ভার্সিটিয়ান-থিংকার প্রজেক্ট একটা স্টেজে চলে আসার পর এগ্রোতে ইনভেস্ট করবো। তখন এরকম একটা সেটাপ তৈরি করবো। চারপাশে বিস্তীর্ণ চাষের জমি + দীঘি আর মাঝখানে এরকম নিজের বাসা ও ফুড প্রসেসিং প্ল্যান্ট। থিংকারের সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে রিসোর্ট টাইপ এই সেটাপ। ইলন মাস্কের স্টার লিংক ও সোলার সিস্টেম লাগাবো। পুরোপুরি অফ গ্রিড!
বেঁচে থাকলে আগামী দশ বছরের ভেতরে এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে ফেলতে পারবো ইনশা'আল্লাহ। বাকী জীবন এরকম কিছুর সাথেই কাটানোর ইচ্ছা।
জীবন যাপনের জন্য কি খুব বেশি কিছু দরকার? মাঝে মাঝে মনে হয় সব বাদ দিয়ে কৃষিজীবি হয়ে যাই। একজন মানুষ যদি আমাজনের জঙ্গলে ঘাস-পাতা খেয়ে ২৮ দিন বেঁচে থাকতে পারে তাহলে একটুকরা কৃষি জমিতে শস্য ফলিয়ে একজন মানুষ কেন বেঁচে থাকতে পারবে না? জীবনে কতকিছু করার ছিলো, ব্যস্ততা কেড়ে নিচ্ছে সব সময়... !
৭ এপ্রিল, ২০১২
ভেবেছিলাম এবার ঈদের ছুটিতে সবকিছু (মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট লাইন) বন্ধ করে পুরোপুরি ছুটি কাটাবো, কিন্তু হচ্ছে না! মোবাইল, কম্পিউটার আর ইন্টারনেট ছাড়া আমার জগৎ অচল মনে হচ্ছে.. খুব খারাপ লক্ষণ এটা! ভাবতেসি কিছুদিন গ্রামে গিয়ে থাকা যায় কিনা... কৃষি কাজ শিখবো। কৃষি হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র পেশা যেটা কোনদিন বিলুপ্ত হওয়ার কোন সম্ভবনা নাই।
আচ্ছা, ডিজিটাল এজ বিলুপ্ত হয়ে যাবে বা যেতে পারে এরকম কেন মনে হইতেসে?
২৬ অক্টোবর, ২০১২
শহরের প্রতিটা বাড়ির ছাদে হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে চাষ করতে পারেন আপনারা। এই পদ্ধতিতে চাষ করতে মাটি লাগে না। আর যারা বাড়ি বানাবেন, তারা বাড়ির নকশা করার সময় ছাদে হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে চাষ করার জন্য স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করে নিতে পারেন। ভবিষ্যতে কাজে দিবে।
আপডেটঃ
কয়েকজনের মন্তব্য থেকে জানা গেল Hydroponics থেকে Aquaponics বেটার। Aquaponics এর সাথে সবজির পাশাপাশি মাছও থাকে বলে এতে মশার বংশবৃদ্ধির সম্ভবনাও থাকে না।
একজন লোকের সাসটেইন করার জন্য পাঁচ একর জমি লাগে। বাংলাদেশে সম্ভবত আরো কম লাগে যেহেতু আমাদের জমির উর্বরতা বেশী ও আমরা ভাত খাই।
তো, এইটুক জমি আপনার যদি না থাকে, আপনার ভবিষ্যত কখনোই সিকিউর না।
আপডেটঃ এ বিষয়ক যে কয়টা স্টাডি পড়েছি, সেগুলোর কোনটাই আমাদের দেশের না, ফলে আমাদের মাটির উর্বরতা ও জলবায়ুর ক্ষেত্রে কতটুকু জমি, সেটা আমার জানা নেই। কয়েকজনের কমেন্ট পড়ে বুঝলাম অনেক কম হবে এখানে। একজন নিজে উৎপাদন করে দেখেছেন বললেন।
আরেকটা ফ্যাক্ট হচ্ছে— বাংলাদেশের অধিকাংশ জমিতে বছরে তিনবার ফসল ফলানো যায়, যেটা পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই সম্ভব হয় না। ফলে, এই ৫ একরের হিসাব আমাদের জন্য প্রযোজ্য না। আমাদের জন্য কতটুকু জমি প্রয়োজন, সেটা আমার জানা নেই। কয়েকজন দাবী করেছেন ১ বিঘা ও পাঁচ বিঘা। কিন্তু, তাদের এই হিসাবের পক্ষে কোন রিসার্চ দেখাতে পারেননি বিধায় সেটাকে আমি মূল পোস্টে তথ্য হিসেবে যোগ করলাম না। একজন নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন, কিন্তু সেটা প্রোটিন বাদে। ফলে, সেটাও যথার্থ নয়।
এক্ষেত্রে আরেকটা বিষয়ও মাথায় রাখা উচিত। শুধু ভাত-মাছই যথেষ্ঠ না। ব্যালেন্স ডায়েটের জন্য অনেক ধরনের খাবার লাগে। এগুলো সব ফলানোর জন্য যথেষ্ঠ জমি প্রয়োজন।
সামনে খারাপ সময় আসতেছে বলে নাকি শুধু ভয় দেখাই। এবার কিছু আশার আলোও দেখাই—
১) কিছু জায়গা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সে দিয়ে কাজ হবে না, এসবে হিউম্যান লাগবেই। এদেশের মানুশের গড় আইকিউ অনেক ভালো। শুধুমাত্র বাজে একটা শিক্ষা ব্যবস্থা তাদের পুরো ইয়ুথটা ধ্বংস করে দেয় বলে এরা ভালো করতে পারে না। যদি শিক্ষা ব্যবস্থার এই ধ্বংস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন, সেল্ফ লার্নিং এ ফোকাস করতে পারেন, তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অনেক সুযোগও তৈরি হবে। আর যেহেতু ভবিষ্যতে রিমোট জব অনেক বাড়বে, তাই বাংলাদেশে বসেই আপনি সেসব জব করতে পারবেন।
২) ভবিষ্যতে ফিকশানের চাহিদা অনেক বাড়বে। খুব খারাপ সময় আসলে পাবলিক এন্টারটেইনমেন্টের পেছনে যেহেতু অনেক খরচ করতে পারবে না সেহেতু তারা ফিকশান থেকে এই চাহিদা মেটাবে। ফলে, যাদের কল্পনা-শক্তি ভালো, তারা লেখালেখিতে মনোযোগ দিতে পারেন।
৩) নন-ফিকশানের চাহিদাও অনেক বাড়বে। বিশেষ করে স্কিল ডেভেলপ বিষয়ক কনটেন্টের। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশীরা এক্ষেত্রে অনেক ভালো করতে পারবে। এদেশের লোকজনের বুদ্ধিমত্তা তুলনামূলকভাবে অন্যসব দেশ থেকে ভালো। ছোটবেলা থেকে একটু সিরিয়াস হতে হবে এসবে অংশ নেয়ার জন্য।
৪) কৃষিতে আমাদের ভবিষ্যত ভালো। কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন বিষয়ক শিক্ষার বিষয়ে একটু সিরিয়াস হলে অনেকেই ভবিষ্যত পৃথিবীর চাহিদা মেটানোর উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারবেন নিজেকে/নিজেদের।
৫) আমাদের এখানে পারিবারিক বন্ধন এমনিতেই অনেক ভালো। কিছু আধা-শিক্ষিত লোকজন বাদে সকলেরই ফ্যামিলি ভ্যালু মোটামুটি ভালো। এটায় আরো ফোকাস করা গেলে এই বন্ধন আরো উন্নত করা সম্ভব। এটা আমাদেরকে অনেক বিপর্যয় থেকেই রক্ষা করবে।
এই পাঁচটা বিষয় নিয়ে একটু ভাবেন, কাজ করেন। আর শেখার চেষ্টা করেন। মুখস্ত-বিদ্যা থেকে বের হয়ে আসেন। আমরা টিকে যাবো এভাবেই।
তেলের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বাড়ানোর ফলে বড় ধরনের যেসব বিপদ আসতে যাচ্ছে তার ভেতরে একটা হচ্ছে কৃষি উৎপাদন কমে যাওয়া। ফসল ফলিয়ে যদি লাভ করতে না পারে, যদি নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়ে আমাদের খাদ্য উৎপাদন করতে হয় তাদেরকে, সেটা তারা কেন করবে? এখন যদি কৃষকরা উৎপাদনে না যায়, সেটার ফল আপনি দেখতে পাবেন আরো ৬ মাস থেকে এক বছর পরে।
এভাবে চলতে থাকলে দেশে বড় ধরনের দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে যাতে কোটি কোটি মানুশ মারা যেতে পারে।
ভবিষ্যতে চাষের জমি যেমন গোল্ড মাইনের মত মূল্যবান হয়ে উঠবে তেমনি পরিষ্কার পানযোগ্য পানি হবে (বর্তমানের) তেলের খনির চাইতেও গুরুত্বপূর্ন। আর বাংলাদেশ এই দু'টোরই বেস্ট সোর্স। একসময় আমরা পানযোগ্য পরিষ্কার পানি রপ্তানি করে পেট্রোডলারের মতই আয় করতে পারবো।
বাড়ি-গাড়ি না কিনে কৃষি জমি কিনেন। ভবিষ্যতে গোল্ড মাইনের চাইতেও দামী হবে কৃষি জমি।
আমি ফ্লিম-মেকার হলে একটা টিভি সিরিজ বানাতাম যেটার প্লট হতো এরকম-
পোস্ট এপক্যালিপ্টিক এরা। পৃথিবীর কোন ইলেক্ট্রনিক্স আর কাজ করছে না। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে, নগর সভ্যতার পতন ঘটেছে। Revolution টিভি সিরিজটায় যেরকম দেখায় আরকি। কিন্তু, Revolution-এ যা দেখায় সেটা বাস্তব ভিত্তিক না। ভ্যালিড সায়েন্টিফিক ফ্যাক্ট আছে, এরকম ঘটার সম্ভবনা নিয়ে, সেটা দেখাতাম।
তো, যেহেতু যোগাযোগ নাই, নগর সভ্যতা নাই, মানুশ ফিরে গেছে কৃষি সভ্যতায়। কৃষি সভ্যতায় যাওয়াতে পৃথিবীর সবচাইতে সমৃদ্ধ এলাকা হয়ে উঠতে শুরু করেছে উর্বর পলল-ভূমির অঞ্চলগুলো। ফলে, বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছে বসবাসের জন্য সবচাইতে উপযোগী ভূমি।
এখন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে মাইগ্রেন্ট বাঙালিরা আছে, তারা বাংলাদেশে ফেরার স্বপ্ন দেখছে। অস্ট্রেলিয়ার, আমেরিকার অনুর্বর ভূমিতে অনেক কষ্ট করে কৃষি কাজ করে আর বাংলাদেশে স্মৃতিচারন করে। দেশে কিভাবে ব্যাক করা যায় সেই পরিকল্পনা করে। এদের ভেতরে একদল সাহসী লোক গাছ কেটে জাহাজ বানিয়ে রওনাও দিয়ে দেয়।
এরকম অনেককিছু নিয়ে অনেক ইন্টারেস্টিং সব ঘটনাবহুল একটা সিরিজ। মেকিং স্টাইলটা হলিউড টাইপ হবে। Revolution, LOST সিরিজগুলোর মত অ্যাকশন ড্রামা টাইপ।
যারা নাটক-সিনেমা-সিরিজ তৈরি করেন, তারা চাইলে এই প্লট-টা ব্যবহার করতে পারেন। আরো ডিটেইলস আইডিয়া ও ফ্যাক্ট লাগলে যোগাযোগ করতে পারেন। এরকম একটা সিরিজ দরকার আসলে।