৩০০ এর বেশী হওয়া মানেই হ্যাজার্ড সিচ্যুয়েশন, তখন গ্যাস মাস্ক পড়ে থাকতে হয়। আমার এয়ার পিউরিফায়ার ২৪ ঘন্টা টানা কাজ করেও রুমের AQI ৫০ এর নিচে নামাতে পারছে না (AQI ৫০ এর নিচে থাকা হচ্ছে স্বাস্থ্যকর অবস্থা)।
পশ্চিমাদের হিপোক্রেসি এতটা স্পষ্ট এর আগে আর কখনো হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থানে মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার প্রভাব কমে আসার নজীর এটা।
টু মাচ জাজমেন্টাল লোকদের আলটিমেট ডেস্টিনেশন হচ্ছে ডিপ্রেশন। এর পেছনে প্রধান দু'টো কারণ সম্ভবত-
১) এরা অবচেতন মনে নিজেই নিজেরে জাজ করতে থাকে।
২) এদের সাথে সবাই একটা দুরত্ব রেখে চলায় নিঃসঙ্গতায় আক্রান্ত হয়।
এই জাজমেন্টাল পাবলিকদের বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষন হচ্ছে এরা ইন্টেলেক্টের চাইতে ইনটুইশন বেশী ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে এদের ব্রেইন যত ভালো হয় ডিপ্রেশনের পরিমান ততই বেশী হয়।
ইন্টেলেক্ট আর ইনটুইশন এক হয় যখন, তখন কী হতে পারে তার একটা বাস্তব প্রমাণ স্টিভ জবস। স্টিভ জবস নিজে বলে গেছেন, পশ্চিমারা শুধুমাত্র ইন্টেলেক্ট দিয়ে চলে আর দক্ষিন এশিয়ার লোকজন ইনটুইশন দিয়ে। অ্যাপলের প্রোডাক্টগুলো ডিজাইন করার সময় তিনি শুধুমাত্র ইন্টেলেক্টের উপরে ভরসা করেন নাই, ইনটুইশন ব্যবহার করেছেন। মাইক্রোসফট ও গুগলের সাথে অ্যাপলের প্রোডাক্টের পার্থক্যের জায়গাটা তৈরি করেছে এই বিষয়টা।
বাংলাদেশীদের নিয়ে আমি এত আশাবাদী হওয়ার কারণও এটা। গড় বাংলাদেশীদের ব্রেইন অনেক ভালো এবং ইনটুইশন ও অসাধারণ কিন্তু ইন্টেলেকচ্যুয়ালি পিছিয়ে আছে। এই জায়গাটা নিয়ে আমি কাজ করতে চাই। এটা নিয়ে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে।
ব্রেইন মূলত একটা হার্ডওয়্যার। সেখানে পারিবারিক শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা হচ্ছে আপনার অপারেটিং সিস্টেম ও সফটওয়্যার। এখন সুপার কম্পিউটারে যদি আপনি উইন্ডোজ ৯৫ ইন্সটল করেন, তাহলে এই কম্পিউটার দিয়ে কী হবে? আমাদের সমাজ ও শিক্ষা ব্যবস্থা তাই করছে। এরা বরং মেধাবীদের ধ্বংস করে যাচ্ছে। দুই/চারজন নিজের উদ্যোগে এখানে স্বশিক্ষিত হয়ে কিংবা দেশের বাইরে গিয়ে ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কিছুটা বাঁচিয়েছে নিজেদের।
আর আমাদের দেশের ভেতরে নটরডেম বাঁচাচ্ছে অল্প কিছু শিক্ষার্থীদের। আপনি দেখবেন ঢাবি ও বুয়েটের অধিকাংশ ভালো ছাত্ররা নটরডেম থেকে আসা। কারণ, ওরা এদেশের আজগুবি শিক্ষা ব্যবস্থার অনেক কিছুই মানে না। সব কলেজে লটারি দিয়ে ভর্তি হয়, ওখানে লটারি দিয়ে হওয়া যায় না।