উত্তরাতে প্রচুর পাখি। ভোরে ঘুম ভাঙার পর প্রায়ই আমি ফোনে একটা এম্বিয়েন্ট অডিও প্লে দিয়ে আরো কিছুক্ষন ঘুমাই। ঘুমাই বললে ভুল হবে, মেডিটেশন করি মূলত। এটা খুবই আনন্দদায়ক একটা অভিজ্ঞতা। মাঝে মাঝে আরো মজার ঘটনা ঘটে। দেখা গেল, চমৎকার একটা স্বপ্ন দেখছিলাম। ঘুম ভেঙ্গে আবার এই ছোটঘুম বা মেডিটেশনে গেলে ঐ স্বপ্নটাই কন্টিনিউ করা যায়। তখন সেটা আবার নিয়ন্ত্রন করা যায়, মানে লুসিড ড্রিম হয়। মেডিটেশনে কল্পনায় তৈরি করা মনের বাড়ি থেকে লুসিড ড্রিম আরো পরিষ্কার, ভিভিড। ফলে, ধ্যান আরো গভীর হয়।
মেডিটেশনে মনের বাড়িতে ঘুরতে ঘুরতে একসময় আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে— বাস্তব জীবন বলতে আমরা যা দেখি বা বুঝি, এর অধিকাংশটাই আসলে আমাদের মনের ভেতরে ঘটে। মানে বাস্তবে একটা আপেল নাই, এরকম না। কিন্তু আপেলটা দেখে আপনি যে আনন্দটুকু পান, সেটা মূলত একটা মানসিক ঘটনাই। মেডিটেশন গিয়ে যদি আপনি লুসিড ড্রিমের মত পরিষ্কার সব দেখতে ও ফিল করতে পারেন, তাহলে যেকোন জায়গায় শুয়ে পৃথিবীর যেকোন সুন্দর জায়গাতে গিয়ে বসে থাকার ফিলিংস আপনি পাবেন। সুন্দরবন, বান্দরবান এবং সেইন্টমার্টিন দ্বীপে ট্যুর দিয়ে আমি যা ফিল করেছি, মেডিটেশনে ঢুকে ওসব জায়গায় ঘুরে প্রায় কাছাকাছি ফিলই পাই। লুসিড ড্রিম হলে তো বিষয়টা প্রায় রিয়েল হয়ে যায়। এটা আপনার ইনার পিস পেতে সাহায্য করে (একারণেই VR এর ফিউচার নিয়ে আমি এত আশাবাদী)।
তো, এই আনন্দ ভ্রমণ চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করে। যেকোন কিছু নিয়ে কোন ধরনের ডিস্ট্রাক্শন ছাড়াই লম্বা সময় ধরে চিন্তা করা যায়। যেকোন একটা টপিক নিয়ে একটানা আপনি যত বেশী ভাবতে পারবেন, সেটা তত দ্রুত পরিষ্কার হতে থাকে এবং আইডিয়া বিল্ড হয় খুব দ্রুত।
আপনারাও ট্রাই করে দেখতে পারেন। আমাদের হ্যাপিনেসের মূল কারখানা যে আমাদের মন, এটা আবিষ্কার করতে পারলে দেখবেন আপনার জীবন বদলে যাচ্ছে।