শিক্ষাব্যবস্থা

স্কুলে স্মার্টফোন নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।



সূত্রঃ
1) Smartphone Ban Recommended In Schools As UN Says They Are A ‘Distraction To Learning’ - forbes
2) Put learners first: Unesco calls for global ban on smartphones in schools - Theguardian

এডুকেশন সিস্টেম কেমন হওয়া উচিত - ৭

আমি যা দেখতে পাচ্ছি তা যদি আপনাদের দেখাতে পারতাম, অধিকাংশের ঘুম হারাম হয়ে যেত। ভবিষ্যতে এডুকেশন সিস্টেম কেমন হওয়া উচিত এই বিষয়ে ChatGPT-4 এর সাথে কথা বলছিলাম। আমি গত ১২ বছর ধরে গবেষণা করে যা যা আউটলাইন করেছি, GPT-4 দেখলাম একই কথা বলছে।

জব মার্কেটের যে কী রেডিক্যাল পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে, খুব কম লোকই তা কল্পনা করতে পারতেছে। জব মার্কেট চেঞ্জ মানে এডুকেশন সিস্টেম চেঞ্জ। সেই চেঞ্জ অনেক দ্রুত ও ব্যাপক হতে যাচ্ছে। এর সাথে তাল মিলিয়ে আগানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া দরকার! সময় খুব কম আমাদের হাতে।

কত কম সময়ে কত বেশী শেখানো যায় সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তার জন্য আবার ChatGPT টাইপ জেনারেটিভ AI থেকে সরাসরি তথ্য নিলেও সমস্যা। কারণ, এতে আপনার শেখায় গ্যাপ তৈরি হবে। জ্ঞানের কোন শর্টকার্ট নাই।

গাইডলাইন ছাড়া AI টুলগুলো ব্যবহার করা নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য বিপদজনক। এজন্য AI ব্যবহার করার নিরাপদ উপায় সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা এখন সময়ের দাবী। সবার আগে শিক্ষকদেরকে ট্রেইনিং দিতে হবে এই বিষয়ে।

এই কাজ তো সরকারের করতে হবে। বেসরকারী পর্যায়ে আমরা Town-Center থেকে দেশব্যাপি ফ্রি প্রশিক্ষন কর্মশালা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কনটেন্ট ও গাইডলাইন তৈরি হচ্ছে এখন। আগামী মাসে এর একটা রুপরেখা প্রকাশ করবো।

এসংক্রান্ত আপডেট Revolution 4.0 গ্রুপ ও আমার টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশ করা হবে। আগ্রহীরা সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন।

আমাদের ICT এডুকেশন...

এডুকেশন সিস্টেম কেমন হওয়া উচিত? (৫)

চতুর্থ পর্বে প্রশ্ন করা সম্পর্কিত কিছু আলাপ ছিলো, স্ক্রিনশটে যুক্ত করা হলো।




শিক্ষার্থীরা যে ChatGPT ব্যবহার করে চিট করতেছে, এই চিটিং ঠেকানোর একটা উপায় হতে পারে এই প্রশ্ন সিস্টেম। এক্ষেত্রে উত্তর না বরং শিক্ষার্থীদের করা প্রশ্নের উপরে মূল্যায়ণ করা হবে।

কোন একটা টপিক পড়ানোর পর শিক্ষার্থীদের বলা হবে প্রশ্ন করো। সেই প্রশ্ন করার পর তারা ChatGPT থেকে এর উত্তরও খুঁজে বের করবে। প্রয়োজনে শিক্ষক সাহায্য করবে।

শিক্ষার্থীরা কী প্রশ্ন করছে এবং কেমন প্রশ্ন করতে পারছে, সেটা দেখে তার নলেজের ডেপথ বের করা হবে। এটা অনেকটা ওপেনবুক এক্সাম টাইপ হবে। বইয়ের পরিবর্তে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট/ChatGPT ব্যবহার করতে পারবে।



Ai (ChatGPT) রে তাতিয়ানা এগুলো জিজ্ঞেস করছে বসে বসে। ক্লাশ থ্রিতে থাকতেও ওর জিজ্ঞাসা, আমাদের বইয়ে বিজ্ঞানের কিছু নেই কেন? আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স এখন ওর সেই জানার অভাব পুরণ করতেছে।

সামনের দিনগুলোতে Ai পড়ালেখার ক্ষেত্রে যে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসতেছে, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষকরা কি তার জন্য প্রস্তুত? সেরকম মনে হচ্ছে না এখন পর্যন্ত। আর কিছুদিনের ভেতরেই ক্লাশরুমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের এমন সব প্রশ্ন ও আলোচনার সন্মুখীন হতে যাচ্ছেন যা সম্পর্কে তারা হয়তো এখনো ভাবছেন না।

বাচ্চারা কিন্তু Ai ব্যবহার করে খুব দ্রুত অনেককিছু শিখে যাবে এখন। এরপর ওরা ক্লাশরুমে বোর হবে এবং শিক্ষকরা কিছুই জানে না ভাবতে শুরু করবে। সুতরাং নিজেদের আপডেট করতে শুরু করেন আপনারা। আমাদের পাঠ্যবই এই জেনারেশন এক্সরে কিন্তু স্যাটিসফাই করতে পারবে না।

প্যারেন্টিং - ৪২

বাংলাদেশ এত বেশী দূর্নীতিগ্রস্থ একটা দেশ যে, এদেশে সৎ থাকাটা রীতিমত চ্যালেঞ্জিং একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে কর্মী হিসেবে যাদের যোগ্যতা অনেক কম, তাদের পক্ষে সৎ থেকে জীবনধারণ করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। আর এই যোগ্যতা কম থাকার জন্য আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা দায়ী।

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা টু মাচ খারাপ হওয়াতে এখানে যোগ্য লোক তৈরি হয় না বললেই চলে। কিন্তু যারা ভালো প্যারেন্ট পেয়েছে তারা এই ভয়াবহ খারাপ শিক্ষা ব্যবস্থার ভেতরেও নিজেদের যোগ্য করে তুলতে পেরেছে। ভালো প্যারেন্টিং পেলে একজন ব্যক্তি এতটাই যোগ্য হয়ে উঠতে পারে যে তার জন্য সৎ থাকাটা তখন সহজতর হয়।

ভালো প্যারেন্টিং আপনার নিজের এবং এই দেশের জন্য এতই গুরুত্বপূর্ন।

আমেরিকার ওয়েলস ফার্গো ব্যাংকের সফলতার পেছনে একটা ইন্টারেস্টিং কাহিনী আছে। ওরা করলো কী, ব্যাংকের কাজে আসতে পারে এরকম যোগ্য লোকদের যাকে যেখানে পেল; সবাইকে হায়ার করে ফেললো প্রথমে। হায়ার করার সময় লোকগুলোর কাকে কোন পোস্টে দেয়া হবে, সেটাও ঠিক করেনি। তারপর, ধীরে ধীরে যে যেখানে সবচাইতে ভালো ফিট হবে সেখানে তাকে বসানো হলো। (তথ্য সূত্র: Good to Great by Jim Collins)

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য এধরনের একটা পলিসি নেয়া যেতে পারে। একাডেমিক সিলেবাস আর সিস্টেম বদলানোর আগে দেশের সেরা লোকগুলোরে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে ফেলতে হবে। তারপর তাদেরকে ট্রেইনিং দেয়া হবে, সাথে এক্সাম নিতে হবে। মিলিটারি একাডেমিতে একজন অফিসার তৈরি করা হয় যেভাবে, অনেকটা ওরকমভাবে। সেই সাথে একাডেমিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারে বিনিয়োগ করতে হবে প্রচুর। সেই সাথে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও সম্মান বিসিএস ক্যাডারদের মত করতে হবে। তারপর থেকে এদেশের শিক্ষা ব্যস্থার উন্নতি শুরু হবে।

ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও শিক্ষকদের পেছনে বিনোয়োগ না বাড়িয়ে শুধুমাত্র সিলেবাস ও কনটেন্ট পরিবর্তন কোন কাজে আসবে না।

নন-ফিকশনের ক্ষেত্রে বাংলা বইয়ের চাইতে ইংরেজী বইয়ের মার্কেট বড় এদেশে। মুখস্ত-বিদ্যা নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা এর জন্য দায়ী।

প্যারেন্টিং - ৩৫

আপনার বাচ্চার পড়ালেখার বিষয়ে স্কুল-কলেজের উপরে শতভাগ নির্ভর করবেন না। বিশেষ করে বাংলাদেশের শিক্ষা-ব্যবস্থা ও স্কুল-কলেজের যে অবস্থা, তাতে কোন ভাবেই আর ভরসা করা যায় না। এর সাথে যোগ হয়েছে চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের পরিবর্তন। যে ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, তাতে বর্তমান পড়ালেখা কতটুকু কাজে লাগবে; বলা কঠিন। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নিজে পড়ানো শুরু করেন, বিভিন্ন ধরনের স্কিল ডেভেলপে সাহায্য করেন বাচ্চাদের। শুধু সার্টিফিকেট দিয়ে এখনি কিছু হয় না, ভবিষ্যতে কী হবে ভাবেন। আমরা স্কিলের যুগে প্রবেশ করছি যেখানে সার্টিফিকেটের ভূমিকা প্রবেশপত্র/টোকেনের মত হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। সার্টিফিকেটে কী লেখা আছে তার উপরে নির্ভর করে কেউ জব দিচ্ছে না। ফলে, শতভাগ ফোকাস এই দিকে নষ্ট করে ফেললে বিপদে পড়তে হবে ভবিষ্যতে।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অবশ্যই নিতে হবে, কিন্তু এটাকেই সব ভাবা যাবে না। আমি বরং বলবো প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনাটাকে অপশনাল হিসেবে নিতে। পাশাপাশি স্কিল ডেভেলপমেন্টে মূল জোর দিতে হবে। এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের যুগে কোন ধরনের স্কিল ডেভেলপ করা উচিত তা বুঝতে চোখ-কান খোলা রাখুন। বিদেশী মিডিয়া ও আপডেটেড বইপত্র পড়া শুরু করেন। আপনার নিজের ক্যারিয়ারেও এটা কাজে দিবে।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিনে সার্ভাইভ করার জন্য আপনার বাচ্চার কী শেখা উচিত, কী জানা উচিত, কোন স্কিল থাকা উচিত, এই গাইডলাইন নিজেই তৈরি করার চেষ্টা করুন।

পুনশ্চঃ আমরা চেষ্টা করছি ভার্সিটয়ান থেকে এরকম একটা গাইডলাইন দাঁড় করাতে। প্যারেন্টিং বইটা লেখা শেষ হতে হতে আশা করি গাইডলাইনটা দাঁড়িয়ে যাবে অনেকটাই। চাইলে আপনিও আমাদের হেল্প করতে পারেন। অনেক লোক মিলে এই বিষয়টা নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করলে খুব দ্রুতই ভালো কিছু দাঁড় করানো সম্ভব।

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি