আগের পোস্টের কমেন্টে যে ডটগুলোর কথা বলেছি, তার ভেতরে কয়েকটা দেখাই-
১) ভারতে প্রায় বিশ কোটি মুসলিম বাস করে যারা নিজেদের ভারতীয় পরিচয় নিয়ে গর্বিত ছিলো। তাদের এই গর্ব হারিয়ে যাচ্ছে। এটা ভারতের জন্য ভালো বিষয় না।
২) একটা দেশের বিশ কোটি লোক যখন আক্রান্তবোধ করে, তখন সেটা ঐ দেশের জন্য কতবড় বিপদের কারণ হতে পারে তা একটু ভাবলেই বুঝতে পারবেন। ভারতের বিজেপি বুঝতেছে না কিন্তু অন্যরা ঠিকই বুঝতেছে। এজন্য দেখবেন তারা ইচ্ছা না থাকা স্বত্বেও এসব থামানোর চেষ্টা করছে।
৩) ভারতের মুসলিম পপুলেশন গ্রোথ রেট হিসাব করে দেখা গিয়েছে ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীর সবচাইতে বেশী মুসলিমের বাস হবে ভারত। এই বিপুল সংখ্যক জনগনরে দমন করা এত সহজ না।
৪) ভারত হিন্দু প্রধান দেশ হলেও ওখানকার শিক্ষিত ও পাওয়ারফুল জনগনের একটা বড় অংশই কিন্তু আসলে হিন্দু না। এরা মূলত নাস্তিক। ফলে, হিন্দু উগ্রবাদীরা তাদের পাশে পাবে না।
৫) ২০৭০ সাল নাগাদ মুসলিমরা পৃথিবীতে সংখ্যাগরিস্ট হতে যাচ্ছে যেটা ঠেকানোর কোন উপায় নেই।
৬) বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থা ও ইকোনমিতে সবচাইতে বড় শক্তি হচ্ছে জনগন। কারণ, জনগন মানেই ক্রেতা, বাজার। দেড়শ কোটির বাজার হাতে থাকার কারণেই কিন্তু ভারতের অনেক অন্যায় পশ্চিমারা দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। মুসলিমরা যখন সংখ্যাগরিষ্ট হবে, তখন কী হবে সেটা একটু ভাবলেই বুঝতে পারবেন।
৭) বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় দুই বিলিয়ন মুসলিম আছে। ভারতে মুসলিম নির্যাতন শুরু হওয়া মানে এই দুই বিলিয়ন মুসলিমদের ক্ষ্যাপিয়ে তোলা। এই ক্ষ্যাপানোর ফল কী হয় তা বুঝার জন্য কিছুদিন আগে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মুসলিমদের বয়কটের ফলে কী হয়েছে সেটার দিকে তাকাতে পারেন।
৮) মুসলিমদের সবচাইতে বড় দুর্বলতা হচ্ছে ইউনিটি না থাকা। ভারতে যা হচ্ছে, এগুলো মুসলিমদের ইউনিটি বাড়াচ্ছে। এর আফটারম্যাথ ক্যালকুলেশন মাথামোটা বিজেপির না থাকলেও বিশ্ব মোড়লদের আছে। ফলে, তারা ভারতে মুসলিম নির্যাতনের পক্ষে দাঁড়াবে না। এর সাথে যোগ হয়েছে বর্তমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভারসাম্য পরিবর্তনের হাওয়া। এই হাওয়া ভারতের প্রতিকূলে যাবে।
৯) চীনের সাথে আমেরিকার অন্যতম প্রধান কার্ড হচ্ছে উইঘুরের মুসলিম নির্যাতন। ভারতের মুসলিম নির্যাতন নিয়ে আমেরিকা বা পশ্চিমারা চুপ থাকলে চীনের সাথে তাদের সবচাইতে বড় প্লেইং কার্ড দুর্বল হতে থাকে। এজন্য দেখবেন কাশ্মীর নিয়ে আমেরিকার সাথে ভারতের সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে।
১০) ভারতের সাথে ইসরায়েলর সম্পর্ক বেশ ভালো ছিলো। ইসরায়েল ভারতে প্রচুর ইনভেস্ট করেছে। কিন্তু, কিছুদিন আগে ইসরায়েলের পাশে যেসব দেশ দাঁড়িয়েছিলো তার ভেতরে ভারত ছিলো অগ্রগামী, তারপরেও ইসরায়েল ভারতকে ধন্যবাদ দেয়নি তাদের অফিসিয়াল স্টেটমেন্টে। কেন দেয়নি সেটা একটু চিন্তা করলেই ধরতে পারবেন।
১১) খ্রিস্টানদের সাথে মুসলিমদের দুরত্ব কিন্তু খুব বেশী না। খ্রিস্টানদের নবী মুসলিমদেরও নবী। এখানে আরেকটা বিষয় হচ্ছে, খ্রিস্টানদের এনিমি ইহুদিরা আবার মুসলিমদেরও এনিমি। এলায়েন্স হওয়ার জন্য এইটুকুই যথেষ্ট। আবার মুসলিমরা যখন ব্যাপকহারে আক্রান্ত হতে থাকবে তখন এই ব্যবধান ঘুচে যাবে, ফলে মুসলিম আর খ্রিস্টানদের এলায়েন্স তৈরি হবে খুব সহজেই। ইহুদীরা আবার সেটা ঠেকানোর চেষ্টাও করবে। ফলে, মুসলিম নির্যাতন নিয়ে ইহুদীদের সরব হতে দেখলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। অন্তত সরাসরি ইহুদীরা ভারতের মুসলিম নির্যাতনরে সমর্থন দিতে যাবে না।
১২) চায়না মায়ানমারে মুসলিম নির্যাতনে সমর্থন দিয়ে ভালো বিপদে আছে। এই ভুল তারা আরেকবার না করারই কথা।
এরকম আরো অনেক ডট আছে। এগুলো যোগ করে দেখেন, অনেক কিছুই পরিষ্কার দেখতে পাবেন।

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।