বর্তমান সভ্যতায় চালাক-চতুর হওয়াটা পজেটিভ ব্যপার হিসেবে দেখা হলেও এটা আসলে নেগেটিভ ট্রেইট। দিন শেষে চালাক-চতুররা লাভবান হয় না। তাদের সবচাইতে বড় লস হচ্ছে তাদের কোন কাছের মানুষ থাকে না। সত্যিকার বন্ধু থাকে না।
চালাক আর বুদ্ধিমান হওয়ার ভেতরে পার্থক্য আছে।
Be intelligent, not clever!
Are you—
Hard worker or Smart?
Independent or Social?
Lazy or Stressed?
অনলাইনে দেখবেন সার্চ করলেই প্রচুর টিউটোরিয়াল, ব্লগ আর্টিকেল পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন বিষয়ে। সবচাইতে বেশী পাওয়া যায় আইটি নিয়ে। বিশেষ করে প্রোগ্রামিং বিষয়ক।
বলেন তো, প্রোগ্রামিং নিয়ে মানুষ কেন এত আর্টিকেল লিখে?
উত্তরটা খুব সহজ। একজন মানুষ যখন নিজের প্রোগ্রামিং নলেজ শেয়ার করে, তখন অন্যরা জানতে পারে ঐ বিষয়ে তার জ্ঞানের গভীরতা কতটুকু, স্কিল কতটুকু। এতে তার কাজ পাওয়ার পরিমান বেড়ে যায়। বাংলাদেশে অন্তত এক ডজন লোকরে আমি চিনি যারা শুধুমাত্র লেখালেখি করেই বিদেশী প্রচুর কাজ পেয়েছে, পাচ্ছে। কয়েকজন লেখালেখি করে বিদেশী কোম্পানীতে ভালো জবও পেয়েছে। এদের কাউকে কাউকে কোম্পানী হায়ার করে নিজেদের দেশে নিয়ে গেছে।
তাই লেখালেখি করবেন। নিজের মার্কেটিং এর জন্য লেখালেখি গুরুত্বপূর্ন। এটা আপনার স্কিল ও যোগ্যতা প্রমাণের মাধ্যম।
বন্ধু Russel Khan-এর বাসায় ছিলাম এক রাত। রাতে ঘুমানোর আগে সে আমাকে বিভিন্ন রকমের বাদাম, এক চামচ খাঁটিি মধু ও এক চামচ কালোজিরা দিলো খেতে। সে নাকি প্রতিদিন খায়। আমি চমৎকৃত হলাম। ফুড এন্ড নিউট্রিশন নিয়ে গত ৪/৫ বছর ধরে ভালোই ঘাঁটাঘাটি করেছি। এগুলোর গুরুত্ব আমাকে কারো বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন নেই কিন্তু এভাবে ব্যপারটাকে আভ্যাসে পরিনত করে ফেলার কথা কখনো ভাবিনি। কিছু কিছু খাবার অভ্যাসে পরিনত করা খুব ভালো।
বাংলাদেশের মানুষের পুষ্টি সমস্যা ভয়াবহ! আমরা কৃষি প্রধান দেশ, আমাদের পুষ্টির অভাব হওয়ার কথা না। স্রেফ সচেতনতার অভাবে আমাদের পুষ্টিগত এই সমস্যা। খাওয়া দাওয়ার ব্যপারে আমাদের এই উদাসীনতার কারণে এখানে মানুষ খুব দ্রুত বুড়িয়ে যায়, নানারকম রোগ ব্যাধির শিকার হয়। পুষ্টির ব্যপারে আমাদের সচেতনতা বাড়ানোর তেমন কোন উদ্যোগও চোখে পড়ে না। অথচ, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ন। একজন মানুষের সুস্থ্য ও আনন্দময় জীবনের জন্য এ বিষয়ে জ্ঞান থাকা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। খাওয়া দাওয়া ও পুষ্টির বিষয়ে গ্লিএরাতে একটা সিরিজ পোস্ট শুরু করেছি। ৩ পর্ব লেখা হয়েছে, সামনে আরো আসবে (কমেন্টে লিংক দিলাম)। আপাতত শর্টকাটে একটা লিস্ট দেই, দেখেন ফলো করতে পারেন কিনা (কিছু মিস থেকে যেতে পারে, পুষ্টি বিশারদগনের সুদৃষ্টি কামনা করছি)
প্রতিদিন যা খাওয়া উচিত-
১) প্রতিদিন ২টা কলা, কমপক্ষে ১টা
২) প্রতিদিন এক গ্লাস গরুর দুধ।
(প্যাকেটজাত গুড়া দুধ বা পাস্তুরিত দুধ খেয়ে তেমন কোন লাভ নাই)
৩) কমপক্ষে ১টা গাজর
৪) দুই গ্লাস লেবুর সরবত
৫) প্রতিদিন ৩/৪ পিস আলমন্ড, ২/৩ পিস কাজু বাদাম, ৫০-১০০ গ্রাম চিনা বাদাম (মাস্ট)
৬) রেড মিট সপ্তাহে দুইদিনের বেশী নয়, মুরগীও না
৭) বিভিন্ন প্রকার ফল-মূল, যত বেশী খাওয়া যায়। বিশেষ করে দেশী ফলগুলো।
৮) ডাল রান্না করলে, প্রচুর ডাল। দরকার হলে খাওয়া শেষে এক কাপ ডাল স্যুপের মত খেয়ে ফেলা যায়।
৯) নিয়মিত সবজি। সপ্তাহে কমপক্ষে ৩ বার।
১০) প্রতিদিন কমপক্ষে ১টা ডিম
১১) এক চামচ খাঁটিি মধু (সম্ভব হলে)
১২) সপ্তাহে কমপক্ষে দুইদিন মাছ (একদিন ছোট মাছ )
১৩) বিভিন্ন প্রকার আলু, বিশেষ করে মিস্টি আলু (প্রতিদিন)
১৪) বেদানা (সপ্তাহে কমপক্ষে একটা, বিশেষ করে মেয়েরা)
১৫) পর্যাপ্ত পানি (২-৩ লিটার, এর বেশী না)
এছাড়াও ঔষধি গুনের কারণে যা যা খাওয়া উচিত-
১) সপ্তাহে কমপক্ষে দুইবার ২ চামচ কাঁচা হলুদের রস। কাঁচা হলুদ না পেলে ৩/৪ চামচ গুড়া হলুদ চা অথবা হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।
২) প্রতিদিন ২ কোয়া রসুন পেস্ট বানিয়ে সকালবেলা খেয়ে ফেলবেন
৩) পুদিনা পাতার ভর্তা/শরবতে দিয়ে
৪) কালোজিরা, প্রতিদিন এক চা চামচ
৫) বাসিল সীডের শরবত (সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন)
৬) পেঁয়াজের রস, দু্ই চামচ (সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন)
লেখাটা কি বেশী বড় হয়ে গেল? আরেকটু বিস্তারিত ও আরো সুন্দরভাবে গ্লিএরাতে পোস্ট করবো পরে।
আমাদের দেশের মানুষের এত অসুখের পেছনে অনেক বড় চারটা কারণ হচ্ছে- ১) খাদ্যাভাস ও খাবারে ভেজাল, ২) ফার্মেসী থেকে নিজে নিজেই ঔষধ কিনে খাওয়া, ৩) পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব ও ৪) মানসিক দিক থেকে দুর্বল থাকা বা ভুল ধ্যানধারনা পোষণ করা।
নিজে নিজে ঔষধ খাওয়া, খাদ্যাভাস ও মানসিক দিকগুলো নিয়ে ফেসবুক স্টেটাসে বলে শেষ করা যাবে না। এগুলো নিয়ে আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করছি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও অত ছোট টপিক না আর এর সাথে অনেক কিছু জড়িত। সেই অনেক কিছুর ভেতরে সামাজিক দিকটা নিয়ে কিছু বলি। খেয়াল করলে দেখবেন, এদেশে উচ্চ বিত্তের লোকেরা যতটা পরিচ্ছন্ন নিম্নবিত্তের লোকেরা ততটা নয়। অথচ ব্যপারটার সাথে বিত্তের তেমন কোন সম্পর্ক নেই। ইউরোপ-আমেরিকায় একদম যাযাবরদের বাদ দিলে নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তের সকলেই পরিচ্ছন্ন থাকছে। ব্যপারটা কালচারাল। সংস্কৃতির একটা গুরুত্বপূর্ন দিক হচ্ছে এই পরিচ্ছন্নতাবোধ (cleanliness)। তবে শুধু একা এই সংস্কৃতি ধারণ করে লাভ নেই। আপনার বাসা পরিষ্কার থাকবে কিনা, তা নির্ভর করছে আপনার বাসার সকলে সাংস্কৃতিক দিক থেকে অতটা উন্নত কিনা। পরিচ্ছন্নতাবোধের গুরুত্ব বোঝে কিনা। যেকোন একজনেরও যদি সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে পরিচ্ছন্ন থাকাটা কঠিন হয়ে যাবে। সমাজেও তাই। আপনার এলাকায় যদি একটা পরিবারও অপরিচ্ছন্ন হয়ে থাকে, তাহলে এলাকার রাস্তায় কলার খোসা, চিপসের প্যাকেট, ডাস্টবিনের বাইরে ময়লা দেখা যেতে পারে। গুলশান-বনানীতে জমির দাম ও বাড়ি ভাড়া এত বেশী করে রাখার একটা বড় কারণ নিম্নবিত্তের লোকদের ওখানে ঢুকতে না দেয়া, যাতে ওরা পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে। কিন্তু কেন নিম্নবিত্তের লোকজন এরকম? ব্যপারটা এমন না যে, বিত্ত নেই বলেই প্রতিটি মানুষ সাংস্কৃতিক দিক থেকে পরিচ্ছন্নতাবোধর অভাবে ভুগছে। আমি অনেক নিম্নবিত্তের মানুষকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে দেখেছি। মাটির ঘরে বাস করে কিন্তু চারদিক ঝকঝকে-তকতকে। তবুও শেষ পর্যন্ত এরা এই পরিচ্ছন্নতাটা ধরে রাখতে পারে না।
মূলত বিয়ে-শাদীর মাধ্যমে যখন অন্য পরিবার থেকে এমন কেউ ওখানে ঢুকে পড়ে যার এই পরিচ্ছন্নতাবোধ নেই, তখন ধীরে ধীরে এই পরিচ্ছন্ন পরিবারটাও অপরিচ্ছন্ন হতে থাকে। এদেশে বিয়ের আগে কন্যার বাড়িতে গিয়ে খুটিয়ে খুটিয়ে মেয়েকে দেখা হয়। অথচ দেখা উচিত ছিলো তাদের সাংস্কৃতিক দিকগুলো। তবে অনেকেই কন্যা দেখতে গিয়ে বাড়িঘরের পরিচ্ছন্নতা বোঝার চেষ্টা করে থাকে; কিন্তু ভুলভাবে। তারা ওয়াশরুমে ঢুকে কমোড আর বেসিন দেখে। অথচ ওগুলো গেস্ট আসার আগে পরিষ্কার করে ফেলা হয়। দেখা উচিত ফ্লোর শুকনা না ভেজা। ওয়াশরুমে পানি জমিয়ে রাখা আছে কি নেই। দেয়ালে ঝুল দেখা যাচ্ছে কিনা। ওয়াশরুমে দুর্গন্ধ আছে কিনা। এরকম আরো অনেক ব্যপার রয়েছে। বাসার ভেতরেও পরিষ্কার-পরিছন্নতা দেখে লাভ নেই। ওগুলো আপনি আসার আগেই সাজানো গোছানো শেষ। আপনাকে বারান্দা দিয়ে উকি দিয়ে নিচের দিকে দেখতে হবে। যদিও কিচেনের বারান্দা দিয়ে নিচে তাকিয়ে এটা পুরোটা বুঝবেন না। কারণ, কাজের বুয়ারা অনেক সময় ময়লা ফেলে বারান্দা দিয়ে।
আবার আপনার মেয়েকে যেমন ছেলে পক্ষ দেখতে আসছে আপনারো যাওয়া উচিত ছেলের বাড়িতে। গিয়ে তাদের সাংস্কৃতিক দিকগুলো জেনে আসুন। নয়তো আপনার পরিচ্ছন মেয়েটাকে বাকী জীবন অপরিচ্ছন্ন নোংরার মাঝে কাটাতে হবে।
পুনশ্চঃ কেউ ব্যক্তিগতভাবে নিবেন না দয়া করে। এর আগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে যে কয়টা স্টেটাস দিয়েছি তাতে অনেকে মন খারাপ করেছেন বলে জেনেছি। অনেকে ধরে নিয়েছিলেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তের লোকজন নিয়ে আমার এলার্জি আছে। ভুল ভেবেছেন তারা।
বেশীরভাগ মানুষের অধিকাংশ ভুল কাজগুলোর পেছনে থাকে স্রেফ সামান্য আনন্দ পাওয়ার ইচ্ছা। আর এধরনের কাজগুলো তার নিজের জন্যই সবচাইতে বেশী ক্ষতিকর। এই ক্ষতির পরিমাপটা অধিকাংশ মানুষ করতে পারে না বলেই সে এগুলো করতে দ্বিধা করে না। তারপর যখন বুঝতে পারে, তখন অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে।
অধিকাংশ মানুষকে এধরনের ক্ষতি থেকে তার কাছের মানুষেরা বাঁচাতে পারে না। ভুল প্যারেন্টিং, কাছের মানুষদের ভুল ভাবে ট্রিট করা বরং তাকে এগুলোতে আরো বেশী উৎসাহীত করে তোলে। এর ভেতরে বাইরে থেকে তৃতীয় একজন কু-বুদ্ধিদাতার আবির্ভাব ঘটে যাকে তার কাছে অবতারের মত মনে হয়। এই বাইরের মানুষটা স্রেফ হিরো হওয়ার জন্য তাকে ক্রমাগত ভুল পরামর্শ দিতে থাকে।
ভুল পরামর্শগুলো আসলে কেমন? ধরেন একজন মানুষ নেশা করতে চায়। তার কাছের মানুষেরা কখনোই তাকে নেশাগ্রস্থ হতে দিবে না। কিন্তু সঠিকভাবে বোঝাতে না পারার কারণে এবং ভুল শাসনের কারণে সে এত বেশী ত্যক্ত-বিরক্ত থাকে যে তার দম বন্ধ হয়ে আসে। তখন সে নিঃশ্বাস ফেলার একটা জানালা খোঁজে। এসময়ে একজন মানুষ এসে যদি তাকে বোঝায়, ঐ নেশাটা আসলে খারাপ কিছু না... তখন তার কাছে হুট করে মনে হয় এতদিনে সে নিঃশ্বাস ফেলার মত একটা জানালা পেয়েছে। ঐ তৃতীয় ব্যক্তি জানে, এসব বললে ওর কাছে সে প্রিয় হতে পারবে। প্রিয় হয়ে সে তার স্বার্থ হাসিল করে নিতে পারাটাই উদ্দেশ্য। অতঃপর, ভিকটিমের রিয়েলাইজেশন আসার আগে সটকে পড়লেই হলো।
এভাবে প্রচুর মানুষ ভুল পথের কানাগলিতে আটকে যায়, আর ফিরতে পারে না।