জিওপলিটিক্স

এসব ব্যাপার ভারতের অখন্ডতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। কয়েক বছর আগেও ভারতীয় মুসলিমরা নিজেদের ভারতীয় পরিচয় নিয়ে গর্ব করতো। এখন পরিস্থিতি খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে।

আমেরিকা এই পরিস্থিতিটা ঠেকানোর একটা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কারণ বৃহৎ ভারত তাদের দরকার (মূলত ভারতের বাজার)। কিন্তু পারবে না সম্ভবত ঠেকাতে। এর ভেতরে ভারত রাশিয়া থেকে S-400 নিয়ে আমেরিকার সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে। এখন আর আমেরিকা ভারতের অখন্ডতা আর চাইবে কিনা সেটাও ভাবার বিষয়। চায়নাও ভারতের জন্য একটা বড় হুমকি (যদিও ভারত চায়নার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে)।

ভারত ভাঙলে একটা মুসলিম রাষ্ট্র তৈরি হতে পারে যেখানে ভারতের সব মুসলিমরা মাইগ্রেট করবে। ৪৭-এর মত।

আফগানিস্তান নিয়া জিওপলিটিক্স বুঝতে এই ভিডিওটা আপনাকে সাহায্য করবে কিছুটা।

আধিপত্যবাদী সম্রাজ্য টেকে না বেশীদিন। নিজেদের সেরা ভাবা আর অন্যদের তুচ্ছ ভাবা এমন একটা অযোগ্যতা, যেটা শেষ পর্যন্ত নিজের ধ্বংসের কারণ হয়। এই কারণে রোমানরা হারাইয়া গেছে, আর কখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারে নাই এবং পারবেও না (গ্রীক আর ইটালিয়ানদের এ্যাটিটিউড খেয়াল করলে আপনি এইটা বুঝতে পারবেন)। পারস্য সম্রাজ্য হারিয়ে গেছে, আর কখনো ঘুড়ে দাঁড়াতে পারবে না। অটোমানদের পতন হইছে (যখনই তারা অংহকারী হয়ে উঠছে, তার পর থেকে তাদের পতন শুরু)। জার্মানরা এত যোগ্য হওয়ার পরেও পারে নাই। ফরাসীরা পারে নাই, তাদের চাইতে একটু কম নাক উঁচা বৃটিশরা পারছে। আরবরা পারে নাই, কোনদিন পারার সম্ভবনাও নাই। তারপর এই রোগ দেখা গেল ট্রাম্প আর মোদীর ভেতরে। তার জন্য আম্রিকা আর ভারতরে বড় মূল্য দিতে হচ্ছে।

চাইনিজদেরও এই রোগ আছে, ফলে ওরাও বড় কিংবা দীর্ঘ মেয়াদী সম্রাজ্য তৈরি করতে পারবে না।

২১০০ সালে পৃথিবীর সবচাইতে বেশী জনসংখ্যার দেশ হিসেবে প্রেডিক্ট করা হচ্ছে ভারতকে। আবার, মুসলিমরা সংখ্যায় সবচাইতে বেশী হবে ধারণা করা হচ্ছে। এসব প্রেডিকশন বাস্তবে ফলুক বা না ফলুক, এগুলোর উপরে ভিত্তি করে পৃথিবীতে অনেক ঘটনা ঘটতেছে। ভারতের মোদী সরকারের কাজকর্মও এসব ঘটনার অংশ।

এবিষয়ে কিছু ইন্টারেস্টিং পর্যবেক্ষন শেয়ার করি-
১) গত বিশ বছর ধরে বিশ্বব্যপী বেশ জোরেশোরে এন্টি মুসলিম ক্যাম্পেইন চলতেছে। এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে আমেরিকা, ইউরোপ, ভারত এবং চীনে। ফলে, মুসলিমরা আক্রান্তবোধ করতে শুরু করেছে। এতে তাদের ভেতরে ইউনিটি বাড়তেছে। ব্যপারটা টের পেয়ে পশ্চিম নীতিনির্ধারকরা মুসলিমদের ব্যপারে উদার নীতি অবলম্বনের চেষ্টা শুরু করেছে কিন্তু সুবিধা করতে পারতেছে না। মুসলিম বিদ্বেষের সুযোগে খ্রিস্টান মৌলবাদ ফিরে আসতেছে সেখানে। এটা তাদের জন্য বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতেছে।

২) এন্টি মুসলিম ক্যাম্পেইনে ভারতের অংশগ্রহনও চোখে পড়ার মত। কিন্তু, এটা ভারতের অখন্ডতা নষ্ট করছে। সেই সাথে ভারতে হিন্দু-মুসলিমদের ভেতরে দুরত্ব বাড়াচ্ছে। হিন্দু-মুসলিমদের এই দুরত্ব ভারতের জন্য কী ফল বয়ে আনতে পারে, তা বুঝার জন্য তাদের জনসংখ্যার প্রেডিকশন বুঝা গুরুত্বপূর্ন।

৩) ভারতে বিপুল পরিমান কন্যা সন্তান ভ্রুন হত্যা করা হয়। আর এই কাজটা মূলত করে হিন্দুরা। এর ফলে ওখানে হিন্দু জনসংখ্যার ছেলেঃমেয়ে রেশিও পরিবর্তন হচ্ছে। ভারতে মেয়েদের নিরাপত্তা কমে যাওয়ার পেছনে এর একটা যোগ আমি দেখতে পাই। এই নিরাপত্তাহীনতার কারণে কন্যা শিশু মেরে ফেলার হার আরো বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে জ্যামেতিক হারে বাড়ার সম্ভবনা আছে। ফলে, ভবিষ্যত ভারতীয় হিন্দুরা বিয়ে করার মত মেয়ে পাবে না। ব্যপারটা আরো জটিল আকার ধারণ করেছে জাত-পাতের কারণে। হিন্দুরা চাইলেই যেকোন জাতের মেয়েদের বিয়ে করতে পারে না। ফলে, ভারতের হিন্দু জনগোষ্ঠীর সামনে বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করতেছে। কী হবে, বলা যায় না কিছু। তবে, ভালো কিছু যে না, সেটা অনুমান করা যায়।

৪) পশ্চিমারা (বিশেষ করে আমেরিকা ও ব্রিটেন) ভারতের অনেক অন্যায় সহ্য করতেছে শুধুমাত্র বিপুল পরিমান ভারতীয় জনসংখ্যার জন্য। প্রেডিকশন অনুযায়ী পৃথিবীর সবচাইতে বেশী জনসংখ্যার দেশ হতে যাচ্ছে ভারত। আবার চীন জাপানের মতই বুড়ো-বুড়ির দেশে পরিনত হতে যাচ্ছে। ফলে, ভারতের এই বাজার সবাই দখল করতে চাচ্ছে। চীনও।

৫) পশ্চিমাদের এন্টি মুসলিম ক্যাম্পেইন ব্যাক ফায়ার করার পর ভারতের এন্টি-মুসলিম ক্যাম্পেইন সফল হওয়ার তেমন কোন কারণ নাই। আবার কন্যা শিশু হত্যা ও নারীদের সামগ্রিক অবস্থার (নিরাপত্তা ও সামাজিক অবস্থান) কারণে ওখানে হিন্দু জনসংখ্যাও কমতে শুরু করবে। এর ফলে ভারত পৃথিবীর সবচাইতে জনবহুল দেশ হলেও আলটিমেটলি সেটা হবে বিশ্বের সবচাইতে বড় মুসলিম দেশ। যদি না তার আগেই ভারত ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।

পৃথিবীর ইতিহাস ঘাঁটলে দেখবেন, সবকিছুর গোড়ায় আছে অর্থনীতি। অর্থনীতির সাথে আবার জনগনের বিশাল যোগ আছে। যারা সংখ্যায় বেশী, তাদের উপরে নির্ভর করে অনেক কিছু। এই দুইটা ব্যপাররে উপরের ফ্যাক্টগুলোর সাথে পারমুটেশন-কম্বিনেশন করে দেখেন, ইন্টারেস্টিং সব ইনসাইট পাবেন।

পুনশ্চঃ এ সংক্রান্ত আগের পোস্টে যে এনালাইসিসটা দেব বলেছিলাম, এটা সেই এনালাইসিস না। এটা যাস্ট ছোট একটা অংশ যাতে রিলেটেড কিছু ব্যপার তুলে ধরলাম। আগের পোস্টের লিংক কমেন্টে।

স্বপ্নে দেখলাম জার্মানী, যুক্তরাজ্য এবং আরেকটা কোন দেশের যেন প্রেসিডেন্ট সহ বইসা মোবাইলে গেম খেলতাছি। গেমে একজন আরেকজনরে সাইজ করে আর হাসতে হাসতে কুটি কুটি। ওবামারে (আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামারেই দেখলাম) ফোন দিলাম, শুইনা সেও কয় আইতাছি।

এরকম একটা স্বপ্ন দেখার কারণ বুঝলাম না (স্বপ্নটা আসলেই দেখলাম, স্যাটেয়ার না)। বাস্তবে একটা রাষ্ট্রের সাথে আরেকটা রাষ্ট্রের এইরকম বন্ধুত্ব আসলে সম্ভব না। আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাষ্ট্র কখনো রাষ্ট্রের বন্ধু হইতে পারে না। যারা ভাবে পারে, তারা হয় জানে না অথবা মিথ্যা বলে। এই কারণে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থাটা আমার পছন্দ না। শত্রু শত্রু খেলা বিরক্তিকর। মানুষ মানুষের শত্রু হবে কেন?

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি