আমার জন্মেরও আগে সেই ১৯৮১ সালে আমেরিকায় যেসব সেক্টরে কম্পিউটার ব্যবহার শুরু হয়েছে, বাংলাদেশ এখনো ওখানে পৌঁছাতে পারেনি। ১৯৮১ সালের ভেতরে আমেরিকায় অটোমেটেড সাবওয়ে সিস্টেম চলা শুরু করেছে কম্পিউটার ব্যবহার করে। দোকানগুলোতে POS মেশিন, এয়ার টিকেট রিজার্ভেশন, ক্রেডিট কার্ড বিলিং, মেডিকেল ডায়াগনসিস, একাডেমিক রিসার্চ থেকে শুরু করে আরো বহু কাজে কম্পিউটার ও সফটওয়্যার ব্যবহার শুরু হয়। ৪০ বছর আগেই আমেরিকা যতটুকু কম্পিউটারের ব্যবহার করতো আমরা কেন এখনো সেখানে পৌঁছাতে পারিনি সেটা গবেষকরা ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু একজন আইটি উদ্যোক্তা হিসেবে এই বাস্তবতাকে মাথায় রেখেই আমাদের আগাতে হবে।

আমাদের এখানে আইটি স্টার্টাপ খুব কঠিন ব্যাপার। আইটি এনাবলড যেসব স্টার্টাপকে আপনি এখন সাকসেসফুল দেখেন, এদের অধিকাংশের বয়সই দশ থেকে বিশ বছরের মত। দশ/বিশ বছর ধরে ধৈর্য ধরে এরা গাছের গোড়ায় পানি ঢেলে গিয়েছে যার ফল এখন পাচ্ছে। অল্প কয়েকটা স্টার্টাপই দ্রুত ফান্ড রেইজ করে উপরে যেতে পেরেছে, তাও কোভিড সিচ্যুয়েশনের কারণে।

তবে আশার কথা হচ্ছে এখন অনেকেই আইটির বেসড স্টার্টাপে আগ্রহী। কিন্তু আমাদের পিছিয়ে থাকার কারণেই হোক কিংবা অজ্ঞতার কারণেই হোক, আইটির বেসড স্টার্টাপের জন্য অধিকাংশই এখনো রেডি না। আমরা যারা এক যুগের বেশী সময় ধরে এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে আছি আমাদের সকলেরই কমবেশী এরকম আগ্রহী ব্যক্তিদের সাথে মিটিং হয়েছে। এরকম নানা ধরনের অভিজ্ঞতা অনলাইন ও অফলাইনে প্রায়ই শুনতে পাই।

যদিও আমরা (ত্রিভুজ টেক) লোকাল কাজ করি না কিন্তু পরিচিতদের সূত্র ধরে কেউ আসলে তো সময় দেই। এই সময় দেয়া থেকেও প্রচুর অভিজ্ঞতা হয়েছে। খুব সাম্প্রতিক (গত ছয় মাসের ভেতরে) তিনটা অভিজ্ঞতার একটার কথা বলি। এক লোক বাচ্চাদের জন্য প্লাটফর্ম বানাতে আগ্রহী। আমার পরিচিত একজনসহ বসলেন। উনি যা চাচ্ছেন সেটার সুবিধা-অসুবিধাসহ সব দিক দেখালাম। বিকল্প একটা সমাধানও দেখালাম যেটা ঐ ধরনের প্লাটফর্মের দশ ভাগের এক ভাগ খরচে সম্ভব। প্রোপজাল পাঠাতে বললেন, পাঠালাম। আর কোন খোঁজ নাই। এমনকি ম্যাসেজ দিলেও সীন দিয়ে রেখে দেন, মিনিমাম ভদ্রতা মেনটেইন করে একটা জবাবও দেন না। সম্ভবত বাজেট দেখে ভয় পেয়েছেন কিংবা সাথে আরেক যে ভদ্রলোক ছিলো উনি কিছু বলেছেন। তো, আমিও আশা করি নাই যে উনারা এই ধরনের কিছু করতে পারবেন বা করতে আসবেন। ওয়েবসাইট আর প্লাটফর্ম এর ভেতরে পার্থক্য করতে পারা বাঙালির সংখ্যা এখনো হাতেগোনা। যেখানে লোকজন দশ হাজার টাকায় ওয়েবসাইট তৈরি করে দুই হাজার টাকার আনলিমিটেড হোস্টিং করতে চায় সেখানে লাখ লাখ টাকা প্লাটফর্মের পেছনে ইনভেস্ট করতে আসা লোকের সংখ্যা এখনো কোটিতে দুই/একজন হওয়াই স্বাভাবিক। এটাই বাস্তবতা।

Ron Mahenur-এর স্ট্যাটাসটা দেখে মনে হলো আমাদের আইটি ইন্ড্রাস্ট্রির অবস্থা নিয়ে কিছু বলি। নাথিং পার্সোনাল! চিল!!

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।