#প্যারেন্টিং - ১৭

তাতিয়ানার বয়স এক বছর হওয়ার আগেই নানা ধরনের শ'খানেক রাইম ভিডিও ভিডিও নামিয়ে দিয়েছিলাম। রাইমগুলোর ভেতরে এবিসি, ওয়ানটুথ্রি শেখার ভিডিওগুলো ওর বেশী প্রিয়। এগুলো দেখে দেখে সে ৯ মাস বয়সেই এবিসি ওয়ান টু থ্রি শিখে ফেলেছিলো। আমার বাসার বুকসেলফগুলো এবং আমাদের পড়ার অভ্যাস ওর এই আগ্রহ তৈরি করেছে বলে আমার মনে হয়েছে। কারণ, সে খুব মনোযোগ দিয়ে এবিসি শিখে প্রথমেই সেলফের সব ইংরেজী বইয়ের অক্ষরগুলো পড়তে শুরু করে দিয়েছিলো। মূলত ঐ বইয়ের লেখাগুলোর সাথে রাইমের এবিসির মিল দেখতে পেয়েই ওর আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
বাংলা বইগুলো ওর কাছে দুর্বোধ্য ছিলো। একদিন হঠাৎ খেয়াল করলাম বাংলাও সে পড়তে শুরু করেছে। তখন বয়স এক থেকে দেড় এর মত। আমি আর ফারাহ অবাক! ক্যামনে কী? পরে আবিষ্কার করলাম- ৭/৮ বছর আগে আইফোনের জন্য বাংলা বর্ণমালা শেখার যে এপটা বানিয়েছিলাম সেটা সে আমার মোবাইল ঘেঁটে বের করে ওখান থেকে অ আ ক খ শিখছে। অ আ ক খ শিখে প্রথমেই সে আমার সেলফের নাগালের ভেতরে থাকা বাংলা বইগুলো নামিয়ে বইয়ের ভেতরের বাংলা অক্ষরগুলো পড়তে শুরু করেছিলো। এরপর অনেক খুঁজে ভালো কিছু বাংলা কনটেন্ট নামিয়ে দেই। দুই/আড়াই বছর বয়সে ও যখন বলতো, বাবা স্বরবর্ণ ব্যাঞ্জনবর্ণ দাও, আমার কাছে বেশ মজা লাগতো। ব্যাঞ্জনবর্ণ শব্দটা আমার নিজেরই উচ্চরণ করতে কষ্ট হয় আর সে কি সুন্দর করে বলে।

তাতিয়ানার বয়স এখন চার। এখনো স্কুলে দেইনি। পড়তে বসার জন্যও বলি না। কিন্তু সে নিজেই খাতা-কলম-বই নিয়ে পড়তে বসে যায়। পড়ালেখা ওর কাছে খুব ইন্টারেস্টিং একটা ব্যপার।

যাহোক, যা বলতে চাচ্ছি তা হলো, বাসায় ছোট একটা লাইব্রেরী বানান। বাচ্চাদের হাতের নাগালে রাখুন বইগুলো এবং বাচ্চাদের সামনে পড়ুন, ওদের পড়ে শোনান (বাচ্চাদের বইগুলো)। আপনার বাচ্চাদেরও পড়ালেখার আগ্রহ তৈরি হবে, নিজে থেকে। তবে জোর করবেন না। যেটায় জোর করা হয় সেটার ব্যপারে মানুষের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহন থাকে না।

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।