এয়ার পিউরিফায়ার কিনলাম। পৃথিবীর সবচাইতে দূষিত শহরে বাস করার জন্য এই জিনিষ থাকা বাধ্যতামূলক মনে হয় আমার কাছে।

একটা এয়ার মনিটরিং এপ মোবাইলে সেটাপ করার পর ঢাকার বাতাসের অবস্থা দেখে মাস খানেক ধরে এয়ার পিউরিফায়ার নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করে যা বুঝলাম সংক্ষেপে তা শেয়ার করি। ভবিষ্যতে যারা কিনবেন, তাদের কাজে আসবে হয়তো!

এয়ার পিউরিফায়ারে মূলত তিন ধরনের ফিল্টার থাকে-

১) ডাস্ট ফিল্টারঃ যেটা রুমের ধূলিবালি আটকে ফেলে।
২) কার্বন ফিল্টারঃ ধূয়া, দুর্গন্ধ ও বিভিন্ন ধরনের বড় দূষন (মূলত এলার্জির কারণ হয় যেগুলো) ধরে ফেলে এটা।
৩) HEPA ফিল্টারঃ HEPA ( high-efficiency particulate absorbing) ফিল্টার মূলত বাতাস থেকে অতি ক্ষুদ্র পার্টিকেলগুলে ধরে। ঢাকার বাতাসে এসব পার্টিকেলের উপস্থিতি স্বাভাবিকের চাইতে অনেকগুন বেশী। খেয়াল রাখতে হবে, True HEPA যেন থাকে। HEPA11 True HEPA ফিল্টার না। কমপক্ষে HEPA12 বা HEPA13 হতে হবে।

কিছু ব্রান্ড স্মার্ট অ্যাপ (IoT) ইন্টিগ্রেশনসহ কম দামে এয়ার পিউরিফায়ার বিক্রি করে যেগুলো আসলে কাজের না। ওসব পিউরিফায়ারে দেখবেন এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং ইন্ডিকেটর আছে যা স্মার্ট ফোন থেকে নিয়ন্ত্রন করা যায়। কিন্তু এগুলো গিমিকি ফিচার। একটা ভালো এয়ার মনিটরিং সেন্সর ডিভাইসের দাম ২০০ থেকে ৩০০ ডলার। আর ওরা পুরো ডিভাইসের দামই রাখে ৩০০ ডলারের ভেতরে। কিভাবে সম্ভব? (IoT) ইন্টিগ্রেটেড পিউরিফায়ার নিতে হলে আপনাকে ৭০ থেকে ৯০ হাজার বাজেটের পিউরিফায়ার নিতে হবে। তাই, এই দিকটা খেয়াল রাখতে হবে। রুমের বাতাস আসলেই ক্লিন করতে পারছে কিনা; সেটা স্মার্ট অ্যাপ ইন্টিগ্রেশন (IoT) থেকে বেশী জরুরী।

কমদামী পিউরিফায়ারগুলোতে আবার ডাস্ট ফিল্টার থাকে না সামনে, ফলে ভেতরের HEPA-ফিল্টারটা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ২-৩ মাস পরপর আপনাকে ৩-৪ হাজার টাকা দিয়ে নতুন ফিল্টার লাগাতে হবে। তাই ডাস্ট ফিল্টার আছে কিনা সামনে, এটা দেখে কিনতে হবে। তাহলে HEPA-ফিল্টারটা সহজে নষ্ট হবে না। আমার এটার ফিল্টার পরিবর্তন করতে হবে ৩-৪ বছর পরে। কিছু পিউরিফায়ার ১০ বছরেরও গ্যারান্টি দিয়ে থাকে।

আরেকটা ব্যাপার খেয়াল রাখবেন। কিছু ব্রান্ড কার্বন ফিল্টার ও HEPA ফিল্টার একসাথে প্যাক করে দেয়। এই দু'টো ফিল্টার আলাদা থাকা ভালো। তাহলে HEPA ফিল্টারের আগে আপনি কার্বন ফিল্টারটা রাখতে পারবেন যেটা HEPA ফিল্টারের লাইফ টাইম ও কার্যকারীতা বাড়িয়ে দিবে। আবার পরে শুধুমাত্র HEPA ফিল্টারটা আলাদা করে ক্লিন করা কিংবা পরিবর্তন করা যাবে।

আফটার সেলস সার্ভিসও এখানে জরুরী। পরে যদি আপনি ফিল্টার খুঁজে না পান তাহলে পুরো মেশিনই বাতিল। তাই, ব্রান্ড নেম ও এভেইলেবিলিটি দেখে নেয়া উচিত।

Trivuz Alam

Trivuz Alam

কাজ করি তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে, বাদবাকী সব ভালো লাগা থেকে করা। নতুন কিছু শিখতে ভালো লাগে। গেমিং, বই পড়া, ফটোগ্রাফি, ভ্রমণ করা হয় ভালো লাগার জায়গা থেকে। আর ভালো লাগে চিন্তা করতে। সেসব চিন্তার কিছু কিছু প্রকাশ করবো এখানে।