সরকারী কর্মচারীদেরও বেতন দিতে পারতো না টাকা না ছাপালে। কিন্তু এভাবে কতদিন? মূদ্রাস্ফিতি আরো বাড়বে। ডলার ২০০ টাকা অতিক্রম করবে এভাবে চলতে থাকলে।
এক লোক ভাবতেছে সে যদি দুইটা মুরগি কিনে আনে আর প্রতিটা মুরগীি ১০টা করে ডিম দেয় তাহলে তার ২২টা মুরগি হবে। ২২টা মুরগি থেকে ২২০টা মুরগি, ২২০টা থেকে ২২০০ মুরগি। এভাবে একদিন তার এক বিলিন মুরগি হবে এবং দশ বিলিয়ন ডিম বাজারে বিক্রি করে ব্রলোক হয়ে যাবে!
তার মাথায় এটা কখনো আসে না যে ৮ বিলিয়ন পৃথিবীতে ১০ বিলিয়ন ডিম কে খাবে?
প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের সময় মানুশ টেকনোলোজিরে ভয় পাইছিলো কিন্তু বাস্তবে বরং জব বেড়ে গেছে, পুরানা টেক্সবুকে এই ইতিহাসের এনালাইসিস পড়ে তারা ভাবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সময়েও এভাবে জব বাড়তেই থাকবে। ঐদিকে ডিমান্ড যে বাড়ে না, মার্কেট যে স্যাচুরেটেড হয়ে আছে, এসব তারা বিবেচনা করে না কিংবা জানেই না। এক বিলিয়ন মুরগি দশ বিলিয়ন ডিম দিবে, সেই হিসাব নিয়া তারা বসে আছে।
রিসেশন কেন হয়, শুধুমাত্র এই একটা প্রশ্ন নিয়ে যদি তারা ভাবতো, তাহলে নিজেদের বোকামী ধরতে পারতো।
আগামী পাঁচ বছরে প্রায় দেড় কোটি জব ভ্যানিশ হয়ে যাবে ইকোনমিক উইকনেস ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স এডাপশনের কারণে।
— World Economic Forum
আপনারে স্যাটিসফাই করার জন্য যদি ধনীরা দামী জিনিষ কেনা বন্ধ করে দেয়, তাহলে আপনি আরো গরীব হয়ে যাবেন।
ইকোনমিক্স ১০১
যাকাত দিয়ে কাউকে স্বাবলম্বী করতে হলে শুধু টাকায় কাজ হবে না, গাইডলাইনও দিতে হবে। ব্যাখ্যা কমেন্টে।
লিপস্টিক বিক্রি বৃদ্ধি পাচ্ছে মানে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হতে যাচ্ছে, এরকম একটা ইন্টারেস্টিং ধারণা আছে ওয়েস্টে। এটাকে লিপস্টিক ইনডেক্স বলা হয়। এর পেছনের থিউরিটা এরকম— যখন মহিলাদের হাতে টাকা থাকে না তখন তারা লাক্সারি আইটেম কিনতে পারে না বলে লিপস্টিকের মত কমদামী জিনিষ বেশী কিনে। এটা ওরকম কোন ইকোনমিক থিওরি না তবে ব্যাপক আলোচিত ও পরিচিত টার্ম। Lipstick Index লিখে সার্চ দিলে আপনি এবিষয়ে ইন্টারেস্টিং সব তথ্য পাবেন।
তবে আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য ভিন্ন। লিপস্টিক ইনডেক্স নিয়া বিতর্ক থাকলেও এর পেছনের কারণটা কিন্তু সত্যি। মানুশের তো এন্টারটেইনমেন্ট লাগে। যখন সে টাকার অভাবে থাকে তখন সে স্বস্তায় বিকল্প কিছু খোঁজে, নিজেরে একটু হ্যাপি করার জন্য। এই ব্যাপারটা মাথায় রাখলে সম্ভবত মন্দার দিনে আপনি করার মত কোন ব্যবসা খুঁজে পাবেন। গুড লাক!
ইউক্রেনের খেরসন, জাপোরিঝঝিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে পুতিন মূলত ইউক্রেনরে ল্যান্ড লকড কান্ট্রিতে রুপান্তরিত করতেছে, ফলে ইউক্রেনের বাকী অংশ এমনিতেই রাশিয়ার নিয়ন্ত্রনের বাইরে থাকতে পারবে না। রাশিয়ার এই ঘোষণার ফলে বিশ্ব-পরিস্থিতি আরো খারাপ দিকে যাবে।
ঐদিকে গ্যাস পাইপলাইনে স্যাবোটাজ চলমান অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি আরো খারাপ করে দিচ্ছে যা ইউরোপের ইকোনমিতে বিশাল ধাক্কা তৈরি করতে যাচ্ছে।
বিশ্বের সামনে সময় খুবই খারাপ।
মূল বিষয় হচ্ছে যে অর্থনৈতিক মন্দার দিকে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, সেটা আমরা কিভাবে মোকাবিলা করবো?
পরিস্থিতি কত দ্রুত খারাপ দিকে যাচ্ছে, ব্যবসায়ীরা সবচাইতে ভালো টের পাচ্ছে। বাংলাদেশ কিন্তু প্রডিউস করে না খুব বেশী জিনিষ। ব্যবসাগুলো দাঁড়িয়ে আছে মূলত ইমপোর্টের উপরে। আর ইমপোর্ট বিষয়ক কোন সিদ্ধান্তের ফল সাথে সাথে টের পাওয়া যায় না। কমপক্ষে পাঁচ/ছয় মাস লাগে বুঝতে।
আজকে ইমপোর্টে রেস্ট্রিকশন দেয়া মানে পাঁচ/ছয় মাস পরে ঐ ইমপোর্টের সাথে রিলেটেড ব্যবসাগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া। ফ্যাক্টরিগুলোর উৎপাদনে প্রভাব পড়ে এতে। রিটেইল মার্কেটেও পন্যের অভাবে ব্যবসা সীমিত হয়ে আসে। ফলে, ব্যবসায়ীরা নিজেদের বাঁচাতে লোক ছাঁটাই করতে বাধ্য হবে। লোক ছাঁটাই হওয়া মানে লোকজনের ক্রয়ক্ষমতাও কমে যাওয়া। ক্রয়ক্ষমতা কমা মানে ব্যবসা কমে যাওয়া। ব্যবসা কমে যাওয়া মানে আরো লোক ছাঁটাই হওয়া। এভাবে পরিস্থিতি খুব দ্রুত খারাপের দিকে যায়।
ফুড, আইটি, চিকিৎসা আর এডুকেশন। এই চারটা ইন্ড্রাস্ট্রির লোকজন কোনভাবে টিকে যাবে, বাকী সবাইকে ভুগতে হবে। সে আপনি এখন যত ভালো অবস্থাতেই থাকেন না কেন।
টাকা মূলত একটা কাগজের রিসিপ্ট ছাড়া আর কিছুই না। মানে, আপনি কারো কাছে ১০০ একর জমি জমা রাখলেন আর সে আপনারে একটা রিসিপ্টে লিখে দিলো যে আপনি তার কাছে ১০০ একর জমি পান। এবং এটাও লিখে দিলো যে- 'চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে ফেরত দিতে বাধ্য থাকিবে'। যদিও বাস্তবতা হচ্ছে এই সম্পদ আর কোনদিনই ফেরত দিবে না সে।
আর আপনার জমা রাখা ঐ ১০০ একর জমি থেকে প্রতি বছর ৫-১০ একর জমি গাপ করে ফেলা হইতেছে ইনফ্লেশন (inflation) বা মুদ্রাস্ফীতি (মুদ্রাস্ফীতি একটা ভুল টার্ম আসলে)।
এখন এই রিসিপ্ট (টাকা) আপনি ব্যাংকে রাখেন আর ঘরে রাখেন, সম্পদ কিন্তু সেই লোকের কাছেই জমা রইলো। এটারেই ব্যাংকে টাকা রাখা বুঝিয়েছি।
সম্পদরে এভাবে রিসিপ্টে রুপান্তরিত করে রাখা বোকামি এজন্য। একারণে দেখবেন শত কোটি টাকার মালিকদের ব্যাংকে এক কোটি টাকাও ক্যাশ থাকে না বা কারেন্সিতে থাকে না কিছু।
আমরা যখন ছোট ছিলাম, কাঁচের বোতলে এক লিটার কোক (১০০০ মিলি) এর দাম ছিলো ২২ টাকা। এখন তার চার ভাগের এক ভাগ (২৫০মিলি) প্লাস্টিকের বোতলের কোক ২৫ টাকা। চারগুনের বেশী বেড়েছে দাম। একটা ব্যানসন সিগারেটের দাম ছিলো ৩ টাকা, এখন ১৬ টাকা। পাঁচগুনের বেশী বেড়েছে দাম।
এটাই উন্নতির সাইন্স!