প্রযুক্তি গ্রহণ করা তখনই ভালো যখন আপনি এর সাথে রিলেটেড জ্ঞানও গ্রহণ করবেন, নয়তো সেটা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এর তিনটা উদাহরণ দেই।
১) আমরা টেলিভিশন গ্রহণ করলাম কিন্তু টেলিভিশন যে বাচ্চাদের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে সেই জ্ঞান নিলাম না। আজ পর্যন্ত আমাদের দেশে টিভি চ্যানেলের কোন রেটিং নেই। পশ্চিমা দেশে বাচ্চাদের চ্যানেল, বড়দের চ্যানেল, এরকম নানা রেটিং দিয়ে সাজানো। ওখানে বাচ্চাদের জন্য বড়দের চ্যানেল দেখা নিষদ্ধ, আমাদের দেশে বড়-ছোট সবাই একই কনটেন্ট কনজিউম করছে। এর ফলে কতগুলো প্রজন্মের মনস্ত্বাত্তিক কী ক্ষতি হয়েছে, সেটাও আমরা খেয়াল করছি না (এখন পর্যন্ত)।
২) আমরা স্মার্টফোন গ্রহণ করলাম কিন্তু বাচ্চাদের জন্য এর ব্যবহার সীমিত করার জ্ঞান গ্রহণ করিনি। আবার সোশ্যাল মিডিয়া গ্রহণ করেছি কিন্তু বাচ্চাদের জন্য সেটা রেস্ট্রিকট্রেড করিনি বরং বাচ্চাদেরকে ইউটিউব চ্যানেল বানিয়ে দিচ্ছি। পনের থেকে বিশ বছর পর এই ভুলের খেসারত আমাদের দিতে হবে, ভয়াবহভাবে।
৩) আমরা এসি গ্রহণ করেছি কিন্তু রুমের এয়ার ভেন্টিলেশনের জ্ঞান গ্রহণ করিনি। এদেশে ভেন্টিলেশনের কোন বালাই নেই। বিশেষ করে যেসব স্কুলে ক্লাশরুমে এসি আছে সেখানে একটা রুমে ১৫/২০/৩০ জন মিলে কী পরিমান কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ করছে এবং রুমে যে বিপদ সীমার উপরে কার্বন-ডাই অক্সাইড চলে যাচ্ছে, সেই বিষয়ে কারো কোন খেয়াল নেই। এতে বাচ্চাদের ব্রেইনের কী পরিমান ক্ষতি হচ্ছে সেই জ্ঞানও আমাদের নেই।
গত বছর আমি একটা এয়ার পিউরিফায়ার কিনেছিলাম। সাথে আমেরিকা থেকে একটা AirVisual Pro আনিয়েছিলাম। বাইরে যখন বাতাস ভয়াবহ দূষিত তখন আমার রুমে এয়ার পিউরিফায়ার বাতাস বিশুদ্ধ করলেও ঘন্টাখানেকের ভেতরে কার্বন-ডাই-অক্সাইড লেভেল ১০০০+ করে দেয়। রুমে দুই/তিনজন মিলে মিটিং করলে ত্রিশ মিনিটেই এই ইনডেক্স ২০০০+ হয়ে যায়। তখন দশ/পনের মিনিটের জন্য জানালা খুলে দিয়ে অক্সিজেন লেভেল ঠিক করতে হয়। কিন্তু এই দশ মিনিটেই এয়ার ইনডেক্স ২০/৩০ থেকে ২০০+ হয়ে যায় যা ক্লিন করতে আবার ৩০-৪০ মিনিট লাগে।
ছবিতে আমার রুমের এয়ার ইডেক্স ৩৮ ও রুমের কার্বন-ডাই-অক্সাইড ৬৮৬ দেখাচ্ছে যা স্বাস্থ্যকর। এই স্বাস্থ্যকর অবস্থা বজায় রাখার জন্য আমি প্রতি ৩ ঘন্টা পর পর ৩০ মিনিটের জন্য জানালা/দরজা খুলে একটা ছোট ফ্যান দিয়ে বাতাস বিন্যাস করি।
এয়ার পিউরিফায়ার নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম গত বছর। তার মাস খানেক পরেই এই পোস্টটা দেয়ার কথা ভেবেছিলাম, যেহেতু এই বিষয়টা জানানো জরুরী। আপনি রুমে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করলে অন্তত ২/৩ ঘন্টা পর পর ১০-১৫ মিনিটের জন্য হলেও জানালা/দরজা খুলে রুমের অক্সিজেন ব্যালেন্স ঠিক করতে হবে। সবচাইতে ভালো হয় যদি প্রতিটা বাসায় এয়ার ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করা হয়। এটা জরুরী। বিশেষ করে যারা নতুন বাড়ি বানাবেন, তারা কাঠামোগতভাবেই এটা নিশ্চিত করবেন।
একজন এডাল্ট পার্সন গড়ে ১৫ লিটার (০.০১৫ কিউবিক মিটার) CO2 নিঃসরণ করে। এটা অবশ্য একটিভিটির উপরে নির্ভর করে। আমরা এভারেজ ভ্যালুই (০.০২) ধরে নিলাম এক্ষেত্রে।
একটা রুমের সাইজ এবং একসাথে কতজন কতক্ষন থাকে, এই ডাটা ব্যবহার করে এই হিসাব করতে হবে। ধরি একটা রুমে ২০০ লোক ৩ ঘন্টা ধরে আছে। তাহলে মোট CO2 নিঃসরণ হবে-
CO2 নিঃসরণ = CO2 প্রতিজন কতৃক প্রতি ঘন্টায় নিঃসরণ × জনসংখ্যা × ঘন্টা
= ০.০২ × ২০০ × ৩
= ১২ কিউবিক মিটার CO2
রুমের সাইজ ধরে নিলাম ১০০০ কিউবিক মিটার। সেক্ষেত্রে-
ডিলিউশন ফ্যাক্টর = নিঃসরিত CO2 / রুম ভলিউম
= ১২ কিউবিক মিটার / ১০০০ কিউবিক মিটার
= ০.০১২
এখন ডিলিউশন ফ্যাক্টররে যদি আমরা ppm-এ কনভার্ট করতে চাই তাহলে ১০ লাখ দিয়ে গুন করতে হবে (কারণ ppm মানে হচ্ছে পার্টস পার মিলিয়ন)
সেক্ষেত্রে, CO2 কনসেন্ট্রেশন ইন ppm = ডিলিউশন ফ্যাক্টর × ১০ লাখ
= ০.০১২ x ১০০০০০০
= ১২০০০ ppm
এবার আপনি রুম সাইজ ও জনসংখ্যা এবং অবস্থানকাল (ঘন্টা) মিলিয়ে হিসাব করে নিয়ে Carbon Dioxide (CO2) Hazard স্কেলের সাথে মিলিয়ে নিন। আপনার রুমের এয়ার ইনডেক্স (AQI) কত থাকা উচিত সহজে বুঝার জন্য নিচে দেয়া চার্ট ফলো করতে পারেন।
কিছু মানুষকে দেখবেন আপনার খুব ভালো লাগে আর কিছু মানুষকে বিরক্তিকর। কিছু মানুষ সহজেই আপনাকে সব বুঝিয়ে দিতে পারে আর কিছু মানুষ সারাদিন কথা বলেও বোঝাতে প...
মানুষ স্বভাবগত ভাবেই রহস্য প্রিয়। রহস্য প্রিয় মানুষেরা রহস্যের খোঁজে বের হয়ে যুগে যুগে পৃথিবীর জন্য অনেক কিছু করেছেন তাই রহস্যপ্রিয়তাকে মানুষের স্বভাব...
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের ভেতরে এরকম কাউকে খুঁজে পাওয়া দুস্কর যিনি কখনো ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারের পেছনে অনেক টাক...