ইউটিউবের আইডিয়া আসে জাওয়েদ করিম নামের এক বাংলাদেশীর মাথায়। তারপর তিনি আরো দুইজনকে সাথে নিয়ে ইউটিউব প্রতিষ্ঠা করেন। খান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সালমান খানও বাংলাদেশী। একাডেমিক ক্ষেত্রেও অনেক বড় বড় ফিগার পাবেন বাংলাদেশী। এদের সবার ভেতরে একটা কমন ব্যাপার হচ্ছে, এরা কেউই বাংলাদেশে বড় হয়নি, বাংলাদেশে পড়াশোনা করেনি।
জাতি হিসেবে বাংলাদেশীরা মেধাবী। এটা শুধুমাত্র আমার পর্যবেক্ষন না, অনেক বড় বড় মানুশের পর্যবেক্ষনও। কিন্তু এই মেধাবীরা এদেশে থাকলে কিছু করতে পারে না।
কেন?
আমি এর তিনটা কারণ খুঁজে পেয়েছি।
১) ব্যাড প্যারেন্টিং
২) ব্যাড এডুকেশন সিস্টেম
৩) ব্যাড এনভায়রমেন্ট / বাজে পরিবেশ
ব্যাড প্যারেন্টিং ও ব্যাড এডুকেশন সিস্টেম নিয়ে তো আগে অনেকবার বলেছি। আজকে এই বাজে পরিবেশটা নিয়ে কয়েকটা পয়েন্ট বলি-
- আপনি দেখবেন, আমাদের এখানে অধিকাংশ পাবলিক এন্টারটেইনমেন্টের পেছনে প্রচুর সময় দেয়। এন্টারটেইনমেন্ট গুরুত্বপূর্ন, কিন্তু এর লিমিট থাকা উচিত।
- এখানে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চারে নিরুৎসাহীত করা হয়। এদেশের বড় বড় ভার্সিটিগুলোর শিক্ষার্থীরা টিটকারির ভয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে বই পড়ার কথা বলতে ভয় পায়। ফেসবুক সেলিব্রিটিরাও দেখবেন অন্যরা কেন চায়ের কাপের সাথে বইয়ের ছবি আপলোড করে, সেটা নিয়ে ট্রল করে। সেসব ট্রলে হাজার হাজার লাইক শেয়ার থাকে।
- এদেশের ভার্সিটির ক্যাম্পাসগুলোতে পড়ালেখার পরিবেশ খারাপ। এর মাঝেও যারা একটু সিরিয়াসলি পড়তে চায়, বই-টই পড়ে, তাদেরকে সকলে মিলে টিটকারী দেয়।
- আমাদের এখানে দেখবেন রেজাল্ট নিয়ে ব্যাপক প্রতিযোগীতা। পৃথিবীর আর কোন দেশে এরকম দেখা যায় না।
এরকম আরো অনেক পয়েন্ট আছে। এসব কারণে যারা একটু সিরিয়াস, যারা শিখতে চায়, তারা বলতে গেলে একঘরে হয়ে থাকে। এদের অধিকাংশ পরবর্তীতে দেশের বাইরে গিয়ে বেশ ভালো করে অথবা দেশে একাকিত্বের কারণে মোটিভেশন হারিয়ে ফেলে।
এখন অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা বদলাচ্ছে। ইন্টারনেটের কল্যানে নতুন প্রজন্ম বুঝতে শুরু করেছে- তারা যে পরিবেশে বাস করে এটা বিষাক্ত পরিবেশ, দুনিয়া অনেক বড়। এর থেকে বের হয়ে আসার জন্য তারা নিজেরাই ছোট ছোট কমিউনিটি তৈরি করে নিচ্ছে। এই কমিউনিটিগুলোকে স্পেস দেয়া দরকার। এদেরকে নার্সিং এর জন্য কিছু প্লাটফর্ম তৈরি করা জরুরী।