যাপিত জীবন নিয়ে বিক্ষিপ্ত চিন্তা-ভাবনা ও অভিজ্ঞতা
অলস বসে থাকলে আমার মাথায় নানা ধরনের গল্প ঘুরতে থাকে। অলস মস্তিস্ক যে শয়তানের কারখানা, এটা আমি তখন পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে যাই। তো একদিন এক রেস্টুরেন্টে ঢুকেছি। কেউ অর্ডার নিতে আসে না আমারো তাড়া নাই। শয়তানের কারখানায় নানা ধরনের গল্প তৈরি হতে লাগলো। ঐদিন ফানি কিছু গল্প ঘুরছিলো। নিজে গল্প বানাই নিজেই হাসি।
- এক্সকিউজ মী!
রাগী রাগী এক মেয়েকে আমার টেবিলের সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় আবিষ্কার করলাম। শয়তানরা সব ভয় পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু একটা শয়তান মনে হয় যায় নাই। বাকীটুকু পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
যে কয়জন শিক্ষককের কথা আমার সারাজীবন মনে থাকবে অধ্যাপক মনহর আলী স্যার তাদের ভেতরে অন্যতম। এই মাত্র জানতে পারলাম স্যার আজকে বিকালে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
স্যারের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
মানুষ নিয়া গবেষণা করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯ শতাধিক হিউমেন ট্রেইটের ব্যপারে ঘাঁটলাম। শ'খানেক মেজর হিউমেন ট্রেইট নিয়ে পড়ার পর নিজের অজান্তেই আপনি বলে উঠবেন- কীয়েক্টাবস্থা! মানুষ সম্পর্কে জানার জন্য মানুষের ট্রেইটগুলো জানার কোন বিকল্প নাই সম্ভবত। মনোবিজ্ঞানীরা ভালো বলতে পারবেন।
মানুষের চরিত্র বাদ দিলেও যদি শুধু তাদের শারীরিক গঠন কিংবা ফ্যাশন নিয়েও পড়েন, আপনি আবার বলে উঠবেন- কীয়েক্টাবস্থা! এই যেমন, পুরুষদের ২০/২৫ রকমের চুলের স্টাইল দেখে ভাবতে পারেন, ছেলেরাও রং-ঢং-এ কমতিতে নাই। মেয়েদের চুলের স্টাইল নিয়ে আর কী বলবো। কত ধরনের হেয়ার স্টাইল যে আছে! এই যেমন পনি টেইল। পনি টেইল তো আমাদের দেশে বেশ পরিচিত। কিন্তু পিগ টেইল কি পরিচিত? হ্যাঁ, খুব ভালোভাবেই পরিচিত। মেয়েদের বেনী করা চুল হচ্ছে পিগ টেইল। ভাবছিলাম, এদেশের পাবলিক যদি জানে এটা পিগ টেইল, তারা কি আর চুল বেনী করবে?
একটা স্ক্রিনশটে শুধুমাত্র চুলের স্টাইলগুলোর একটা তালিকা দিলাম।
বাংলাদেশের বিখ্যাত এক লেখককের ব্যপারে এক মেয়েকে দেখেছিলাম ভয়ানক সব অভিযোগ করতে। ঐ মেয়ে দাবী করেছিলো ঐ লেখকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চিনেন। শুধু চিনেন না, খুব ভালোভাবেই চিনেন। এবং এই লোক কোন লেভেলের খারাপ মানুষ তিনি জানেন.. ইত্যাদি ইত্যাদি। তো, সেই লেখকের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক থাকায় ব্যপারটা নিয়ে জানতে চাইলাম। উনি বললেন, এই মেয়েকে তিনি চিনেন না। তারপর ইনবক্সে সেই মেয়েকে একটা ম্যাসেজ দিতে গিয়ে আবিষ্কার করলেন মেয়েটা তিন/চার বছর আগে খুব সুন্দর করে "ভাইয়া... আমি আপনার মস্ত ফ্যান..." টাইপ একটা ম্যাসেজ করেছিলো। কিন্তু সেই ম্যাসেজ লেখকের চোখে পড়ে নাই, ফলে জবাব দিতে পারেন নাই। আমরা ধারণা করলাম এই জবাব না দেয়াতেই উনি এত ক্ষ্যাপা। আমার পরিচিত আরেকজন আছে যিনি এই লেখককে দুই চোখে দেখতে পারেন না। দোষ ঐ একটাই, ইনবক্সে ম্যাসেজের রিপ্লাই পাননি।
এই স্টোরি বলার কারণ হচ্ছে আজকে ফেসবুক ইনবক্সে ফিল্টারড ম্যাসেজ চেক করে দেখি অসংখ্য চমৎকার সব ম্যাসেজ। যেহেতু ফিল্টারড ম্যাসেজ দুই/তিন বছর পর পর একবার চেক করা হয়, স্বভাবতই এগুলো চোখ এড়িয়ে গিয়েছে। ভাবছি, কতজন এনিমি তৈরি হলো এভাবে কে জানে!
সহজ জীবন নিশ্চিত করার জন্য আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন ব্যবহারেও সতর্ক থাকতে হবে।
তাতিন মনে হচ্ছে বাংলা একাডেমির কিছু একটা হয়ে যাবে। ঘুমানোর আগে সে আমাকে ম্যাসেজ পাঠায়—
"ভালো রাত"
আমার কিছু আম্রিকান ফ্রেন্ড কনভার্সেশন শুরু করে Yo দিয়া। আমিও Yo দিয়াই অদের সাথে কথা শুরু করি। যেইখানে যেমন আরকি। তো, একদিন একজন জিগায়, তুমার দ্যাশেও কি তুমরা Yo কও?
আমি কইলাম— হু... কয় তো! আমরার দ্যাশে গাছ কাটে যারা, তাদেরকে Hey yo বলতে দেখসি।
২০১৯
গত তিন মাসে প্রতিদিন গড়ে ১ ঘন্টারও কম ফেসবুক ব্যবহার করেছি। ডিসেম্বর মাসের গড় হচ্ছে প্রতিদিন ১৫ মিনিট। এটা মনে হয় এই বছরে আমার সেরা অর্জন। জানুয়ারী থেকে সেটা ৫ মিনিটে নামিয়ে আনার চেষ্টা করবো।
এবছরের সবচাইতে বড় ব্যর্থতা হচ্ছে ভার্সিটিয়ানের মাইলস্টোনগুলো অর্জন না হওয়া। পাঁচটা মাইলস্টোন ছিলো, মাত্র দুইটা এ্যাচিভ হয়েছে।
প্রতি বছর ১০০ বই পড়ার কর্মসূচীও ভয়াবহভাবে ফেইল করেছে। মাত্র ৩১টা বই পড়া হয়েছে এবছর। এই ৩১টা বইয়ের ভেতরে আবার ১০-টাই উপন্যাস। ১০০-তে ৩৩ যদি পাশ মার্ক হয়, তাহলে এটা পুরাই ফেইল মার্ক। এই ৩১টা বইয়ের অধিকাংশও আবার গত তিন মাসে পড়া হলো। ফেসবুকে কম আসার ফল। সুতরাং আগামী বছর আরো বেশী পড়া সম্ভব হবে, আশা করা যায়।
জানুয়ারীর ১ তারিখের আগে থিংকার ক্লাবের সবগুলো ফিচার ডেপ্লয় করার মাইলস্টোনও ফেইল। তবে, আগামী এক সপ্তাহের ভেতরে এটা রিকোভার হয়ে যাবে।
তবে, সব মিলিয়ে ২০১৯ আমার জন্য ভালো ও গুরুত্বপূর্ন একটা বছর ছিলো। ২০২০ আরো বেশী গুরুত্বপূর্ন হবে।
সবাইকে নতুন বছরের অগ্রীম শুভেচ্ছা।
হ্যাপি বাড্ডে ২০২০
দীর্ঘজীবি হও.. ৩৬৬ দিন বাঁইচা থাইকো!
বাংলাদেশের বেশীরভাগ ভালো সফটওয়্যার কোম্পানী কিংবা ফ্রি-ল্যান্সার দেশী কাজ করতে চায় না একারণে না যে দেশে কাজ করে টাকা কম পাওয়া যায়। বরং একারণে যে- এদেশে কখনো আপনি ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন না। অথচ, আপনি বিদেশী ক্লায়েন্টদের কাজ করে প্রতিটা মাইলস্টোনে বিশেষ বিশেষ ধন্যবাদ পাবেন। অনেক ক্লায়েন্ট বোনাসও দেয়। বাংলাদেশী ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে এসব পাওয়ার কথা কল্পনাও করা যায় না বরং তাদের সন্তুষ্ট করাটাই একটা বিশাল চ্যালেঞ্জের ব্যপার হয়ে দাঁড়ায় (এবং ৯৯% ক্ষেত্রে এরা কখনো সন্তুষ্ট হয় না কিংবা হলেও প্রকাশ করে না)। আর কখনোই আপনাকে এরা ধন্যবাদ দিবে না। আসলে, ধন্যবাদ দেয়ার সংস্কৃতিই আমাদের নাই।
ইংরেজী appreciate এর বাংলা প্রতিশব্দ নাই ঠিকভাবে। কারণ, আমরা কখনো এপ্রিশিয়েট করি না বা করতে জানি না। এর মাঝেও কেউ কেউ আছে ব্যতিক্রম। আজকে সেরকম এক ব্যতিক্রম বাঙালি ক্লায়েন্ট বগুড়া থেকে দধি এনে দিয়ে গেল। ব্যপারটা আমার জন্য কিছুটা শকিং ছিলো। দু'টো কারণে শকিং
১) এর আগে কোন বাঙালি ক্লায়েন্টকে এপ্রিশিয়েট কিংবা ধন্যবাদ দিতে দেখি নি (বোনাস কিংবা দধি এনে খাওয়ানো তো দূরের কথা)।
২) দধিটা অদ্ভুত রকমের টেস্টি! (এতদিন ঢাকায় বগুড়ার দধি নামে যা খেলাম, সেগুলো আসলে কী ছিলো?)
যাহোক, ভালো লাগলো।
১৫℃-এও যে আমি ঠান্ডা পানি দিয়া গোছল করি- এইটা কি রিজিউমিতে এড করা উচিত, ফ্রান্স?