ভ্রমণের সময় এমনিতেই মাথায় নানা ধরনের চিন্তা-ভাবনা ঘুরতে থাকে যা ঢাকায় বসে থাকলে আসে না। বিশেষ করে গভীর রাতের ভ্রমণে ভাবনাগুলো আরো গভীরে চলে যায়। তো, ভাবছিলাম জীবন-মৃত্যু নিয়ে। মানুশ কেন বেঁচে থাকতে চায়? এই বিষয়টা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভেবে আমি দু'টো বিষয় পেয়েছি—
১) মানুশ আসলে নিজের জন্য বাঁচে না, সে বেঁচে থাকে অন্যের জন্য। পৃথিবীতে আর কেউ না থাকলে সে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতো না হয়তো।
২) অস্তিত্বহীনতার চিন্তা খুব ভয়াবহ ব্যাপার। বিশেষ করে যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তাদের জন্য মৃত্যুর মাধ্যমে নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে যাওয়ার যে ভাবনা, এটা থেকে সে পালাতে চায়। এজন্য নিজেকে অমর/স্বরণীয় করে রাখতে চায়। এটা নিজের অস্তিত্বহীনতার চিন্তা থেকে বাঁচার একটা প্রয়াস মাত্র।
অস্তিত্বহীনতার চিন্তা যে কতটা ভয়াবহ, এটা বুঝার জন্য আপনাকে শুধুমাত্র এই ব্যাপারটা ভাবতে হবে—
'আমাকে যদি সৃষ্টি করা না হতো' কিংবা 'আমি যদি জন্ম না নিতাম'
ভেবে দেখেন। দুই দিন সময় দিলাম ????
বিশ্বাসীদের ক্ষেত্রে মৃত্যু ভয়াবহ কিছু না। কারণ, মৃত্যুর মাধ্যমে তার অমরত্বের শুরু। তবে, এই লেভেলের ঈমানদার রেয়ার।
আমি নিজে কি মৃত্যুকে ভয় পাই? মোটেও না। বরং মৃত্যুর পরের জগত নিয়ে আমার ভেতরে খুব ছোটবেলা থেকেই অনেক আগ্রহ। অনেক ভেবে দেখলাম, আমি মারা গেলে আমার নিজের তেমন কোন ক্ষতি নেই (কিছু লোকের কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়া বা পাওয়ার নিশ্চয়তাটা না থাকা বাদে)। আমি মারা গেলে মূলত আমার নিজের জন্য ভালো। খারাপ হচ্ছে আমার ফ্যামিলি ও প্রিয়জনদের জন্য। আরেকটা খারাপ হচ্ছে আমার অসম্পূর্ন প্রজেক্টগুলোর জন্য, যেগুলো একসময় কোটি কোটি লোকের উপকার করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস আছে।
এছাড়া আর কী?
আর তেমন কিছু নেই আসলে। এই জগতে জীবনের আলটিমেট লক্ষ্য হচ্ছে মৃত্যু। ব্যক্তির জন্য মৃত্যু একটা ভালো ব্যাপার।