ক্যারিয়ার বিষয়ক সকল আলাপ
চাকরি বাকরি নিয়া ভবিষ্যতেও আরো বহুত গিয়ানজাম বাঁধবো। বিদেশীদের বাইর কইরা দিয়া শুধু আম্রিকানগো চাকরি দিমু বইলা ট্রাম্পের মত লোক আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছে। ভাবেন! কিন্তু ট্রাম্প সেইটা পারে নাই। কারণ, বিদেশীদের ছাড়া আসলে আম্রিকা অচল। বিভিন্ন ইন্ড্রাস্ট্রিতে আম্রিকানদের যত এক্সপার্ট দরকার তার সিকিভাগও আমেরিকায় নাই। পুরো বিশ্ব থেকে রিক্রুট করেও বহু কোম্পানী এক্সপার্টের অভাবে ঠিকমত কাজ করতে পারতেছে না। বিশেষ করে আইটি ইন্ড্রাস্ট্রিতে এক্সপার্টের অভাব দিন দিন বাড়তেই আছে। বাংলাদেশে যেসব বিদেশীরা চাকরি পায়, সেগুলো অকুপাই করার জন্য পর্যাপ্ত এক্সপার্ট এই দেশেও তৈরি হইতেছে না। কেন?
আমাজনের এক বিগ ডাটা এক্সপার্ট আমারে অফার দিয়ে বসে আছে, এইখানে বিগ ডাটা আর আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স নিয়া একটা RnD খোলার জন্য। পর্যাপ্ত এক্সপার্টের অভাবে সেইটা এখনো শুরুই করতে পারলাম না। তারপর উনি বললেন পোলাপানরে শিখিয়ে পড়িয়ে তৈরি করার সেটাপ দিতে। সেইটার জন্যও পর্যাপ্ত জনশক্তি দেখি না (মানে যারা আসলেই এধরনের জিনিষ নিয়ে কাজ করতে পারবে ডেসপারেটলি)। তো, এই যখন অবস্থা; তখন ক্যামনে কী?
মরাল অব দ্য প্যানপ্যানানিঃ চাকরি-বাকরি বহুত আছে, যোগ্য লোক নাই।
কালের কণ্ঠে একটা আর্টিকেল ছেপেছে- 'চাকরি জোটে না উচ্চশিক্ষায়ও'। আর্টিকেল লেখক কর্মবাজারের সঙ্গে সংগতিহীন শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন। বলতে চেয়েছেন প্রয়োজনের চাইতে বেশী লোক উচ্চ শিক্ষিত হচ্ছে বলেই চাকরী পাচ্ছে না লোকে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশে যোগ্য লোকের প্রচুর অভাব। যোগ্যতার অভাবেই লোকজন চাকরী পাচ্ছে না। চারদিকে লাখ লাখ বেকার দেখবেন কিন্তু ভালো কোন পোস্টে রিক্রুট করতে গেলে পাবেন না একজনও। এজন্য প্রতিষ্ঠানগুলো পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে দুই/তিনগুন বেশী বেতন দিয়ে লোক রাখতে বাধ্য হচ্ছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যেভাবে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে, ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। এভাবে চলতে থাকলে একটা সময়ে দেখা যাবে উপরের পদগুলো সব ভারতীয়রা দখল করে ফেলেছে। বাঙালিরা পাবে শুধুমাত্র দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর পদগুলো। এমনকি উপরের দিকের পোস্টে সব ভারতীয়রা ঢুকে গেলে দ্বিতীয়/তৃতীয় শ্রেণীও বাঙালি পাবে না। ভারতীয়রা সবসময় নিজের দেশ থেকে লোক আনতে উৎসাহী। বাঙালির কপালে হয়তো বহু কষ্টে চতুর্থশ্রেণী জুটবে।
সুতরাং সমস্যার গোড়ায় তাকান হে...
একটা ব্যপার ভাবছিলাম। আমাদের দেশের অফিস-আদালতের সময়টা ১০টা-৫টা থেকে পরিবর্তন করে ভোর ৫টা-১টা করলে কেমন হয়? মানুষজন ভোর ৪টায় ঘুম থেকে উঠে হালকা কিছু খেয়ে বের হয়ে পড়লো। অফিসগুলোতে লাঞ্চ ব্রেকের মত ১০টার দিকে ব্রেকফাস্ট ব্রেক দিলো। তারপর ১টায় ছুটি। লোকজন দুপুরে বাসায় ফিরে পরিবারের সাথে লাঞ্চ করলো, আপনজনের সাথে বাকীটা দিন কাটালো। শপিং করলো, ঘুরলো। তারপর সন্ধ্যায় ডিনার করে ৮টার ভেতরে ঘুমিয়ে গেল। এর পজেটিভ সাইডগুলোর ভেতরে গুরুত্বপূর্ন কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরা যাক-
১) ভোরে ঘুম থেকে ওঠার ফলে মানুষজনের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পাবে। কাজকর্ম অনেক দ্রুত হবে।
২) পরিবারের সাথে সময় দেয়ার মত যথেষ্ঠ সময় পাওয়া যাবে।
৩) বাকী দিনটা যেহেতু ফ্রি, এসময়টা লোকজন শপিং আর ঘুরাঘুরি করতে পারলো। এতে ব্যবসাবানিজ্য বৃদ্ধি পাবে, পর্যটন/বিনোদন ব্যবসাগুলোও বৃদ্ধি পাবে।
৪) বিদ্যুৎ সমস্যা মিটবে। যেহেতু রাতের অধিকাংশ সময়টায় লাইট অফ থাকবে এবং শুধুমাত্র বেডরুমে ফ্যান/এসি চলবে। তাছাড়া সকালের ঠান্ডা পরিবেশের কারণে অফিসগুলোর বিদ্যুৎ কনজিউমও কমবে।
৫) ভোর রাতে যেহেতু বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা থাকে, অফিস যাওয়ার পথের গরমের কষ্টটা লাঘব হবে।
৬) স্কুল-কলেজগুলো ৮টার পরে শুরু হলে অফিসযাত্রীরা রাস্তায় জ্যামও কম পোহাবে। ভিআইপিরা সকাল দশটার পরে ও দুপুর ২টার পরে মুভ করে জ্যাম আরো কমাতে পারেন।
৭) স্কুল-কলেজ ও প্রফেশনাল কোর্সগুলো দুই শিফটে হতে পারে। এতে অফিস করার পাশাপাশি মানুষ ক্যারিয়ার বিল্ড করার জন্য দুপুরের পরে প্রফেশনাল কোর্স করতে পারবে।
৮) দুপুরের পরে ওভারটাইম কাজ করে লোকজন তাদের আয় বাড়াতে পারবে। সকালে অফিস করে বিকালে কোন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলো বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পার্টটাইম কাজ করলো।
৯) প্রতিদিন দুপুরের পর অবসর পাওয়ার ফলে লোকজন পড়াশোনা ও বিনোদনে যথেষ্ঠ সময় দিতে পারলো। এতে দেশের মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানসিক উন্নতি ঘটবে।
১০) অনেক ভোরে কার্যক্রম শুরু করায় বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে লেনদেন সহজ হবে। তাদের ওয়ার্কিং আওয়ারের সাথে সিন্ক করা সহজ হবে।
আরো অনেক সুবিধা আছে।
১.
এই দেশের মানুষকে নিয়ে সবসময়ই আমি আশাবাদী। অনলাইনে বিভিন্ন সময়ে বই পড়া বিষয়ক বিভিন্ন একটিভিটিস ও দেশের জন্য কিছু করতে চাইলে লোকজনের একাত্মতা দেখে মুগ্ধতার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আশাবাদ।
২.
ছোটবেলা থেকেই পাঠ্য বইয়ের বাইরে পড়ার অভ্যাস। বিশেষ করে পত্রিকার কলাম পড়তাম স্কুল জীবন থেকেই। দেশকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছি তখনই। বাংলাদেশকে নিয়ে হয়েছি আশাবাদী। তখন থেকেই ভেবেছি, কেবল নিজের জন্য নয়, দেশের জন্যও করার আছে, অনেক কিছু।
দেশকে নিয়ে এই আশাবাদ ও ভাবনা কেন? কারণ, আমি এই এলাকার মানুষদের জানি। দেখেছি, কি পরিমান ট্যালেন্ট এই দেশের মানুষ। শুধুমাত্র একটু দিকনির্দেশনার অভাবে আমরা পিছিয়ে আছি। শুধুমাত্র আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটার কারণে আমাদের আজকের এই দুর্দশা। এটা কাটানো সম্ভব। এর জন্য কাজ করতে হবে। অনেকে কাজ করছেনও... আরো বেশী মানুষকে নামাতে হবে এই কাজে।
আজকে পৃথিবী যেভাবে স্বর্ণের খনি আর হীরার খনির জন্য ছুটছে, একসময় মানুষের খনির পেছনে ছুটবে। উন্নত দেশগুলো সব মানুষ শূন্য হয়ে পড়ছে দিনে দিনে। দক্ষ লোকের জন্য এখনি বিশ্বের অনেক দেশ তাদের ইমিগ্রেশন পলিসি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। ভবিষ্যতে এমন দিনও আসবে যখন বাংলাদেশের রাস্তার মোড়ে মোড়ে ফ্লেক্সি লোডের দোকানের চাইতে বিদেশে লোক পাঠানো এজিন্সির সংখ্যা বেশী হবে। তবে, তারা খুঁজবে দক্ষ ও যোগ্য লোক।
তাছাড়া নিজেদের দেশকে সমৃদ্ধ করার জন্যও অনেক যোগ্য লোক দরকার আমাদের। এই যোগ্যতা অর্জিত হতে পারে নিবিড় পাঠ ও অধ্যবসায়ের মধ্য দিয়ে।
ইতিহাস, সাহিত্য, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্কসহ নানামুখি অধ্যয়ন এবং সন্মিলিত মৌলিক পাঠ ও গবেষণার উদ্যোগ হিসাবে যাত্রা শুরু হলো 'পাঠশালা - Centre for Basic Studies'-এর।
আপনি যদি মনে করেন কিছু শেখাতে পারবেন চলে আসুন। কিছু শিখতে চাইলেও। এখানে আমরা শিখবো ও শেখাবো।
যে কেউ সদস্য হতে পারবেন। তবে তিনি জানতে ও জানাতে কতটা আগ্রহী তা বিবেচনায় নেওয়া হবে।
বই নিয়ে আলোচনা হবে। আলোচনা হবে শিল্প, সাহিত্য, দর্শন, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ, উন্নয়ন ভাবনাসহ নানান প্রসঙ্গ নিয়ে। চলচ্চিত্র, নাটক, চিত্রকলা, সঙ্গীত নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
খ্যাতিমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিদের জীবন ও ভাবনা নিয়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণ হতে পারে। আলোচনা হতে পারে সাম্প্রতিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ নিয়েও।
আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে আগামী দিনের বাংলাদেশের জন্য যোগ্য, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরির প্রচেষ্টা চালানো।
আশা করি এই উদ্যোগে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকবে সবার।
আমরা সবাই মিলে গড়ে তুলবো শক্তিশালী বাংলাদেশ।
সবাইকে ধন্যবাদ।
// বাংলাদেশের শিক্ষা-ব্যবস্থা
বাংলাদেশের পড়ালেখার সিস্টেমটা কিরকম জানেন? এখানে আপনাকে প্রথমে পুটিমাছ ধরতে শেখাবে। তারপর কৈ মাছ। তারপর রুই মাছ.. তারপর কাতলা মাছ। এভাবে যতপ্রকার মাছ আছে আপনি সারাবছর সেগুলো ক্যামনে ধরতে হয় শিখতে গিয়া খালি পড়বেন আর পড়বেন। সব মুখস্ত করে ফেলবেন। বাস্তব জীবনে এই বিদ্যা কোন কাজে আসে না। কারণ, ক্যারিয়ারে গিয়া আপনার এমন মাছ ধরতে হইবো যেইটা আপনার স্কুল-কলেজ শেখায় নাই।
শেখানোর কথা ছিলো 'মাছ কেমনে ধরতে হয় সেইটা'। তাহলে আপনি যেকোন মাছই ধরতে পারতেন, সারাবছর দৌড়ের উপরেও থাকতে হতো না।
রিক্রুটমেন্টের জন্য বিডিজবস থেকে ফেসবুক বেশী কাজের দেখা যাচ্ছে। রিক্রুটমেন্টের জন্য একজন মানুষের স্কিল যতটা গুরুত্বপূর্ন, তার ব্যক্তিত্ব ততটাই গুরুত্বপূর্ন। ফেসবুক প্রোফাইলের দিকে তাকালে একজন মানুষ সম্পর্কে আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন। একারণে, রিক্রুটমেন্টের জন্য ফেসবুক একটা ভালো জায়গা মনে হলো।
তবে, যারা চাকরী খুঁজছেন তাদের এই বিষয়ে কিছু কোর্স করা উচিত। মানে, কিভাবে আপনি নিজেকে তুলে ধরবেন, কিভাবে কথা বলবেন, কি বলা উচিত না কি বলা উচিত এসব জানার জন্য। ২০০২ সালে আমার জীবনে প্রথম রিক্রুটমেন্টের অভিজ্ঞতা হয়েছিলো। হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার বানিয়েছিলাম একটা... যেখানেই সেটা দিতাম সেখানেই ওটা চালানোর লোক নিয়োগ করার সময় ভাইবা বোর্ডে আমাকে থাকতে হতো এবং বেশীর ভাগ প্রশ্ন আমাকেই করতে হতো। এরকম বেশ কিছু ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকার পর রিয়েলাইজ করেছিলাম- এই দেশে চাকরীর কোন অভাব নাই, অভাব যোগ্য লোকের। সবচাইতে দুঃখের ব্যপার ছিলো এটা যে- উচ্চশিক্ষিতদের ভেতরে অযোগ্য লোক বেশী। বিশেষ করে কমিউনিকেশন স্কিল নাই বললেই চলে তাদের। এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কিছু শেখাতে পারুক আর না পারুক, মানুষের ভেতরে অযৌক্তিক ইগো আর অহংকার ঢুকিয়ে দিতে পারে যেটা বেশীর ভাগ লোককে নিয়োগ অযোগ্য করে তোলে।
আইটি ইন্ড্রাস্ট্রির অবস্থা এই ক্ষেত্রে অনেক ভালো। এখানে যোগ্য লোক আছে অনেক, কিন্তু তাদের বেশীর ভাগই জানে না কিভাবে নিজের যোগ্যতা তুলে ধরতে হয়। এই জায়গাটায় মনোযোগী হতে পারলে দেশী ও আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের ছেলে/মেয়েরা অনেক ভালো করতে পারতো। বিশেষতঃ আমাদের দেশে এভারেজে ব্রিলিয়ান্টের সংখ্যা বেশী। তাদের শুধুমাত্র একটু গাইডলাইন দরকার।
সফটওয়্যার ইন্ড্রাস্ট্রিতে যারা কাজ করতে চান (বিশেষ করে প্রোগ্রামিং লাইনে) তাদের প্রতি আপাততঃ একটা অনুরোধ- আপনারা অবশ্যই নিজে নিজে অনেক প্রজেক্ট করবেন এবং সেগুলোর কিছু কিছু অবশ্যই গিট হাবে রাখবেন। জব পাওয়ার জন্য এটা অনেক কাজে দেয়।
এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে জব পাওয়ার টিপস এবং সাজেশন নিয়ে একটা গ্রুপ করবো ভাবছিলাম... কিন্তু গ্রুপ করার পর দেখা যায় আমি ছাড়া আর কেউই টিপস বা সাজেশন দিতে আগ্রহী হয় না। একা আমার পক্ষে তো এত সময় নিয়ে এধরনের একটা গ্রুপ চালানো সম্ভব না। তবে, কেউ যদি টিপস বা সাজেশন চান, ইনবক্স করতে পারেন। হয়তো সাথে সাথে জবাব দিতে পারবো না কিন্তু দেরীতে হলেও যতটুকু সম্ভব সাহায্য করবো।
যারা ইনবক্স করেছেন ও মেইল করেছেন, তাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
অল্প কিছুদিন আগেও আরবরা না খেয়ে মারা যেত। তখন তারা নিজেরাও জানতো না, তাদের মাটির নিচে কি লুকায়া আছে। যেমন আমরা জানি না, আমাদের জনসংখ্যা কত বড় এ্যসেট। শুধু দরকার এদেরকে একটু শেইপে আনা। উন্নত বিশ্বে যে হারে মানুষ কমতেছে তারচাইতেও ভয়াবহ হারে দক্ষ কর্মী কমতেছে। দুইদিন পর আমাদের দেশের রাস্তার মোড়ে মোড়ে তারা ইমিগ্রেশন সেন্টার খুলে লোকজনের হাত-পা ধরে নিজের দেশে নিয়ে যাবে। এখনি অবশ্য নিচ্ছে। বিভিন্ন ভার্সিটির মেধাবীদের তারা ভালোই হান্ট করতেছে। তবে যারা অদক্ষ, তাদেরকে কেউ নিবে না। দেশেও তারা কিছু করতে পারবে না।
তাই ছোট্টবন্ধুরা, তোমরা ক্যারিয়ারের প্রতি মনোযোগী হও। প্রশ্ন ফাঁস আর গণহারে পাশের আশায় পড়ালেখা বাদ না দিয়া ঠিকঠাকমত লেখাপড়া করো, দক্ষতা বাড়াও। মানুষ রপ্তানী করেই আমরা ভবিষ্যতে এই দেশরে অনেক উপরে নিয়ে যেতে পারবো।
বড় একটা প্রজেক্ট শেষ করার পর আমি সাধারণত একটা ব্রেক নেই। ঐ সময়টাতে বই পড়া, নতুন কিছু শেখা আর মুভি দেখার পাশাপাশি একজন বা দুইজন স্টুডেন্ট নেই। মূলত অনলাইন স্টুডেন্ট নেই যাদেরকে স্কাইপ আর টিমভিউয়ার দিয়ে ডেটাবেস, প্রোগ্রামিং বেসিকস, পিএইচপি বা এধরনের কিছু শেখাই। আমার জন্য এটা নিজেকে ইনস্পায়ার করা, শেখার আগ্রহ বাড়ানোর পাশাপাশি চমৎকার কিছু অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যম হিসেবেও কাজ করে, উপরি পাওনা হিসেবে একজন মানুষের উপকারও করা হলো। তো এই স্টুডেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে বেশ কিছু জিনিয়াসের সন্ধান আমি পেয়েছি যারা দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলাদেশে না জন্মালে অবশ্যই গুগল বা মাইক্রোসফটে কাজ করতো বলে আমি বিশ্বাস করি। তো এরকম এক জিনিয়াস এক সফটওয়্যার কোম্পানীতে জয়েন করেছে যেখানে তার মেধার মূলায়ণ হচ্ছে না ঠিকমত উলটো খামোখা ঝাড়ি খেতে হচ্ছে এবং কোম্পানীর টপ ম্যানেজমেন্টের কাছে তার সম্পর্কে ভুল রিপোর্ট দিয়ে প্রমোশন আটকে রেখেছে। আমার কাছে জানতে চাইলো তার এখন কি করা উচিত। আমি যে পরামর্শটা তাকে দিলাম সেটা সম্ভবত আরো অনেকের কাজে লাগতে পারে ভেবে সবার উপযোগী করে এখানে শেয়ার করলাম-
আপনি যখন কোন কোম্পানিতে কাজ করবেন তখন আপাতদৃষ্টিতে সেই কোম্পানীর জন্য খেটে মরছেন মনে হলেও বাস্তবে আপনি আসলে নিজের স্কিল ও অভিজ্ঞতা বাড়াচ্ছেন। যারা আরেকজনের কোম্পানীর জন্য খেটে কি হবে ভেবে কাজে ফাঁকি দেয় তারা মূলত নিজেকেই ফাঁকি দিলো। কারণ, কোম্পানী আপনাকে মূল্যায়ণ করুক আর না করুক যে কাজ আপনি শিখছেন যে অভিজ্ঞতা আপনি অর্জন করছেন সেটা তো শুধু আপনারই থাকবে। কেউ আপনার কাছ থেকে আপনার স্কিল আর অভিজ্ঞতা চুরি করে নিয়ে যেতে পারবে না।
অনেক কোম্পানী থাকতে পারে যেখানে আপনার যথার্থ মূলায়ণ হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে কোম্পানীটা থেকে যতদিন আপনি শিখতে পারবেন ততদিন সেখানে অবশ্যই থাকবেন। এই শেখার স্কোপ যদি দুই বছরের আগে শেষ হয়ে যায় তবুও আপনি সেখানে থাকবেন। দুই বছরের নিচে কোন কোম্পানীতে কাজ করা আপনার ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতিকর। হয় প্রথম মাসেই চাকুরি ছেড়ে দিবেন অথবা কমপক্ষে দুই বছর থাকবেন, এটা হচ্ছে আপনার প্রতি আমার উপদেশ। আর কোন কোম্পানীতে যদি দুই বছরের কম সময় চাকুরী করেন সেটা কখনো রিজিউমিতে উল্লেখ করবেন না।
একটা কোম্পানীতে যদি কাজের পরিবেশ অনেক খারাপ থাকে এবং চরম মাত্রায় পলিটিক্স থাকে সেটা আপনার না, ঐ কোম্পানীর দুর্ভাগ্য। আপনার জন্য বরং বিষয়টা বোনাস অভিজ্ঞতা বয়ে আনবে, আপনি শিখে যাবেন কিভাবে নোংরা পলিটিক্স এড়িয়ে কাজ করে যাওয়া যায়, নিজেকে ডেভেলপ করা যায়।
অনেক কোম্পানী আছে যেখানকার ম্যানেজম্যান্ট দুর্বল হওয়ার কারণে কাজের তেমন চাপ থাকে না, দুইদিনের কাজ একসপ্তাহের জন্য এসাইন করা হয়। এরকম পরিবেশের সুযোগ যদি আপনি গ্রহণ করেন তাহলে আপনি যতটা না কোম্পানীকে ঠকালেন তারচাইতে বেশি নিজেকে ঠকালেন। কারণ এর পরে আপনি যে কোম্পানীতে যাবেন সেখানকার পরিবেশ ওরকম ঢিলা নাও হতে পারে। অথবা কখনো আপনি নিজের কোম্পানী শুরু করার পর এই ঢিলামি আপনার ভেতরে থেকে যাবে যা একটা স্টার্টাপের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
মূল কথা হচ্ছে, অনেক উপরে উঠতে চাইলে কাজকে ভালবাসতে হবে। আপনার মূল্যায়ণ করবেন আপনি নিজে, অন্য কেউ আপনাকে কিভাবে দেখছে তাতে কিছু যায় আসে না।
আরেকটা জিনিষ যেটা খুব গুরুত্বপূর্ন- কখনো কোম্পানী সুইচ করার পর আগের কোম্পানীর বদনাম করবেন না। এটা করা মানে আপনার আগের অভিজ্ঞতাটাকেই খাটো করা (এটা সম্প্রতি চাকুরি সুইচ করা এক ছোট ভাইয়ের উদ্দেশ্যে বললাম) :)
আইটি ক্যারিয়ারের (বিশেষ করে ডেভেলপারদের বেলা) সবচাইতে আকর্ষনীয় কয়েকটা দিক হইতেসে-
১) অসৎ উপার্জন/ধান্ধাবাজী ছাড়াও প্রয়োজনের অধিক আয় করা সম্ভব, উপার্জনে সৎ পথে থাকা অনেক বেশি সহজ এখানে
২) কাজই বিনোদন, আলাদা বিনোদনের প্রয়োজন হয় না (যদি সত্যিকার অর্থে কেউ আইটি ভালোবাসে)
৩) সৃষ্টির আনন্দ আছে। কবি-সাহিত্যিকরাও সৃষ্টির আনন্দ পায় কিন্তু আইটি সৃষ্টির আনন্দ+টাকা পয়সা দুইটাই পায়, এটা অন্য কোন পেশায় এত সহজে হয় না
আইটিতে না আসলে কৃষক হইতাম, আমার ধারণা কৃষকদেরও এই তিনটা বিষয় আছে, যদি কারো চাহিদা আকাশচুম্বী না হয়...
সহজ জীবন - ১
একটা আইডিয়া নিয়ে কাজ করার পর যখন কাজটা শেষে যখন একটা প্রোডাক্টে পরিণত হয় সেই সৃষ্টির আনন্দ কাউকে বোঝানোর মত না। এই আনন্দটা দশ/বারো বছর আগে ঠিক যেভাবে ফিল করতাম এখনো করি... আইডিয়ার এই আউটপুট হিট হবে নাকি ফ্লপ হবে সেটা বিজনেস ডিপার্টমেন্ট বুঝবে... শিল্পির কাজ শুধু সৃষ্টি করে যাওয়া।
পেটের ধান্ধা কখনো মানুষকে শিল্পি বানায় না, ব্যবসায়ী বানাতে পারে বড়জোর। আর নিজের কাজে আর্টিস্ট হওয়া জীবনের আনন্দ বাড়ায়। জীবনকে সহজ করে।