ক্যারিয়ার

ক্যারিয়ার বিষয়ক সকল আলাপ

আগামী পাঁচ বছরে প্রায় দেড় কোটি জব ভ্যানিশ হয়ে যাবে ইকোনমিক উইকনেস ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স এডাপশনের কারণে।

— World Economic Forum

"If you give yourself 30 days to clean your home, it will take you 30 days. But if you give yourself 3 hours, it will take 3 hours.”
— Elon Musk

সহজ জীবন - ২৪

(ক্যারিয়ারে প্রবেশের আগে) স্মার্টফোন জিনিষটা পড়ালেখা, ক্যারিয়ার ও জীবনের জন্য ক্ষতিকর। এডাল্টদের জন্যও এটা ক্ষতিকর যদি কেউ এর সঠিক ব্যবহার না জানে।

আর ভার্সিটিতে উঠার আগে স্টুডেন্টদের স্মার্টফোন দেয়া উচিত না। যোগাযোগের জন্য বাটন ফোন দেয়া যেতে পারে।

অনলাইন ক্লাশের জন্য যে কয়জন আমার কাছে কী ফোন কেনা উচিৎ জানতে চেয়েছে, তাদের সবাইকে বলেছিলাম ট্যাবলেট কিংবা ল্যাপটপ কিনতে। একটা মিড রেঞ্জ ফোনের দামে কিন্তু একটা ল্যাপটপ পাওয়া যায়।

পড়ালেখা ও গবেষণার জন্য ল্যাপটপ যেমন সুবিধাজনক তেমনি সারাক্ষন ব্যবহারের জন্য অসুবিধাজনক। আর এজন্যই ল্যাপটপ ভালো।

যারা স্মার্টফোনের বদলে বাটন ফোন ব্যবহার করছে, তাদের ক্যারিয়ারের ভবিষ্যত স্মার্টফোনের ব্যবহাকারীদের থেকে ভালো।

প্যারেন্টিং - ৩৫

আপনার বাচ্চার পড়ালেখার বিষয়ে স্কুল-কলেজের উপরে শতভাগ নির্ভর করবেন না। বিশেষ করে বাংলাদেশের শিক্ষা-ব্যবস্থা ও স্কুল-কলেজের যে অবস্থা, তাতে কোন ভাবেই আর ভরসা করা যায় না। এর সাথে যোগ হয়েছে চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের পরিবর্তন। যে ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, তাতে বর্তমান পড়ালেখা কতটুকু কাজে লাগবে; বলা কঠিন। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নিজে পড়ানো শুরু করেন, বিভিন্ন ধরনের স্কিল ডেভেলপে সাহায্য করেন বাচ্চাদের। শুধু সার্টিফিকেট দিয়ে এখনি কিছু হয় না, ভবিষ্যতে কী হবে ভাবেন। আমরা স্কিলের যুগে প্রবেশ করছি যেখানে সার্টিফিকেটের ভূমিকা প্রবেশপত্র/টোকেনের মত হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। সার্টিফিকেটে কী লেখা আছে তার উপরে নির্ভর করে কেউ জব দিচ্ছে না। ফলে, শতভাগ ফোকাস এই দিকে নষ্ট করে ফেললে বিপদে পড়তে হবে ভবিষ্যতে।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অবশ্যই নিতে হবে, কিন্তু এটাকেই সব ভাবা যাবে না। আমি বরং বলবো প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনাটাকে অপশনাল হিসেবে নিতে। পাশাপাশি স্কিল ডেভেলপমেন্টে মূল জোর দিতে হবে। এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের যুগে কোন ধরনের স্কিল ডেভেলপ করা উচিত তা বুঝতে চোখ-কান খোলা রাখুন। বিদেশী মিডিয়া ও আপডেটেড বইপত্র পড়া শুরু করেন। আপনার নিজের ক্যারিয়ারেও এটা কাজে দিবে।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিনে সার্ভাইভ করার জন্য আপনার বাচ্চার কী শেখা উচিত, কী জানা উচিত, কোন স্কিল থাকা উচিত, এই গাইডলাইন নিজেই তৈরি করার চেষ্টা করুন।

পুনশ্চঃ আমরা চেষ্টা করছি ভার্সিটয়ান থেকে এরকম একটা গাইডলাইন দাঁড় করাতে। প্যারেন্টিং বইটা লেখা শেষ হতে হতে আশা করি গাইডলাইনটা দাঁড়িয়ে যাবে অনেকটাই। চাইলে আপনিও আমাদের হেল্প করতে পারেন। অনেক লোক মিলে এই বিষয়টা নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করলে খুব দ্রুতই ভালো কিছু দাঁড় করানো সম্ভব।

শুধুমাত্র উপার্জনের জন্য কাজ করা হচ্ছে কামলা খাটা। ক্যারিয়ার ভিন্ন জিনিষ।

যদি দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসা করতে চান তাহলে কাস্টমার বেজ দাঁড় করানো একটা বিজনেসের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ন। নিজেদের সাইট/প্লাটফর্ম না তৈরি করলে সেটা কখনো হবে না। ফেসবুক/শপিফাই গায়েব হয়ে গেলে যদি আপনার কাস্টমার বেজও গায়েব হয়ে যায়, তাহলে তো আপনার কিছুই দাঁড়াইলো না।

পরিচিত বেশ কিছু ফ্যামিলি স্থায়ীভাবে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করেছে। একজনের সাথে কথা হলো একটু আগে, তার পরিচিত ফ্যামিলিরাও দেশ ছাড়ার প্রসেসিং-এ আছে। এরা সব পয়সাওয়ালা ফ্যামিলি যাদের পক্ষে ইউরোপ/আমেরিকায় ৫/৬ কোটি ইনভেস্ট করে ওখানে ফুল ফ্যামিলি থাকার ব্যবস্থা করার ক্ষমতা আছে। কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো পয়সাওয়ালা ও ইনভেস্টরদের নানা ধরনের প্যাকেজ দিচ্ছে তাদের দেশে মাইগ্রেট করার জন্য। এসবের সুবিধা নিচ্ছে অনেকে। আগামী কয়েক বছর এসব সুবিধা নেয়া লোকের সংখ্যা জ্যামেতিক হারে বাড়তে পারে।

ঐদিকে মেধাবীদের দেশ ছাড়ার হার আগের থেকে বাড়ছে। উদ্যোক্তারাও এদেশে ভরসা পাচ্ছে না। এপেক্সের মালিক দেখলাম কয়েকদিন আগে বলছেন ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার কথা। অব্যবস্থাপনা কমানো না গেলে এবং সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি না হলে নতুন বিনিয়োগও কমে আসবে।

তো কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক বিপর্যও ও এইসবের ইমপ্যাক্ট নিয়া ভাবতেছিলাম। পরিস্থিতি সবদিক থেকেই জটিলতর হচ্ছে।



ইউনেস্কোর এই ম্যাপটা দেখলে বুঝতে পারবেন। চায়না, রাশিয়া, জাপান, ইন্ডিয়া, ইভেন ইতালিতে স্কুল-কলেজ সব খোলা, কিছু জায়গায় পার্শিয়ালি খোলা। কিন্তু খুব কম দেশই আছে যেইখানে পুরাপুরি বন্ধ।

এক বছরের বেশী সময় ধরে বাংলাদেশের স্কুল-কলেজ সব বন্ধ। এতে কী হচ্ছে? এতে দু'টো শিক্ষাবর্ষে পড়ালেখা হয়নি। শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় গ্যাপ পড়ে গিয়েছে। এরকম গ্যাপ পড়লে আবার পড়ালেখায় ব্যাক করা কতটা কষ্টকর সেটা অনেকেই জানেন আশা করি। এই শিক্ষার্থীদের আর পড়ালেখা হবে?

এর সাথে যোগ হয়েছে অটো-পাশ। যারা বর্তমান ক্লাশের পড়া না পড়েই নতুন ক্লাশে উঠে গেল, তারা আর বুঝতে পারবে না কিছু। ফলে, তাদের বাকী শিক্ষা জীবন হুমকির মুখে পড়ে গেল।

১২-টা ব্যাচের অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের জীবন ধ্বংস হওয়ার পথে আছে। এর কুফল আপনি টের পাবেন ১৫-২০ বছর পরে। এমনি এদেশে যোগ্য লোকের খুব অভাব। এই ঘটনার পর আর লোক পাওয়াই যাবে না। ২০ বছর পর দেখবেন দেশের অধিকাংশ জব করতেছে ভারতীয়রা। আর বাংলাদেশীরা সব তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী, পিওন হয়ে বসে আছে। যে অল্প কিছু মানুশ পারিবারিক সচেতনতার কারণে পড়ালেখা করেছে, এরা সব দেশ ছাড়বে তখন। পরিস্থিতিটা কেমন হবে, কল্পনা করে দেখেন।

এই মূহুর্তে এটা দেশের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন আলোচনার বিষয় হওয়া উচিত, কিন্তু কোথাও কোন আলাপ নাই।

আপনি একা ভালো হয়ে লাভ নাই, অন্যদেরও ভালো করার চেষ্টা করবেন। সেটা আচরণে, কাজে, ক্যারিয়ারসহ সকল বিষয়েই। আপনার আশেপাশে ও দেশে যত বেশী যোগ্য লোক তৈরি হবে আপনার জন্য সেটা ততই পজেটিভ।

ধরেন আপনি অনেক যোগ্য হয়ে উঠলেন। একটা বড় প্রতিষ্ঠানে বড় পদে আছেন। কিন্তু সেখানে বাদবাকীরা পার্শ্ববর্তী কোন দেশের লোক যারা আবার আপনার দেশের লোকজনকে ঘৃণা করে। নিজে যত যোগ্যই হয়ে উঠেন না কেন; আপনি সেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারবেন না।

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।

সাম্প্রতিক লেখা

যেসব টপিক নিয়ে লেখালেখি করছি