ইসলাম



এই স্ক্রিনশটের ঘটনা সত্য কিনা জানি না। তবে এরকম হয়ে থাকলে তারচাইতে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। প্রতিবেশীরে অভুক্ত রেখে ইবাদত যে কবুল হয় না, এই তথ্য কারো জানা থাকলে এরকম তো হওয়ার কথা না। তাছাড়া, যাদের কোরবানী দেয়ার সামর্থ্য আছে তাদের সারাবছর গরু গোশত কিনে খাওয়ার সামর্থ্যও থাকার কথা।
আপনার সামর্থ্যবান আত্মীদের গোশত না পাঠিয়ে গরীব আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের আগে পাঠান। এটাই ইসলামের নির্দেশ।

আর যদি ইসলামের থোড়াই কেয়ার করেন এবং কোরবানী দিয়ে থাকেন লোক দেখানোর জন্য, তাহলেও গোশত ফ্রিজারে না জমিয়ে বিলিয়ে দিতে পারেন। বেশীদিন ফ্রিজারে রাখা খাবার কিন্তু লিভার ড্যামেজ থেকে শুরু করে ক্যান্সারেরও কারণ হতে পারে।

যাকাত দিয়ে কাউকে স্বাবলম্বী করতে হলে শুধু টাকায় কাজ হবে না, গাইডলাইনও দিতে হবে। ব্যাখ্যা কমেন্টে।

কেউ আপনাদেরকে নিকৃষ্ট হিসেবে উপস্থাপন করায় আপনি তারে ঘৃণা করেন। তারপর তার অসুস্থতায় হাহা দিয়া প্রমাণ করে দেন যে— তিনি আপনাদের বিষয়ে ঠিকই বলেছিলো।

যে ইসলাম বিদ্বেষের কারণে আপনি তারে ঘৃণা করেন সেই ইসলামও তো আপনার এই আচরণরে সমর্থন করে না। করে?

মাত্র ১৫ বছর আগে ব্লগে এই একই কথা বলার জন্য আমারে 'মৌলবাদী' ট্যাগ দিয়েছিলো 'প্রগতিশীল' ব্লগাররা। আমি বলেছিলাম- 'কোন মেয়ে হিজাব পড়তে চাইলে সেটায় বাধা দিলেও তো তার অধিকার ক্ষুন্ন করা হয়।' এখন দেখেন Amnesty International-ও একই কথা বলে।

ইসলামের খুটিনাটি বিষয়গুলো নিয়ে এদেশের মুসলিমরা যতটা সিরিয়াস, তার সিকিভাগ সিরিয়াসনেস যদি ঘুষ/দুর্নীতি আর লোক ঠকানোর বিষয়ে থাকতো, তাহলে এই দেশে দুর্নীতি বলে কিছু থাকতো না।

অ্যাপল ইভেন্টের প্রথমেই এই হিজাবী আপুটারে দেখাইলো। হায় অ্যাপল!

কোরবানীর সময় মেয়ের শশুর বাড়িতে গরু-খাসি পাঠানোর যে রেওয়াজ, এটাও যৌতুক। যারা এধরনের পরোক্ষ যৌতুকরে সামাজিক রীতিতে পরিনত করেছে, তাদের কোরবানী হওয়া তো দূরের কথা, এরা মুসলিম নামেরই কলংক। এরা ছোটলোক।

আমার মনে হয় সামনে যে ভয়াবহ খারাপ সময় আসতে যাইতেছে, তখন মুসলিমরা সার্ভাইব করে যাবে শুধুমাত্র যাকাত ব্যবস্থা আর দান-খয়রাতের জন্যই। মানে, এটলিস্ট না খেয়ে মারা যাবে না আরকি।

এনি আদার থট?

এবার রোজার মাসে আপনি কী কী শিখলেন? আমি একটা বলি-
ইফতারের আগে মনে হয়
হালুম হালুম হালুম
সবকিছু আজ খালুম!

কিন্তু দেখা যায় অল্প কিছু খেয়েই আপনার ক্ষুদা শেষ। এরপর টেবিল ভর্তি খাবার থাকে কিন্তু আপনাকে কেউ জোর করেও সেটা খাওয়াতে পারবে না। আমাদের প্রয়োজন আর মনের চাহিদার ভেতরে ব্যবধানটা বুঝতে পারি আমরা এটা থেকে।
একজন ব্যক্তির আসলে খুব বেশী কিছু দরকার নেই। ইফতারে আমাদের খাবারের আসল চাহিদাটুকু মিটে যাওয়াতেই আমরা বুঝতে পারি যে, 'নাহ, আর খেতে পারবো না, আর দরকার নেই!' যদি না মিটতো? তাহলে বাকী জীবনই আপনি 'সবকিছু আজ খালুম' মুডে থাকতেন।

অন্য সব বিষয়েও আমাদের তা-ই ঘটে। আমরা পাই না বলে 'সবকিছু আজ খালুম' ভাবতে ভাবতে আফসোস নিয়ে জীবন কাটিয়ে দেই।

স্টেডিয়ামে কখনো খেলা দেখেছেন?
মসজিদে মিলাদ বা যিকিরে অংশ নিয়েছেন?
কিংবা বন্ধুরা মিলে কোন ঘটনায় একসাথে হেসে উঠেছেন?

এগুলোর যেকোন একটাও যদি করে থাকেন এবং সেই অনুভূতির কথা মনে করতে পারেন, তাহলে একা একা কিছু করা ও অনেকে মিলে করার মাঝে পার্থক্যটা ধরতে পারবেন।

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার সাথে বাসায় বসে খেলা দেখার পার্থক্য কেন এত বেশী? একা একা ফেসবুকে মিম পড়ে হাসার চাইতে বন্ধুদের নিয়ে হাসলে আনন্দ এত বেড়ে যায় কেন?

যখন অনেকে মিলে কোনকিছু করা হয়, তখন একটা ভাইব তৈরি হয়। এই ভাইবটাই আসল। এটাই সবকিছু বাড়িয়ে দেয়।

ঈদের দিনটা আনন্দময় হয়ে ওঠে যখন সবার মনে একসাথে আনন্দ বিরাজ করে। কোন একটা দিনে সকলেই একসাথে আনন্দিত হলে যে ভাইবটা তৈরি হয়, সেটাই ঈদ। আমাদের ঈদগুলো ফিকে হয়ে যাচ্ছে বয়স বেড়ে যাওয়ার জন্য নয়। আমাদের ঈদগুলো ফিকে হচ্ছে সমল্লিত আনন্দ না থাকায়। আমাদের সঙ্ঘবদ্ধতার অভাবে। আমরা সবাই যদি শুধুমাত্র নিজের হ্যাপিনেস নিয়ে ভাবি, তাহলে কখনোই ঈদের আনন্দ ফিরবে না। সমাজের সকলের হ্যাপিনেস নিয়ে যখন আপনি ভাবা শুরু করবেন এবং কাজ করবেন, তখন দেখবেন আবার ঈদের আনন্দ ফিরতে শুরু করেছে।

ঈদ মুবারক!

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি